১০:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লায় টানা ৪০ দিন নামাজ পড়ায় শিশুদের হাতে বাইসাইকেল ও কোরআন দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে বিএনপি- এম আউয়াল খান মুরাদনগরে সহস্রাধিক রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান আজ থেকে কুবিতে পরীক্ষামূলকভাবে চলবে দুইতলা বাস কুমিল্লায় ধর্মীয় উত্তেজনার পর ১০ মাজারে পুলিশ মোতায়েন, সেনা টহলও চলছে কুমিল্লায় বিজিবির অভিযানে সীমান্ত থেকে ২৬ লাখ টাকার বাজি আটক চৌদ্দগ্রামে জামমুড়া-জামপুর যুব ও ক্রীড়া সংঘের মিনিবার ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত আজ আড়াইবাড়ী দরবার শরীফ কুমিল্লার বার্ষিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিল কুমিল্লায় চুরির অভিযোগে যুবককে কুকুর লেলিয়ে অমানবিক নির্যাতন, ৩ জন আটক কুমিল্লায় স্বামীর নিষেধে বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে না দেওয়ায় স্ত্রীর গলায় ফাঁস

কুমিল্লায় পুলিশ সদস্যসহ ৫ জনকে কুপিয়ে জখম

  • তারিখ : ০৬:১৪:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫
  • 35

স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার লাকসামে ছুটিতে আসা এক পুলিশ সদস্যকে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে‌ একদল দুর্বৃত্ত। এ ঘটনায় নারীসহ আরো ৪ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাতে উপজেলার উত্তরদা ইউনিয়নের মনপাল গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।

আহতদের অভিযোগ, লাকসাম উপজেলার উওরদা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এমরান হোসেনের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন যুবক ও তরুণ এই হামলা চালিয়েছেন।

পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগীরা জানান, বেশ কিছুদিন আগে ওই গ্রামের স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা এমরান হোসেন একই গ্রামের বেলাল মেম্বারের বাড়ির পাশে একটি ব্যানার টানান। দুদিন আগে শিশুরা খেলার ছলে ঢিল ছুঁড়লে টানানো ব্যানারটি ছিঁড়ে যায়। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এমরান ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে অকথ্য ভাষায় গাল-মন্দ করেন। পরে মধ্যরাতের দিকে এমরানসহ ২০/২৫ জন পুলিশ সদস্য সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে হই-হুল্লোড় শুরু করেন।

এ সময় পুলিশ সদস্য সাদ্দাম মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশলাইটের আলো জ্বালিয়ে ঘরে ফিরছিলেন। যুবক ও তরুণদের হই-হুল্লোড় দেখে তিনি মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশলাইটের আলো তাদের দিকে ফিরিয়ে জানতে চান, কি হয়েছে? এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এমরান উত্তেজিত হয়ে আলো বন্ধ করতে বলেন এবং অকথ্য ভাষায় গাল-মন্দ করেন। এ সময় ওই পুলিশ সদস্য তাদের এতো রাতে বাড়ির সামনে হই-হুল্লোড় না করতে বারণ করে ঘরে চলে যান।

এর কিছুক্ষণ পর এমরান দলবলসহ দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সাদ্দামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেন।

পুলিশ সদস্য সাদ্দামসহ ঘরে থাকা তার মা, ভাইসহ অন্যান্যদের বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন। একপর্যায়ে প্রাণ বাঁচাতে সাদ্দাম ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ঝাঁপ দেন। সেখানেও দুর্বৃত্তরা তাকে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেন। এ সময় বাড়ির অন্যান্যরা এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করে আহত করা হয়।

আহত পুলিশ সদস্য সাদ্দাম হোসেনসহ আহত অন্যান্যদের লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এরই মধ্যে ওই পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সদস্য সাদ্দাম ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়া থানায় কর্মরত। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ছুটিতে বাড়ি এসেছেন।

লাকসাম থানার এসআই আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক একদল পুলিশ নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে যান। গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী ওই এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এই ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।

আজ শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১২টায় লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা জানান, ঘটনাটি শোনার পর তিনি আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন। এ মুহূর্তে তিনি ঘটনাস্থলে রয়েছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এমরান হোসেনকে এলাকায় না পাওয়ায় এবং তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

error: Content is protected !!

কুমিল্লায় পুলিশ সদস্যসহ ৫ জনকে কুপিয়ে জখম

তারিখ : ০৬:১৪:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার লাকসামে ছুটিতে আসা এক পুলিশ সদস্যকে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে‌ একদল দুর্বৃত্ত। এ ঘটনায় নারীসহ আরো ৪ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাতে উপজেলার উত্তরদা ইউনিয়নের মনপাল গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।

আহতদের অভিযোগ, লাকসাম উপজেলার উওরদা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এমরান হোসেনের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন যুবক ও তরুণ এই হামলা চালিয়েছেন।

পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগীরা জানান, বেশ কিছুদিন আগে ওই গ্রামের স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা এমরান হোসেন একই গ্রামের বেলাল মেম্বারের বাড়ির পাশে একটি ব্যানার টানান। দুদিন আগে শিশুরা খেলার ছলে ঢিল ছুঁড়লে টানানো ব্যানারটি ছিঁড়ে যায়। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এমরান ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে অকথ্য ভাষায় গাল-মন্দ করেন। পরে মধ্যরাতের দিকে এমরানসহ ২০/২৫ জন পুলিশ সদস্য সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে হই-হুল্লোড় শুরু করেন।

এ সময় পুলিশ সদস্য সাদ্দাম মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশলাইটের আলো জ্বালিয়ে ঘরে ফিরছিলেন। যুবক ও তরুণদের হই-হুল্লোড় দেখে তিনি মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশলাইটের আলো তাদের দিকে ফিরিয়ে জানতে চান, কি হয়েছে? এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এমরান উত্তেজিত হয়ে আলো বন্ধ করতে বলেন এবং অকথ্য ভাষায় গাল-মন্দ করেন। এ সময় ওই পুলিশ সদস্য তাদের এতো রাতে বাড়ির সামনে হই-হুল্লোড় না করতে বারণ করে ঘরে চলে যান।

এর কিছুক্ষণ পর এমরান দলবলসহ দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সাদ্দামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেন।

পুলিশ সদস্য সাদ্দামসহ ঘরে থাকা তার মা, ভাইসহ অন্যান্যদের বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন। একপর্যায়ে প্রাণ বাঁচাতে সাদ্দাম ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ঝাঁপ দেন। সেখানেও দুর্বৃত্তরা তাকে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেন। এ সময় বাড়ির অন্যান্যরা এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করে আহত করা হয়।

আহত পুলিশ সদস্য সাদ্দাম হোসেনসহ আহত অন্যান্যদের লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এরই মধ্যে ওই পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সদস্য সাদ্দাম ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়া থানায় কর্মরত। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ছুটিতে বাড়ি এসেছেন।

লাকসাম থানার এসআই আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক একদল পুলিশ নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে যান। গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী ওই এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এই ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।

আজ শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১২টায় লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা জানান, ঘটনাটি শোনার পর তিনি আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন। এ মুহূর্তে তিনি ঘটনাস্থলে রয়েছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এমরান হোসেনকে এলাকায় না পাওয়ায় এবং তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।