
স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার লালমাইয়ে দুলাল হোসেন (৩৫) হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পুরো এলাকাকে স্তম্ভিত করেছে। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) জানিয়েছে, নিহত দুলালের হত্যা মূলত তার দ্বিতীয় স্ত্রী ফাতেমা আক্তার সিনথিয়ার প্রবাসী স্বামী আবুল হাসেমের সঙ্গে ইমো চ্যাটের মাধ্যমে পরিচয়ের সঙ্গে জড়িত প্রেমের সম্পর্কের কারণে ঘটেছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জ র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট নয়জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযানে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। হত্যায় ব্যবহৃত একটি নোহা গাড়িও জব্দ করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ফাতেমা ও দুলাল ছয় মাস আগে বিয়ে করেন। তাদের সংসার শুরু হলেও দাম্পত্য জীবনে সমস্যা দেখা দেয়। দুলাল স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন।
এই সময় ফাতেমা ইমো চ্যাটের মাধ্যমে দুবাই প্রবাসী আবুল হাসেমের সঙ্গে পরিচিত হন। পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে ফাতেমা দুলালকে ডিভোর্স দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। দেশে এসে আবুল হাসেম ফাতেমাকে বিয়ে করেন।
তবে দুলাল ডিভোর্স মেনে নেননি। হাসেম অনুপস্থিত থাকলে দুলাল প্রায়ই জোরপূর্বক ফাতেমার সঙ্গে বাসায় থাকতে বাধ্য করতেন। বিষয়টি জানতে পেরে ফাতেমা, তার বর্তমান স্বামী হাসেম ও পরিবারের সদস্যরা দুলালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
ঘটনার দিন ফাতেমা জুসে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে দুলালকে অচেতন করে। এরপর তাকে শ্বাসরোধ ও শরীরে আঘাত করে হত্যা করা হয়। মরদেহ গুমের জন্য রুবেলের নোহা গাড়িতে তুলে লালমাই রেললাইনের পাশে ফেলে রাখা হয়।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে—দেবিদ্বার উপজেলার ফারুক, মফিজুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম, নুর মানিকচরের মরিয়ম ও ফাতেমা আক্তার সিনথিয়া, লালমাইয়ের রুবেল আহাম্মেদ এবং লাকসামের আবুল হাসেম। এর আগে রেলওয়ে পুলিশ আদর্শ সদর উপজেলার জহির ও খোরশেদ আলমকে গ্রেপ্তার করে।
লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে হত্যার সঙ্গে জড়িত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যায় ব্যবহৃত নোহা গাড়িও জব্দ করা হয়েছে।”
লাকসাম রেলওয়ে থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, “রেলওয়ে পুলিশ ও র্যাবের যৌথ অভিযানে সাতজনকে আটক করা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের থানায় হস্তান্তর করা হবে।”