জাতীয় দলের জার্সিতে নিষ্প্রভ মেসি- এই তত্ত্বে এতদিন যারা বিশ্বাসী ছিলেন, তারা তা ভুলে যান। আকাশী-সাদা জার্সিটা গায়ে দিয়ে মেসি কেমন জ্বলে উঠতে পারেন, আজ বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি যারা দেখেছেন, তারা তা স্বীকার করতে বাধ্য হবেন। মেসি ম্যাজিকে রীতিমত উড়ে গেছে বলিভিয়া। আর্জেন্টিনার জয় ৪-১ গোলে বড় ব্যবধানে।
আগেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছিল লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য শেষ ম্যাচে প্রয়োজন ছিল জয়। প্রতিপক্ষ বলিভিয়া। লাতিন আমেরিকার কোনো দলই ছোট নয়। বলিভিয়াও মোটামুটি কঠিন প্রতিপক্ষ।
তবে গ্রুপ ‘এ’র শেষ ম্যাচে এরেনা পানতানালে তার ছিটেফোটাও দেখা যায়নি বলিভিয়ার খেলায়। মেসি এবং সার্জিও আগুয়েরোর যুগলবন্দী যে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে, তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বলিভিয়ানরা।
বিশাল এই জয়ে জোড়া গোল করেছেন মেসি। বাকি দুটি গোল করলেন আলেহান্দ্রো গোমেজ এবং লওতারো মার্টিনেজ। বলিভিয়ার হয়ে একমাত্র সান্তনাসূচক গোলটি করেন এরউইন সাভিদরা।
আগের তিন ম্যাচ হেরে এমনিতেই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছিল বলিভিয়ার। যার ফলে এই ম্যাচটি ছিল নিয়মরক্ষার। তবে পেশাদার ফুটবলে এসব ‘নিয়মরক্ষা’ শব্দের কোনো ঠাঁই নেই। এখানে সব ম্যাচই সমান। যার পরিপূর্ণ ছাপ দেখা গেলো আর্জেন্টিনার খেলায়।
এই ম্যাচে যে অধিনায়ক মেসিকে বিশ্রাম দেওয়া হবে না, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি। সে হিসেবে বলিভিয়ার বিপক্ষে পুরো সময়টাই মাঠে ছিলেন মেসি।
আর নামার সঙ্গে সঙ্গেই হাভিয়ের ম্যাসচেরানোকে পিছনে ফেলে আলবিসেলেস্তের হয়ে ১৪৮ ম্যাচ খেলে সর্বকালের সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার নজির গড়লেন তিনি। ম্যাচে জোড়া গোল করে ম্যাচের নায়কও তিনি।
ম্যাচের শুরু থেকেই আর্জেন্টিনা আর বলিভিয়ার মধ্যে পার্থক্য কী, দেখিয়ে দিতে শুরু করেন মেসি এবং আগুয়েরোরা। যার ফলে ম্যাচের ৬ মিনিটের মাথায় গোল আদায় করে নেয় আর্জেন্টিনা। গোলের সূচনা করেন পাপ্পু গোমেজ নামে পরিচিত আলেহান্দ্রো গোমেজ। এ নিয়ে দুই ম্যাচ খেলে দুই ম্যাচেই গোল পেলেন গোমেজ।
৩৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসি। এবার গোল আসলো পেনাল্টি থেকে। পাপ্পু গোমেজকে বক্সের মধ্যে ফাউল করেন বলিভিয়ার দিয়েগো বেজারানো। স্পট কিক নেন মেসি।
৪২ মিনিটে অসাধারণ এক গোল আসলো মেসি এবং আগুয়েরোর যুগলবন্দীতে। বলিভিয়ার ডিফেন্সিভ হাফ থেকে বল বাড়িয়ে দেন আগুয়েরো। আগুয়ান মেসি বলটা শুধু তুলে দিলেন বলিভিয়ার গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে। সেটি গিয়ে আশ্রয় নেয় বলিভিয়ার জালে।
ম্যাচের ৬৫ মিনিটে আর্জেন্টিনার হয়ে ডান পায়ের শটে চতুর্থ গোলটি করেন লওতারো মার্টিনেজ। এর ৫ মিনিট আগেই অবশ্য আর্জেন্টাইন ডিফেন্সের ভুলে একটি গোল শোধ করে দেন বলিভিয়ার এরউইন সাভিদরা।
এর আগে টানা ১৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড নিয়ে মাঠে খেলতে নামে আর্জেন্টিনা। বলিভিয়াকে হারিয়ে টানা ১৭ ম্যাচ অপরাজিত রইলো লা আলবেসেলেস্তারা। ২০১৯ সালে কোপা আমেরিকায় সর্বশেষ ব্রাজিলের কাছে হেরেছিল আর্জেন্টাইনরা। এরপর আর কোনো ম্যাচ হারেনি তারা।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page