সোনিয়া আফরিন।।
কুমিল্লার হোমনায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।
শনিবার (৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত উপজেলার ভাষানিয়া ইউনিয়নের কাশিপুর ও ওমরাবাদ গ্রামের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের কয়েক জনকে ঢাকাও কুমিল্লায় রেফার করা হয়েছে বাকিরা হোমনা ও মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এ ঘটনায় কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ করেনি বলে জানান হোমনা থানা পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৬ আগস্ট) বিকালে উপজেলার ওমরাবাদ গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে সিএনজি চালক সাব্বির হোসেন সিএনজির হর্ণ বাজানোকে কেন্দ্র করে কাশিপুর গ্রামের কয়েকজন ছেলের সাথে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সাব্বিরকে মারধর করে। এ খবর পেয়ে ওমরাবাদ গ্রামের লোকজন সাব্বিরের পক্ষ নিয়ে লাঠি শোঠা নিয়ে কাশিপুর গ্রামে ওই ছেলেদের খোঁজতে যায়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। গ্রামবাসিকে শান্ত রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এ ঘটনায় পরদিন দুইপক্ষের মধ্যে সালিশ বৈঠক বসার কথা ছিল। কিন্তু শনিবার (৭ আগস্ট) গণটিকা দেয়ার তারিখ থাকায় সালিশের তারিখ পরিবর্তন করতে হয়েছে।
শনিবার (৭ আগস্ট) লোকজন নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান কাশিপুর বাজারে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। ওই সময় ওমরাবাদ ও কাশিপুর উভয় গ্রামের লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। প্রায় আড়াই ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। এদের মধ্যে আশঙ্কাজন অন্তত অর্ধডজন আহতদের ঢাকা ও কুমিল্লায় প্রেরন করা হয়েছে বাকিদের হোমনা ও মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে হোমনা, তিতাস, মুরাদনগর তিন থানার পুলিশ এসেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা থেকে অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ভাষানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ওমরাবাদ গ্রামের মো. কামরুল ইসলাম বলেন, সকালে গনটিকাদান কর্মসূচী চলায় সালিশ বৈঠক পড়ে হবে জানাতে গেলে ভুল বুঝাবুঝিতে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বেধে যায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। দুই পক্ষের লোকজনকে ডেকে বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে।
অপরদিকে গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক কাশিপুর গ্রামের মো. সাদেক সরকার বলেন, গতকালের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কামরুল চেয়ারম্যান , বাবুল মেম্বার ও খাজা মিয়ার নেতৃত্বে লোক জন আমাদের গ্রামে আক্রমন করে বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। এতে বাধাদিতে গেলে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদেরকে মুরাদনগর ও কুমিল্লায় প্রেরন করা হয়েছে।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, এ ঘটনায় কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে কাশিপুর বাজারের কয়েকজন দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী সাদেক সরকারকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলামরচেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর পর থেকে কামরুল ইসলাস ও সাদেক সরকারের মধ্যকার রাজনৈতিক বিরোধ চলে আসছিল। সেই জেরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সিএনজির ঘটনা একটি ই্যসু মাত্র।
এদিকে হোমনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার স্পীনা রানী প্রমানিক জানান, হোমনা,তিতাস ও মুরাদনগর থানা পুলিশের সাথে কুমিল্লা থেকে ডিবি পুলিশ এসেছে। বতর্মানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page