স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার চান্দিনায় প্রেমিক যুগলকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় সোহেল মিয়া (৩২) নামে এক দারোয়ানকে চারতলার ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল) এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এর আগে গত শনিবার (১৬ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে চান্দিনা উপজেলা সদরের পল্লী বিদ্যুৎ রোডের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সোহেল দেবীদ্বার উপজেলার সুলতানপুর (গজারিয়া) গ্রামের ইমতিয়াজ মিয়ার ছেলে। তিনি চান্দিনা পল্লী বিদ্যুৎ রোডের ইসলাম ট্রেডার্স নামের প্রতিষ্ঠানে দারোয়ান হিসেবে কাজ করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই বাসার নিচতলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকেন মাকসুদা আক্তার খুকি, যিনি একটি প্রাইভেট হাসপাতালে সেবিকা। তার বোন রত্না বেগম ও ভাগনে আহাদ মিয়া (১৭) কোরপাই সাদাত জুট মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। কাজের সুবাদে আহাদের সঙ্গে একই মিলের নারী শ্রমিক ফেরদৌসী আক্তার (২০)-এর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রেমিকা ফেরদৌসীকে খালার বাসায় নিয়ে আসে আহাদ। খালা তখন হাসপাতালে ডিউটিতে থাকায় তারা বাসার ছাদে সময় কাটাতে থাকে।
এ সময় দারোয়ান সোহেল ছাদে উঠে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে থাকেন। এতে বাধা দিলে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে প্রেমিক যুগল সোহেলকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, পরে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের আত্মীয় আনিছ অভিযোগ করে বলেন, “আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করায় প্রেমিক যুগল ক্ষিপ্ত হয়ে সোহেলকে ছাদ থেকে ফেলে দেয়।”
বাসার মালিক শিহাব মিয়া জানান, “ঘটনার সময় আমি ঢাকায় ছিলাম। খবর পেয়ে আসি। প্রেমিক যুগলকে আমি চিনিনা। নিহত সোহেল আমার ফার্মে দারোয়ান হিসেবে কাজ করতো।”
আহাদের খালা মাকসুদা খুকি বলেন, “আমি হাসপাতালে যাওয়ার সময় বাসায় তালা দিই। পরে রাত ৯টার দিকে এ ঘটনার খবর শুনে এসে দেখি পুলিশসহ অনেকে জড়ো হয়েছে। তবে আমার বোনের ছেলে ও তার প্রেমিকাকে তখন বাসায় পাইনি।”
চান্দিনা থানার ওসি জাবেদ উল ইসলাম বলেন, “শনিবার রাতে ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আহতের পরিবার জানিয়েছিল চিকিৎসার পর অভিযোগ করবে। কিন্তু সোমবার সকালে সোহেলের মৃত্যু হলে আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি, তখন নিহতের মা জানিয়েছেন তারা মামলা করবেন না।”