মুরাদনগরে সাজানো মামলায় আ’লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের হয়রানির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার:
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের উপ-নির্বাচনে কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: আল-আমিন সরকারকে প্রধান আসামি করে আ’লীগের অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয় । ৩ ডিসেম্বর দায়ের করা একটি মামলায় ২৫ জন নেতাকর্মী এবং ১১ তারিখ দায়ের করা সংঘর্ষের অপর মামলায় ৬ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করছেন তিনজন মেম্বার রয়েছে। সাজানো মামলায় তাদের আসামি করে ক্লিন ইমেজ নষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে-এমনই মন্তব্য করেছেন স্থানীয় আ’লীগ, ব্যবসায়ি ও সুশীল সমাজের লোকজন। মামলাগুলোর উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান ভূইয়া, উত্তর রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আ: হাকিম, বাংগরা বাজার থানা শ্রমিক লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক ছাদেক মেম্বার,কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সদস্য অসিত বরণ সরকার ও কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: আল-আমিন সরকার, নরেশ মেম্বার ও আবু সাইদ মেম্বারসহ আরো অনেকে। আসামিরা সবাই কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রবীণ রাজনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম সরকার সমর্থিত নেতাকর্মী ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আ’লীগের দলীয় কোন্দলের বহি:প্রকাশ এই দুইটি মামলা। রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের উপ-নির্বাচনে আ’লীগের দলীয় প্রার্থী মো: ইকবাল সরকারকে পরাজিত করার জন্য প্রবীণ রাজনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম সরকার সমর্থিত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দেয়া হয়েছিল। নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর পরাজয় নিশ্চিত করতে এই দুটি মামলা দায়ের করা হয়, যেখানে আ’লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের সক্রিয় নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়। এ উপ-নির্বাচনে আ’লীগের দলীয় প্রার্থী মো: ইকবাল সরকার ছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম সরকার সমর্থিত। অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু বকর আ’লীগের আরো একটি গ্রুপের সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করেছিল। এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন মেম্বার জানান, এই দুইটি মামলাই সাজানো । ২ ডিসেম্বর বিকেলের দিকে ইউনিয়নের চাপিতলা গ্রামে অর্তকিত হামলা চালায় প্রায় ৩০ টা মোটরসাইকেলে করে আসা প্রায় ৬০/৭০ জন সন্ত্রাসী। প্রথমে কুমিল্লা উত্তর জেলা আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকারের বাড়ি ও পরে জায়েদ আলী মার্কেট এলাকায় নৌকা প্রতিকের প্রার্থী মো: ইকবাল সরকারের গণসংযোগে হামলা করে সন্ত্রাসীরা ।

এ সময় দুই জায়গায় ৬ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা । এ সময় স্থানীয় জনগণ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করে। এই বহিরাগত সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গিয়ে উল্টো মামলা করে। যেখানে নির্দোষ নেতাকর্মীদের আসামি করে ।এ মামলায় উল্লেখিত আসামিরা ঘটনাস্থলেও ছিল না। আপনারা সিসি ক্যামেরা চেক করলেই দেখতে পারবেন। শুধুমাত্র রাজনৈতিক হয়রানি ও নৌকা প্রতিকের প্রার্থীকে ফেল করানোর জন্যই এ মামলা দায়ের করা হয়। নির্বাচনের পরদিনও ভুয়া অভিযোগ এনে আবার মামলা করে। এই মামলা দুটির অভিযোগ বানোয়াট। দু:খজনক বিষয় হলো মুরাদনগর আ’লীগের মূল স্রোতকে ধ্বংস করার জন্য এই মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর মেম্বার জানান, এ মামলা দুটি বানোয়াট মামলা। জনগণের ধাওয়া খেয়ে অস্ত্রধারি সন্ত্রাসীরা পালিয়েছে। অথচ তারাই গিয়ে উল্টো সাজানো মামলা করে আসামি করলো নিরপরাধ নেতাকর্মীদের। যারা ঘটনাস্থলেই ছিল না। হামলা যারা করেছে, সাজানো মামলাটাও তারা করেছে।

এ বিষয়ে রামচন্দ্রপুর বস্ত্র ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রহমান জানান, নির্বাচন বানচাল ও প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই এই ভিত্তিহীন বানোয়াট মামলা। পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিদের এই মামলা দুটিতে আসামি করা হয়েছে , যাদের এই এলাকায় পূর্বে কোন নেতিবাচক কার্যকলাপ নেই। একটি অশুভ শক্তির প্রশয়ে এসব মামলা হয়েছে। কুমিল্লা উত্তর জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান ভূইয়া জানান, কবির ভূইয়ার নেতৃত্বে দুই জায়গায় হামলা করেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা। অথচ উল্টো মামলার আসামি করা হয়েছে আমাদের ।

যে কবির ভূইয়া বাদি হয়ে মামলা করেছে সে নিজেই অস্ত্র মামলার আসামি। রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: ইকবাল সরকার জানান, এই দুটি মামলাই মিথ্যা অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে। ২ ডিসেম্বর বিকেলে চাপিতলা গ্রামে কুমিল্লা উত্তরের প্রবীণ রাজনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম সরকারের বাড়ি ও পরে জায়েদ আলী মার্কেট এলাকায় আমার গণসংযোগে হামলা করে গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা । হামলার খবর শুনে স্থানীয়রা সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করে। মামলায় উল্লেখিত আসামিরা ঘটনাস্থলেই ছিল না।

তাদের ক্লিন ইমেজ নষ্ট করার জন্যই এ হামলা করা হয়েছে। এছাড়া কোরের পাড় এলাকায় হামলার কথা উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। ওই এলাকায় প্রায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। কে বা কারা হামলা করেছে অথচ মামলার আসামি করা হয়েছে আ’লীগের সক্রিয় রাজনীতিবিদদের। যে দুই জন আহত হয়েছে তাদের সাথে আমি কথা বলেছি। তারাও বলেছে –মামলায় যারা আসামি হয়েছেন তারা হামলার সময় ছিলেন না। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে মামলায় ভুল ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: আল-আমিন সরকার জানান, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর সুযোগ্য কণ্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আর্দশ মেনেই সততা ও নিষ্ঠার সহিত দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতি করছি।

কুমিল্লা উত্তর জেলাজুড়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিকে ত্বরান্বিত ও জনগণের আস্থার জায়গায় নেওয়ার জন্য কাজ করেছি। নৌকা প্রতিকের প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চেয়েছি। কোথায় কি হামলা হয়েছে তাও জানি না। অথচ দুটি মামলায় আমাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। আমার ক্লিন ইমেজ নষ্ট করার জন্যই এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রধান অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছ

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  

You cannot copy content of this page