০৭:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বিজয় ২৪ হলের কক্ষে বহিরাগত নারী-পুরুষ; শিক্ষার্থীরা বিব্রত কুমিল্লায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া হত্যাকাণ্ডে মৌন মিছিল কুমিল্লায় রেললাইনের পাশে যুবকের মরদেহ; হত্যা নাকি দূর্ঘটনা ! “নিউজটা ডিলেট করা যায় কি?”-ওসি কোতয়ালি কুমিল্লার মা–মেয়ে হত্যাকাণ্ড; প্রশ্নের ভিতরে কিছু প্রশ্ন! কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে হালচাষের ট্রাক্টর উল্টে কিশোর নিহত কুমিল্লায় ধর্ষণের বাধা দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ও মাকে খুন; মূলহোতা মোবারক গ্রেফতার পাশাপাশি দাফন করা হলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেয়ে ও তার মাকে

কুমিল্লায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষ চালকের গাফিলতিতে; তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন

  • তারিখ : ০৯:৪১:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মে ২০২৩
  • 6

নিউজ ডেস্ক।।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের হাসানপুর স্টেশনে ট্রেন দুর্ঘটনায় ট্রেনচালক মো. জসিম উদ্দিন, সহকারী চালক মো. মহসিনের গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এই ঘটনায় তাঁরা ছাড়াও চট্টগ্রাম ডিভিশনের সোনার বাংলা আন্তনগর এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক ও হাসানপুর স্টেশনের মেইনটেইনার (সিগন্যাল) ওয়াহিদকে দায়ী করা হয়েছে।

গত ১৬ এপ্রিল নাঙ্গলকোটের হাসানপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালবাহী ট্রেনকে সোনার বাংলা ট্রেন ধাক্কা দিলে অন্তত ৫০ জন আহত হন। এই ঘটনায় ওই দিনই চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে থাকা চার সদস্য হলেন বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) মো. জাহিদ হাসান, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা তারেক মো. ইমরান, বিভাগীয় সংকেত প্রকৌশলী জাহেদ আরেফিন পাটোয়ারি তন্ময় ও বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ এম এ হাসান মুকুল।

বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা তারেক মো. ইমরান বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত। কয়েক দিনের মধ্যে রেলওয়ে প্রশাসনকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার দিন সাময়িকভাবে বরখাস্ত চারজনকে দায়ী করা হয়েছে। তাঁদের গাফিলতিতে দুই ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।’

তদন্ত কমিটির সূত্রে জানা গেছে, সোনার বাংলা ট্রেনের চালকের ভুলের কারণে নাঙ্গলকোটে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সোনার বাংলা ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম থেকে মালবাহী ট্রেনটি নাঙ্গলকোটের হাসানপুর রেলস্টেশনে পৌঁছালে স্টেশন মাস্টার লুপ লাইনে (চার নম্বর লাইন) ট্রেনটিকে দাঁড় করান। ওই সময় অনেকক্ষণ স্টেশন এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। সিগন্যাল সিস্টেমের ব্যাকআপ ব্যাটারিরও চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ায় পুরো সিগন্যাল সিস্টেম অকার্যকর হয়ে পড়ে।

চট্টগ্রাম থেকে সোনার বাংলা ট্রেনটিও ওই সময় হাসানপুর রেলস্টেশনে ঢুকছিল। সোনার বাংলা ট্রেনের চালক স্টেশনে ঢোকার যেহেতু কোনো সংকেত পাননি বা স্টেশনের সিগন্যাল সিস্টেম বন্ধ দেখেছেন, তখন তিনি নিজ উদ্যোগে চলন্ত ট্রেনটি থামাতে পারতেন। কিন্তু ট্রেনচালক পুরো স্টেশন অন্ধকার দেখেও ট্রেন চালিয়ে যাওয়ার কারণে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষে সোনার বাংলা ট্রেনের পরিচালক, চালক ও সহকারী চালক দায়ী। পাশাপাশি তদন্ত কমিটির গাফিলতি দেখেছেন হাসানপুর স্টেশনের মেইনটেইনার (সিগন্যাল) ওয়াহিদকেও। কারণ যখনই সিগন্যাল কাজ করছিল না, তিনি সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রোলে বিষয়টি বলতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি।

ঘটনার দিন যান্ত্রিক প্রকৌশলী বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, চালু স্টেশন এলাকায় সাধারণত ট্রেনের স্পিড কমাতে হয়। কিন্তু সোনার বাংলা ট্রেনের চালক স্টেশন অতিক্রম করার সময় ৭০-৭১ মাইল স্পিডে ট্রেনটি নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি একটু ধীরে ট্রেন চালালে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটা আরও কম হতো।

শুধু কুমিল্লার ঘটনা নয়, এর আগের তিনটি বড় ট্রেন দুর্ঘটনায় রেলের নিজস্ব তদন্তেই ট্রেনচালক, সহকারী ট্রেনচালক, গার্ড ও গেটম্যানদের গাফিলতির বিষয়টি উঠে আসে। দুর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন সময় তদন্ত কমিটি নানা সুপারিশ করলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তদন্ত কমিটি যাঁদের দোষী সাব্যস্ত করবে তাঁদের ছাড় নয়। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

error: Content is protected !!

কুমিল্লায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষ চালকের গাফিলতিতে; তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন

তারিখ : ০৯:৪১:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মে ২০২৩

নিউজ ডেস্ক।।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের হাসানপুর স্টেশনে ট্রেন দুর্ঘটনায় ট্রেনচালক মো. জসিম উদ্দিন, সহকারী চালক মো. মহসিনের গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এই ঘটনায় তাঁরা ছাড়াও চট্টগ্রাম ডিভিশনের সোনার বাংলা আন্তনগর এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক ও হাসানপুর স্টেশনের মেইনটেইনার (সিগন্যাল) ওয়াহিদকে দায়ী করা হয়েছে।

গত ১৬ এপ্রিল নাঙ্গলকোটের হাসানপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালবাহী ট্রেনকে সোনার বাংলা ট্রেন ধাক্কা দিলে অন্তত ৫০ জন আহত হন। এই ঘটনায় ওই দিনই চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে থাকা চার সদস্য হলেন বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) মো. জাহিদ হাসান, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা তারেক মো. ইমরান, বিভাগীয় সংকেত প্রকৌশলী জাহেদ আরেফিন পাটোয়ারি তন্ময় ও বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ এম এ হাসান মুকুল।

বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা তারেক মো. ইমরান বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত। কয়েক দিনের মধ্যে রেলওয়ে প্রশাসনকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার দিন সাময়িকভাবে বরখাস্ত চারজনকে দায়ী করা হয়েছে। তাঁদের গাফিলতিতে দুই ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।’

তদন্ত কমিটির সূত্রে জানা গেছে, সোনার বাংলা ট্রেনের চালকের ভুলের কারণে নাঙ্গলকোটে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সোনার বাংলা ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম থেকে মালবাহী ট্রেনটি নাঙ্গলকোটের হাসানপুর রেলস্টেশনে পৌঁছালে স্টেশন মাস্টার লুপ লাইনে (চার নম্বর লাইন) ট্রেনটিকে দাঁড় করান। ওই সময় অনেকক্ষণ স্টেশন এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। সিগন্যাল সিস্টেমের ব্যাকআপ ব্যাটারিরও চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ায় পুরো সিগন্যাল সিস্টেম অকার্যকর হয়ে পড়ে।

চট্টগ্রাম থেকে সোনার বাংলা ট্রেনটিও ওই সময় হাসানপুর রেলস্টেশনে ঢুকছিল। সোনার বাংলা ট্রেনের চালক স্টেশনে ঢোকার যেহেতু কোনো সংকেত পাননি বা স্টেশনের সিগন্যাল সিস্টেম বন্ধ দেখেছেন, তখন তিনি নিজ উদ্যোগে চলন্ত ট্রেনটি থামাতে পারতেন। কিন্তু ট্রেনচালক পুরো স্টেশন অন্ধকার দেখেও ট্রেন চালিয়ে যাওয়ার কারণে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষে সোনার বাংলা ট্রেনের পরিচালক, চালক ও সহকারী চালক দায়ী। পাশাপাশি তদন্ত কমিটির গাফিলতি দেখেছেন হাসানপুর স্টেশনের মেইনটেইনার (সিগন্যাল) ওয়াহিদকেও। কারণ যখনই সিগন্যাল কাজ করছিল না, তিনি সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রোলে বিষয়টি বলতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি।

ঘটনার দিন যান্ত্রিক প্রকৌশলী বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, চালু স্টেশন এলাকায় সাধারণত ট্রেনের স্পিড কমাতে হয়। কিন্তু সোনার বাংলা ট্রেনের চালক স্টেশন অতিক্রম করার সময় ৭০-৭১ মাইল স্পিডে ট্রেনটি নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি একটু ধীরে ট্রেন চালালে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটা আরও কম হতো।

শুধু কুমিল্লার ঘটনা নয়, এর আগের তিনটি বড় ট্রেন দুর্ঘটনায় রেলের নিজস্ব তদন্তেই ট্রেনচালক, সহকারী ট্রেনচালক, গার্ড ও গেটম্যানদের গাফিলতির বিষয়টি উঠে আসে। দুর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন সময় তদন্ত কমিটি নানা সুপারিশ করলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তদন্ত কমিটি যাঁদের দোষী সাব্যস্ত করবে তাঁদের ছাড় নয়। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।