কুমিল্লা নগরজুড়ে গুঞ্জন, সাক্কু কি জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন?

নিউজ ডেস্ক।।
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. মনিরুল হক (সাক্কু)। বুধবার (১০ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ হয়। এরপর জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের নিচে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন তিনি।

জাপার কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মনিরুলের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কুমিল্লা নগরজুড়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, মনিরুল কি জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বুধবার বিকেলে মুঠোফোনে মনিরুল হক বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে জাপার চেয়ারম্যান আমাকে তাঁর সঙ্গে দেখা করার অনুরোধ করেন। একজন সম্মানিত ব্যক্তি আমাকে এতবার ডাকছেন, তাই আমি দেখা করতে গিয়েছি। একাই আমি দেখা করতে গেছি। ১০ মিনিটের মতো তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএমের ফল কারচুপির বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। আমি তাঁকে বিস্তারিত বলেছি। তিনি আমাকে বাদাম ও চা খাইয়েছেন।’

জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল হক বলেন, ‘আমার মাথা খারাপ হইছে, আমি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেব? আমার চৌদ্দগুষ্টি বিএনপি করে। আমি বিএনপির তৃণমূলের নেতা। আমি কেন যোগ দেব? যোগ দেওয়া নিয়ে কোনো কথা হয়নি। কুসিক নির্বাচনে ইভিএমের কারচুপি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে।’

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্তত দুজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে মনিরুল হক বনানীতে যান। এ সময় জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক (চুন্নু) উপস্থিত ছিলেন। প্রায় আধা ঘণ্টার মতো তাঁরা কথা বলেন।

জাপার কেন্দ্রীয় এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মনিরুল জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন। জাতীয় পার্টি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—যার সঙ্গেই জোট করুক না কেন, মনিরুল কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর) আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে প্রার্থী হতে চান। এ জন্য জাতীয় পার্টি তাঁকে (মনিরুল হক) দলে ভেড়াতে চায়। মনিরুলের ভোটকে কাজে লাগাতে চায়।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মো. ইফতেকার আহসান হাসান বলেন, ‘চেয়ারম্যান স্যারের সঙ্গে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাক্কু (মনিরুল হক) সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তবে কী ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে, তা বলতে পারব না।’

মনিরুল হক ২০০৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান (বর্তমানে মেয়র বলা হয়) নির্বাচিত হন। তখন তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি ছিলেন। ২০০৯ সালের ২৪ নভেম্বর তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তী সময়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হন। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি ও ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ টানা দুই মেয়াদে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। দলীয় কার্যক্রমে অনুপস্থিত থাকায় ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে তাঁকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে তাঁর কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ ছিল।

পরবর্তী সময়ে দলীয় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে অংশ নেওয়ায় চলতি বছরের ১৯ মে বিএনপি মনিরুল হককে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করে। একই সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বারণ করা হয়। ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৩৪৩ ভোটের ব্যবধানে মনিরুল হককে পরাজিত ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

ফলাফলে ক্ষুব্ধ হয়ে এরপর মনিরুল ঘোষণা দেন, তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা সদর আসন থেকে নির্বাচন করবেন। ইতিমধ্যে তিনি বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া শুরু করেছেন। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন।

সূত্র- প্রথম আলো।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page