০৭:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বহির্বিশ্বে দ্বীনের খেদমত প্রচারের উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়ায় গেলেন রাজাপুরা দরবারের পীর সাহেব কুমিল্লায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বিজয় ২৪ হলের কক্ষে বহিরাগত নারী-পুরুষ; শিক্ষার্থীরা বিব্রত কুমিল্লায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া হত্যাকাণ্ডে মৌন মিছিল কুমিল্লায় রেললাইনের পাশে যুবকের মরদেহ; হত্যা নাকি দূর্ঘটনা ! “নিউজটা ডিলেট করা যায় কি?”-ওসি কোতয়ালি কুমিল্লার মা–মেয়ে হত্যাকাণ্ড; প্রশ্নের ভিতরে কিছু প্রশ্ন! কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে হালচাষের ট্রাক্টর উল্টে কিশোর নিহত

কুমিল্লায় ছেলের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে বাবার মৃত্যু

  • তারিখ : ০৫:১১:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
  • 24

নেকবর হোসেন।।
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ছেলেকে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার অবস্থায় দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এক বৃদ্ধ বাবা। রবিবার (১৩ জুলাই) রাতে উপজেলার গৌরীপুর এলাকায় ঘটে মর্মান্তিক এই ঘটনা।
মারা যাওয়া বৃদ্ধের নাম সুরুজ মিয়া (৭০)। তিনি দাউদকান্দি উপজেলার মারুকা ইউনিয়নের চক্রতলা গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত সুরুজ মিয়ার ছেলে পাবেল (২৫) রবিবার দুপুরে গৌরীপুর বাজারের ঈদগাহ মাঠে কবুতর কিনতে যান। সেখানে প্রথমে দুজন ব্যক্তি তাকে ঘিরে ধরে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করে। পরে আরও ৫–৬ জন এসে তাকে জোরপূর্বক একটি বাড়িতে নিয়ে যায় এবং চোখ বেঁধে আটকে রাখে।

সেখান থেকে পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না দিলে পাবেলকে মারধর করা হয় বর্বরভাবে। অবশেষে পরিবার বিকাশের মাধ্যমে অপহরণকারীদের দাবি করা টাকা পরিশোধ করে এবং রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাবেলকে মুক্তি দেওয়া হয়।

ছেলেকে নির্যাতনের চিহ্নসহ বাড়িতে ফিরে আসতে দেখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বাবা সুরুজ মিয়া। গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখে তিনি তাৎক্ষণিক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ১০টায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পাবেলের ফুফাতো ভাই কাইয়ুম হাসান বলেন, “পাবেল কবুতর কিনতে গিয়েছিল। সেখানেই কিছু যুবক এসে মারধর করে, পরে চোখ বেঁধে বাসায় নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালায়। মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার পর ছাড়া পায়। বাড়ি ফিরলে মামা ছেলের অবস্থা দেখে সঙ্গে সঙ্গেই স্ট্রোক করেন। পরে মারা যান।”

দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী জানান, “বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, বাজার এলাকায় সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়ে গেছে। প্রশাসনের নিকট দাবিও উঠেছে—অপহরণ ও নির্যাতনকারী চক্রকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার।

error: Content is protected !!

কুমিল্লায় ছেলের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে বাবার মৃত্যু

তারিখ : ০৫:১১:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

নেকবর হোসেন।।
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ছেলেকে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার অবস্থায় দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এক বৃদ্ধ বাবা। রবিবার (১৩ জুলাই) রাতে উপজেলার গৌরীপুর এলাকায় ঘটে মর্মান্তিক এই ঘটনা।
মারা যাওয়া বৃদ্ধের নাম সুরুজ মিয়া (৭০)। তিনি দাউদকান্দি উপজেলার মারুকা ইউনিয়নের চক্রতলা গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত সুরুজ মিয়ার ছেলে পাবেল (২৫) রবিবার দুপুরে গৌরীপুর বাজারের ঈদগাহ মাঠে কবুতর কিনতে যান। সেখানে প্রথমে দুজন ব্যক্তি তাকে ঘিরে ধরে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করে। পরে আরও ৫–৬ জন এসে তাকে জোরপূর্বক একটি বাড়িতে নিয়ে যায় এবং চোখ বেঁধে আটকে রাখে।

সেখান থেকে পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না দিলে পাবেলকে মারধর করা হয় বর্বরভাবে। অবশেষে পরিবার বিকাশের মাধ্যমে অপহরণকারীদের দাবি করা টাকা পরিশোধ করে এবং রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাবেলকে মুক্তি দেওয়া হয়।

ছেলেকে নির্যাতনের চিহ্নসহ বাড়িতে ফিরে আসতে দেখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বাবা সুরুজ মিয়া। গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখে তিনি তাৎক্ষণিক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ১০টায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পাবেলের ফুফাতো ভাই কাইয়ুম হাসান বলেন, “পাবেল কবুতর কিনতে গিয়েছিল। সেখানেই কিছু যুবক এসে মারধর করে, পরে চোখ বেঁধে বাসায় নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালায়। মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার পর ছাড়া পায়। বাড়ি ফিরলে মামা ছেলের অবস্থা দেখে সঙ্গে সঙ্গেই স্ট্রোক করেন। পরে মারা যান।”

দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী জানান, “বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, বাজার এলাকায় সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়ে গেছে। প্রশাসনের নিকট দাবিও উঠেছে—অপহরণ ও নির্যাতনকারী চক্রকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার।