নিউজ ডেস্ক।।
দেড় বছর পর সরকারের ঘোষণায় দেশব্যাপী খুলেছে স্কুল-কলেজ। এতে সারাদেশের ন্যায় প্রাণ ফিরেছে কুমিল্লার স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষার্থীদের কলকাকলিতে মুখরিত হয় দীর্ঘদিনের নির্জীব ক্যাম্পাস। অনেকদিন পর সহপাঠীদের কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে হয়েছে প্রাণের সঞ্চার।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায় কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার মন্তলী হাই স্কুল এন্ড কলেজের ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। একজন, দুজন করে শিক্ষার্থী আসছে। পিঠে ব্যাগ নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করছেন তাদের প্রতিষ্ঠানে। প্রবেশের সময় স্কুল গেটে একদল স্বেচ্ছাসেবক তাদের তাপমাত্রা পরিমাপ করাচ্ছে। এরপর তাদের স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুঁয়ে স্কুলে প্রবেশ করানো হচ্ছে। দেয়া হচ্ছে মাস্ক ও সচেতনতার জন্য স্বেচ্ছাসেবকরা দাঁড়িয়ে আছেন বিভিন্ন সচেতনতামূলক স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে।
মন্তলী হাই স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী ইশরাত জাহান বলেন, অনেক দিন অনলাইনে ক্লাস করেছি। আজ সশরীরে ক্লাস করছি। সবাইকে নিয়ে ক্লাস করায় খুব আনন্দ লাগছে। আশা করি আমরা এভাবে পড়ালেখা করতে পারবো। স্কুল গেইটে আমাদের সুন্দর আয়োজনের মাধ্যমে অর্ভথ্যনা জানানো হয়েছে। এতে আমরা আনন্দিত।
শিক্ষার্থীরা যখন স্কুলে প্রবেশ করছিলো, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংশপ্তক টিমের সমন্বয়ক জহিরুল ইসলাম নিজেই স্কুলের শিক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে এসব তদারক করছিলেন। জহিরুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থার আয়োজন করেছি। মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ তাপমাত্রা মেপে স্কুলে প্রবেশ করাচ্ছি। অত্র স্কুলের সহযোগিতায় আমরা ভিন্ন রকমের আয়োজনের চেষ্টা করেছি। শিক্ষার্থীরা যাতে নিরাপদে ক্লাস শেষ করে বাড়ি ফিরতে পারে তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।
এই ব্যতিক্রমী আয়োজনটি করে নাঙ্গলকোট উপজেলার শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবী টিম সংশপ্তক এর উদ্যোগে। সকাল ৯ টা থেকেই স্বেচ্ছাসেবকরা শিক্ষার্থীদের অভ্যর্থনা দেয়ার জন্য গেইটে দাঁড়িয়ে থাকে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে। গেইটে শিক্ষার্থীদের স্বাগতম জানিয়ে লাগানো হয় ব্যানার।
মন্তলী হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল বলেন, স্বেচ্ছাসেবক টিমটি করোনার শুরু থেকেই উপজেলায় নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দিনে তারা আমাদের কাজ এগিয়ে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ম মেনে স্কুলে প্রবেশ করিয়েছি। নিয়েছে যথাযত ব্যবস্থা। তাদের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
ব্যতিক্রমী আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন নাঙ্গলকোট উপজেলার সহকারী কর কমিশনার আশরাফুল হক, রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, অত্র কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল, সংশপ্তক টিমের সমন্বয়ক জহিরুল ইসলাম, স্কুলের শিক্ষক ও সংশপ্তক টিমের সদস্যরা।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে ১৭ মার্চ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৩ মার্চ ২০২০ সাল ধরে দীর্ঘ দেড় বছর থেকে উপজেলায় বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী টিমটি।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page