নিউজ ডেস্ক।।
প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেনের শপথ অনুষ্ঠান হঠাৎ করে স্থগিত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ওই শপথ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার সাড়ে পাঁচ মাস পরও শপথ নিতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পরাজিত প্রার্থী মামুনুর রশিদ যে কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন, সেখানে তিনি পেয়েছেন ১ হাজার ১০৯ ভোট। আমি পেয়েছি ৪৮৪ ভোট। কী কারণে তিনি এই কেন্দ্রে পুনরায় ভোট চেয়েছেন, তা আমি জানি না। নির্বাচন কমিশনের গেজেট, মন্ত্রণালয়ের চিঠি, জেলা প্রশাসকের চিঠির পরও হঠাৎ প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে শপথ অনুষ্ঠান স্থগিত করা দুঃখজনক। প্রশাসনিক কারণটা কী, আমি জানতে চাই। আর কত হয়রানি করবে? এই ইউনিয়নে ২০০৬ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত টানা চেয়ারম্যান ছিলাম আমি। প্রায় ছয় মাস আগে পুনরায় জিতেও শপথ নিতে পারছি না।’
গত ৩০ জানুয়ারি ইউপি সদস্যদের শপথ হয়। এতে ইলিয়টগঞ্জ রাজেন্দ্র বিশ্বনাথ উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোটে জয়ী ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য সজল মিয়া ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মরিয়ম বেগম শপথ নিয়ে দায়িত্বপালন শুরু করেছেন।
আনোয়ার হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, ‘তাদের কোনো বাধা নেই। আমাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পরিষদ গঠন হয়ে কাজ চলছে। ওরা প্রথম সভাও করেছে। আমার তো সময় চলে যাচ্ছে।’
গত ২৯ ডিসেম্বর ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হয়। এতে চেয়ারম্যান পদে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন ৪ হাজার ১৮৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. মামুনুর রশিদ। তিনি পেয়েছেন চার হাজার চার ভোট। নির্বাচনে আনোয়ার হোসেন ১৮৩ ভোটে জয়ী হন। এরপর ১৮ জানুয়ারি আনোয়ার হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশিত হয়।
২৬ জানুয়ারি ইলিয়টগঞ্জ রাজেন্দ্র বিশ্বনাথ উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ এনে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করে উচ্চ আদালতে রিট করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মামুনুর রশিদ। পরে আদালত গেজেট স্থগিত করেন। পরবর্তী সময়ে ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে রায় পান আনোয়ার হোসেন। এরপর গত ৩ মে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান গেজেটের কার্যকারিতা পুনরুজ্জীবিত করেন।
৬ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান শপথগ্রহণের জন্য কুমিল্লা জেলা প্রশাসককে চিঠি দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকেল চারটায় তাঁকে শপথ নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। আজ বেলা ১১টায় ওই শপথ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে শপথ অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়।
দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিনুল হাসান বলেন, কী কারণে শপথ অনুষ্ঠান স্থগিত হলো, এটা জেলা প্রশাসকের দপ্তর বলতে পারবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, ‘নানা কর্মসূচি থাকায় আমরা আজকের শপথ অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছি। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই। প্রশাসনিক কারণে সেটি স্থগিত করা হয়েছে। আজ শপথ হয়নি, পরে হবে।’
সূত্র- প্রথম আলো।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page