কুমিল্লা নিউজ ডেস্ক।।
কুমিল্লা জেলা সদরের দুটি মার্কেটে অভিযান পরিচালনা করে একটিতেও ভ্যাট নিবন্ধনের প্রমাণ পাননি ভ্যাট গোয়েন্দারা। এমনকি কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির দোকান মাতৃভান্ডারে রাজস্ব ফাঁকির তথ্য পেয়েছেন তাঁরা। এ ছাড়া বনফুল ও কিষোয়ান স্ন্যাকসের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোও ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। ভ্যাট নিবন্ধন না নেওয়া ও রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার কারণে এসব দোকানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান গোয়েন্দারা।
ভ্যাট গোয়েন্দারা গতকাল সোমবার কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড়ের প্লানেট এসআর মার্কেট এবং কুমিল্লা সেনানিবাসের ফটকের সামনে অবস্থিত ময়নামতি সুপার মার্কেটে এই অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় দুই মার্কেটে ২০০টি দোকানের মধ্য খোলা ছিল ১২০টি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্দেশে পরিচালিত এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন ভ্যাট গোয়েন্দা কার্যালয়ের উপপরিচালক মুনাওয়ার মুরসালীন ও সহকারী পরিচালক আলমগীর হুসেন।
অভিযানকালে ভ্যাট গোয়েন্দারা প্লানেট এসআর মার্কেটের ৮০টি দোকানের মধ্যে ৫৬টি দোকান খোলা পান। এর মধ্যে একটি দোকানও ভ্যাট বা মূসক (মূল্য সংযোজন কর) নিবন্ধনের প্রমাণ দেখাতে পারেনি। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে চালু হয় এই মার্কেট।
অন্যদিকে সেনানিবাস এলাকার ময়নামতি সুপার মার্কেটে অভিযানকালে ১২০টি দোকানের মধ্যে ৬৪টি দোকান খোলা পান গোয়েন্দারা। ভ্যাট গোয়েন্দারা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর অবস্থিত এই মার্কেটের কোনো দোকানেরই ভ্যাট নিবন্ধন নেই। মূসক নিবন্ধন না থাকায় এসব দোকানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেটকে অনুরোধ করেছেন ভ্যাট গোয়েন্দারা।
এই দুটি মার্কেট ছাড়াও একই দিনে মিষ্টি ও স্ন্যাকসের তিনটি দোকানেও অভিযান চালিয়ে ভ্যাট গোয়েন্দারা রাজস্ব ফাঁকির প্রমাণ পান। ভ্যাট গোয়েন্দারা জানান, কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড়ে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির দোকান মাতৃভান্ডারে প্রতিদিন ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেলেও দোকানটি দৈনিক মাত্র ২০–২২টি ভ্যাট চালান কাটে। সে জন্য বিষয়টি পর্যবেক্ষণে ভ্যাট বিভাগের দুই কর্মকর্তা সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাতৃভান্ডারে অবস্থান করেন। এদিন প্রতিষ্ঠানটি ৩১৮টি ভ্যাট চালান কাটে। এতে বোঝা যায়, ভ্যাট চালান না দিয়ে জনপ্রিয় মিষ্টির দোকানটি প্রতিনিয়ত ব্যাপকভাবে ভ্যাট ফাঁকি দেয়।
এ ছাড়া সোমবার বনফুল অ্যান্ড কোং ও কিষোয়ান স্ন্যাকসের কুমিল্লা শাখায় অভিযান পরিচালনা করেন ভ্যাট গোয়েন্দারা। তাঁরা দুই প্রতিষ্ঠানেরই ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছেন। এ জন্য প্রতিষ্ঠান দুটির মূসকসংক্রান্ত তথ্যাদি জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলাও হবে।
ভ্যাট গোয়েন্দারা জানান, কুমিল্লা শহরের অনেক মার্কেটেই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়াই ব্যবসা পরিচালনা করছে। ফলে ক্রেতারা ভ্যাট পরিশোধ করলেও তা সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে না। তাই এনবিআরকে মাঠপর্যায়ের বাস্তব চিত্র জানানো এবং সঠিক ভ্যাট সংগ্রহ করতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page