দেবিদ্বারে আওয়ামী লীগ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী; কে এই বিতর্কিত আক্তারুজ্জামান স্বপন?

মনির খাঁন।।
কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। এরই মাঝে সম্প্রতি ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও অনুষ্ঠান স্থলে কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। এতে কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তৃনমুল নেতাকর্মীদের প্রশ্ন অর্থের বিনিময়ে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ লুফে নিতে চান কে এই আক্তারুজ্জামান স্বপন? তিনি তো এই এলাকার বাসিন্দা না? তাহলে কিভাবে এই পদের জন্য তিনি লবিং তদবির করছেন? যারা দীর্ঘদিন ত্যাগ স্বীকার করে রাজনীতি করেছেন তাহলে তারা কি বঞ্চিত হবেন? তাকে তো এই এলাকায় কখনো রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হতে দেখা যায়নি? আখতারুজ্জামান তো এই এলাকার বাসিন্দা না? তাহলে হঠাৎ করে এসে কিভাবে তিনি সাধারণ সম্পাদক হতে চান? তাছাড়া তাকে নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের এতো আগ্রহই বা কেন? শেষ পর্যন্ত কি অর্থের বিনিময়ে তিনি সেই পদ পেয়ে যাবেন? স্থানীয় বাসিন্দা সহ আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা কর্মীদের মাঝে এমন নানা প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন শেষ হওয়ার পর কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় সে সময় কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। আর এ সুযোগে অর্থের বিনিময়ে আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া স্বপন নামে একজন বহিরাগত ব্যক্তি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদটি লুফে নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী আখতারুজ্জামান ভূঁইয়া জেলার দাউদকান্দি উপজেলার বাসিন্দা। তিনি স্থায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস করে আসছেন। তিনি কখনো এলাহাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না। এলাকার মানুষের সাথে নেই কোন সম্পৃক্ততা। সম্প্রতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগে নিজের ভোটার তালিকা সংশোধন করে মাইগ্রেশনের মাধ্যমে তিনি এলাহাবাদ ইউনিয়নের ভোটার হয়েছেন। বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক এই আখতারুজ্জামানকে নিয়ে অনেক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের? তিনি ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর না হলেও তাকে সাধারণ সম্পাদক পদে পদায়িত করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে একাধিক জেলার নেতা। স্থানীয়দের প্রশ্ন তাহলে এর নেপথ্যে কি বিপুল পরিমাণ অর্থ? আর অর্থের মালিক হলেই কি দলের এই গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়া যায়? আখতারুজ্জামানকে নিয়ে এলাহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ এবং বিতর্ক বিরাজ করছে।

অভিযোগ রয়েছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনের চার দিন আগে তিনি ভোটার তালিকা সংশোধন করে ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা হয়েছেন। রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থেকেই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ লুফে নিতে চাচ্ছেন। তাকে ঐ পদ দেওয়া হলে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে চরম বিভক্তি সৃষ্টি হতে পারে।

এলাহাবাদ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক বলেন, আখতারুজ্জামান স্বপন এই এলাকার বাসিন্দা নয়, তার জন্মস্থান দাউদকান্দি এলাকায়, সে ঢাকায় বসবাস করে, এলাহাবাদ এলাকায় কখনো আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন না, এখন টাকার বিনিময়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ হাতিয়ে নিতে চান, আমরা তাকে কখনো গ্রহণ করবোনা, তাকে এ পথ দেওয়া হলে আমরা গণহারে পদত্যাগ করব।

একই ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সভাপতি মোঃ শাজাহান বলেন সম্মেলনের ৮-১০ দিন আগে আখতারুজ্জামান মাইগ্রেশন এর মাধ্যমে এই এলাকার বাসিন্দা হয়েছে। তাকে নিয়ে সিনিয়র নেতৃবৃন্দের আগ্রহ তৃণমূলে ক্ষোভ বাড়াচ্ছে। তাকে কোনভাবেই এই পদ দেওয়া ঠিক হবে না।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আখতারুজ্জামান স্বপন বলেন আমি এলাহাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা, অর্থের বিনিময়ে আমি কখনো পদ নিতে আগ্রহী নই,এটা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার, আমি সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী হয়েছি, দল যোগ্য মনে করলে আমাকে এই পদ দিবে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম,রুহুল আমিন বলেন, তৃণমূল চায়না এমন কাউকে আমরা পদ দেবো না, অর্থের বিনিময়ে আওয়ামীলীগে কেউ পদ পায় না, যার বিষয় নিয়ে এতো বিতর্ক হচ্ছে তাকে নিয়ে আমরা ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করবো এবং কোন প্রকার বিতর্ক থাকলে তাকে পদ দেওয়া হবে না।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page