মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী ও বাঙালী নারীদের অনুপ্রেরণার উৎস বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গরীব ও অসহায়দের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ, মাতৃত্বকালীন অনুদান এবং প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্মাননা দেয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বঙ্গমাতার জন্মদিন উপলক্ষে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার কলেজ রোডের আবদুল গফুর টাওয়ারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব উপহার দেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি এ. জেড. এম. শফিউদ্দিন(শামিম)।
উল্লেখ্য বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাকনাম ছিল রেণু। বাবার নাম শেখ জহুরুল হক ও মায়ের নাম হোসনে আরা বেগম। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে তিনি জাতির পিতার হত্যাকারীদের হাতে শহীদ হন তিনি।
এই মহান দিনে বঙ্গমাতার স্মৃতির উদ্দেশ্যে এ. জেড. এম. শফিউদ্দিন (শামীম) এর অর্থায়নে কর্মহীন লোকদের কর্মসংস্থান ও দারিদ্র বিমোচনের জন্য সামাজিক দায়বদ্ধতার আওতায় বরুড়ার ১৫ ইউনিয়নের ১৫ জন এবং পৌরসভার ৯ জন নারী সহ ২৪ জন নারী কে সেলাইমেশিন, একইভাবে ২৪ জন সন্তান সম্ভবা নারী কে মাতৃত্তকালীন অনুদান হিসেবে প্রত্যেক কে ১০ হাজার করে টাকা নগদ প্রদান করা হয়। এছাড়া বরুড়া আওয়ামী লীগ এর ৩৬ জন নিস্বার্থ, ত্যাগী এবং প্রবীণ নেতাদের সম্মাননা স্বারক ও সম্মানী প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য জনাব শামিম এর পরিবার এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত এস কিউ ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন ধরে অসচ্ছল মানুষকে স্বাবলম্বী করা, দারিদ্র্য দূরীকরণ, বেকারত্ব হ্রাস, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, চিকিৎসা, শিক্ষা, বাসস্থান নির্মাণ সহ মানুষের জীবন মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, কুমিল্লা (দ:) জেলা সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি এ. জেড. এম. শফিউদ্দিন(শামিম) বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ। এ লড়াই-সংগ্রাম-আন্দোলনের নেপথ্যে প্রেরণাদাত্রী ছিলেন ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তিনি বঙ্গবন্ধুর গোটা রাজনৈতিক জীবন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তাঁর প্রতিটি কাজে প্রেরণার উৎস হয়ে ছিলেন। বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বারবার পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দি জীবনযাপন করছিলেন, তখন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের কাছে ছুটে যেতেন। তিনি তাদের বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিকনির্দেশনা পৌঁছে দিতেন ও লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জোগাতেন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তি নিয়ে কিছু কুচক্রী স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল। তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাংলার মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল। স্বামী বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ছায়ার মতো অনুসরণ করা বেগম মুজিব জীবনে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেছেন, এজন্য অনেক কষ্ট-দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাঁকে। এদেশের মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে বেগম মুজিব যে কর্তব্যনিষ্ঠা, দেশপ্রেম, দূরদর্শী চিন্তা, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তার ফলে জাতির পিতার পাশাপাশি তিনি আজ বঙ্গমাতার আসনে অধিষ্ঠিত। এ দেশের রাজনীতিতে তাঁর অনন্য সাধারণ ভূমিকার জন্য চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও
কুমিল্লা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল আবু তাহের, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য ও বরুড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও বরুড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মোঃ বাহাদুরুজ্জামান, বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আগানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম মিঠু, বরুড়া উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সভাপতি ও ঝলম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরু এবং বরুড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ ফরহাদ হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন: উপজেলা আওয়ামী মহিলালীগের যুগ্ম-আহবায়ক কামরুন নাহার শিখা।
You cannot copy content of this page