মোঃ শরিফ খান আকাশ।।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় এখন ঘরে ঘরে জ্বরের রোগী। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জ্বরের সাথে মাথাব্যথা, সর্দিকাশি, বমি, গলা ব্যথা, শরীর ব্যথা, ডায়রিয়া, চোখ লাল ও পেট ব্যথার মতো উপসর্গ। এতে ডেঙ্গু সন্দেহে কুমিল্লাসহ উপজেলা বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,বেসরকারি হাসপাতাল ও রোগনির্ণয় কেন্দ্রেগুলোতে পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য ভিড় করছে জ্বর আক্রান্ত রোগী ও তার স্বজনরা। এতে দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগই মৌসুমি জ্বর।
চিকিৎসকরা বলছেন এ সময়টায় ডেঙ্গুর পাশাপাশি মৌসুমি জ্বরেরও প্রকোপ চলছে। তবে ডেঙ্গু শনাক্ত হলে অন্য জ্বরের মতো প্যারাসিটামল দিয়ে জ্বর নামিয়ে রাখতে হবে। জ্বর নামিয়ে ১০০ রাখলেই চলবে। ৯৭ করার দরকার নেই। প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য ওষুধ ব্যবহার করা উচিত না। এনএসআইডি (ডাইক্লোফেনাক, ইন্ডোমেথাসিন) দ্রুত জ্বর নামিয়ে, ঘাম ঝরিয়ে শকে নিতে পারে, কিডনির ক্ষতি করতে পারে। খাদ্যনালিতে রক্তক্ষরণ ত্বরান্বিত করে জীবনের ঝুঁকি ডেকে আনতে পারে। সাপোজিটরি নিলে শুধু প্যারাসিটামল, অন্য কিছু নয়। চার ডোজে ভাগ করে প্রতিবারে পাঁচশ’ মিলিগ্রাম প্যারাসিটামল খাওয়া উচিত তার পরেও ১০২-এর বেশি থাকলে একবারে তৎক্ষণাৎ এক হাজার মিলিগ্রাম প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে। কয়েকদিন তিন লিটার পানি পান করতে হবে।প্রয়োজনে স্যালাইন নিতে পারলে ভালো।প্যারাসিটামল ও পানিই ডেঙ্গুর আসল চিকিৎসা। ডেঙ্গু হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
সরেজমিনে বুধবার (৯ অক্টোবর ) ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বেসরকারি হাসপাতাল ও উপজেলার রোগনির্ণয় কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, জ্বরের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভিড়। রোগী ও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জ্বর হলেই ডেঙ্গু আতঙ্কে হাসপাতালে ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে আসছে তারা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, তিন থেকে সাত দিন জ্বর-সর্দি-কাশির তীব্রতা থাকছে। পরীক্ষায় কিছু মানুষের ডেঙ্গু ধরা পড়লেও বেশির ভাগই ভাইরাল ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত। একসঙ্গে পরিবারের একাধিক সদস্যও জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভুগছে। এমনও দেখা গেছে ডেঙ্গু পরীক্ষায় নেগেটিভ হলেও রোগীর রক্তে প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার চান্দলা হুড়ারপাড় এলাকার আবু হানিফ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছি। ছেড়ে ছেড়ে জ্বর আসে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে ডাক্তার দেখিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ল্যাবে ডেঙ্গু টেস্ট করিয়েছি। ডেঙ্গু নেগেটিভ এসেছে। ডাক্তার বলেছে মৌসুমি জ্বর।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হাসনাত মোঃ মহিউদ্দিন মুবিন এ প্রতিনিধিকে জানান, এ সময়ে ডেঙ্গু জ্বরেরও প্রকোপ চলছে। তাই জ্বর হলেই অবহেলা না করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি। এই উপজেলায় কিছু ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে, এদের মধ্যে বেশিরভাগই ঢাকা ও চট্টগ্রাম ফেরত। তবে কোনো রোগী ডেঙ্গু শনাক্ত হলে অপচিকিৎসা না নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসাসেবা গ্রহণের অনুরোধ করেন তিনি।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page