মো.জাকির হোসেন, কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার বুড়িচংয়ের পরিহল পাড়া গ্রামে সবজি বিক্রেতা শাহজাহান (৪৫) দুর্বৃত্তের ছোড়া এসিডে ঝলসে যাওয়ার ঘটনায় পুলিশ জুলহাস (৫০) ও আব্দুল হালিম (৪০) নামের দু’জনকে আটক করেছে। গতকাল সোমবার আটককৃতদের আদালতে পাঠালে বিজ্ঞ আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। এর আগে গত ৩০ জানুয়ারী রাতে পরিহলপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ির সামনে রাতের আধাঁরে কেবা কারা এসিড মেরে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়,জেলার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের পরিহলপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের পুত্র শাহজাহান দীর্ঘদিন ধরে পৈত্রিক বাড়ি ছেড়ে জেলার আদর্শ সদর উপজেলার কালিরবাজার ইউনিয়নের ধনুয়াখোলা গ্রামে বসবাস করে আসছে। গত ৩০ জানুয়ারী রাত আনুমানিক ১১ টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশের পরিহলপাড়া গ্রামের বাড়ির সামনে হঠাৎ শাহজাহানের আর্তচিৎকারে তার স্বজনসহ প্রতিবেশীদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। এসময় বাড়ির সামনের সড়কের পাশে শাহজাহানকে মাটিতে পড়ে থাকতে থেকে প্রতিবেশীসহ স্বজনরা উদ্ধার করে প্রথমে নিকটবর্তী ইষ্টার্ণ মেডিকেল কলেজ ও পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বঙ্গবন্ধু বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কুমিল্লা ( সদর সার্কেল) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সোহান সরকার,বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক পিপিএম ।
এঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে জড়িত সন্দেহে জুলহাস এবং আবদুল হালিম কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আহতের বোন পারুল ও পারভিন জানায়
মোঃ শাহজাহান এর সাথে বিগত কয়েক বৎসর ধরে প্রতিবেশী মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে জুলহাস ,মৃত রজব আলীর ছেলে মইন , আঃ খালেকের ছেলে হালিম, সায়েদ আলীর ছেলে আঃ মতিনের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে।
এদিকে প্রতিপক্ষ জুলহাসের মা মাজেদা বেগম (৭০), স্ত্রী শাহিদা আক্তার , ভাইয়ের স্ত্রী হনুফা বেগম,জাহেনারা বেগম ও সুরাইয়া মনির সহ আরো অনেকে জানান বিগত ৩৫ বৎসর পূর্বে শাহ জাহানের মা মৃত জলি বেগম এর কাছ থেকে জুলহাসের বাবা তৈয়ব আলী ৪ শতক সম্পত্তি ক্রয় করেন। সম্প্রতি শাহজাহান এসে এই সম্পত্তি দাবী করে এবং একাধিক মামলা রুজু করে। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারী সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলার শুনানীর তারিখ ধার্য ছিল।
গত শনিবার রাতে শাহজাহানের উপর অন্য কেউ চক্রান্ত করে এধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে জানিয়ে তারা আরো বলেন, জুলহাস এবং হালিম ঘটনার সময় পরিহল পাড়ায় একটি ধর্মীয় মাহফিলে ছিলেন। আমাদের বাড়ীর ছেলেরা দেশের বাহিরে চাকুরি নিয়ে আছেন। ষড়যন্ত্র করে আমাদেরকে ফাঁসানোর জন্য কেবা কারা এসিড মেরে আমাদের জড়িয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানী করছে। তারা আরো বলেন,পুলিশ তদন্তের মাধ্যমে সঠিক অপরাধীদের সনাক্ত করে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন করুক এটাই আমরা চাই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দেবপুর ফাঁড়ির আইসি আজিজুল বারী নয়ন বলেন, এ ঘটনায় শাহজাহানের বোন পারভিন বাদী হয়ে রোববার রাতে বুড়িচং থানায় ৩ জনের নামোল্লেখ করে একটি মামলা রুজু করেছে। পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে। অন্য আসামীকে আটকের চেষ্টা চলছে। তিনি আরো বলেন,শাহজাহান বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত। পুলিশ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।