সফলতার গল্প শোনালেন কুবি ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা

ফয়সাল মিয়া, কুবি।।
বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষার অন্যতম মাধ্যম বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে প্রতিবছর একঝাঁক তরুণ মেধাবীর আগমন ঘটে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। জুলাই বিপ্লবের সাহস, স্বপ্ন ও দেশপ্রেমের ব্রত নিয়ে লালমাটির ক্যাম্পাস কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখেছে ১৮ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা। কয়েকজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সংগ্রাম, সফলতা ও স্বপ্ন নিয়ে কথা বলেন প্রতিবেদকের সাথে।

লোক প্রশাসন বিভাগের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আয়েশা বলেন, “১৮ তম ব্যাচ কথাটা শুনলেই কেমন সু্ন্দর একটা অনুভূতি হয়। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের আঠারো বছর বয়স কবিতার কথা আমরা সবাই মুটামুটি জানি। তিনি সেই কবিতায় আঠারো বছর বয়সের গুণগান করেছেন। এই বয়স কতটা সাহস, উদ্যমের তার উল্লেখ করেছেন। ঠিক তেমনি ভাবেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ তম ব্যাচ হিসেবে আমাদেরকেও বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাড়াঁতে হবে সাহস,উদ্যম,দেশপ্রেম আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

আয়েশা আরও বলেন, প্রত্যেকেরই নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে স্বপ্ন থাকে। ঠিক তেমনি আমারও আছে। আমিও চাই আমার প্রাণ-প্রিয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুধু বাংলাদেশ নয় পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক। “টাইম’স হায়ার এডুকেশনে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েরও নাম থাকুক। শিক্ষার্থীরা এখান থেকে পড়াশোনা করে বিদেশে যাক এবং নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অর্জন করুক।

নবীন শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পিছনে সবারই কম-বেশি সফলতার গল্প থাকে। ঠিক তেমনই আমারও আছে। আর আমার সফলতার পিছনে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে আমার আত্মবিশ্বাস। পুরো এডমিশন সময়ে আমার আত্মবিশ্বাস আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। পুরো এডমিশন সময়ে আমি একবার আমার আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলাম। তখন আমি আমার আম্মুকে ফোন দিয়েছিলাম এবং আম্মু আমাকে বুঝিয়ে ছিলেন। নতুন করে তখন আবার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলাম।

মোহাম্মদ আসিফ হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির দিনগুলোর কথা স্মৃতিচারণ করে বলেন, “সবার মতো স্বপ্ন নিয়ে আমিও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম কিন্ত ভাগ্যের কাছে হেরে গেলাম প্রথম যাত্রায়। ভালো সাব্জেক্ট নিয়ে পড়ার স্বপ্ন অধরা থেকে যায়। সেকেন্ড টাইম প্রিপারেশন শুরু করা আমার জন্য ছিলো পাহাড় সমান বাঁধার মতো। ফ্যামিলির চাপ,বন্ধুদের কাছে গুরুত্ব কমে যাওয়া, একরাশ হতাশা নিয়ে সামনে আগানো এবং লাইফে হেরে যাওয়ার যন্ত্রণা দিয়েই প্রিপারেশন নিচ্ছিলাম। তবে সব কিছুর মধ্যেও বড় ভাইয়ের সাপোর্ট ছিলো আমার কাছে সাহস,আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার মতো। সাথে ছিলো মা-বাবার দোয়া এবং আল্লাহর রহমত।

আসিফ বলেন, একজন নবীন হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস চাই র‍্যাগিং মুক্ত ও বড় ভাই/আপুদের বন্ধুসুলভ আচরণ। গবেষণা নির্ভর পড়াশুনা এবং শিক্ষকদের বন্ধুসুলভ আচরণ আর সাহায্য। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আবাসিকতা নিশ্চিত করা, ক্যাম্পাসকে ডিজিটাইলেজশন করা, খাবারের মান বৃদ্ধি করা সহ সার্বিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা।

আফতাব উল হক খান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম ব্যাচ’ শুনলেই আমার মনে এক অদ্ভুত আনন্দের অনুভূতি জাগে। ১৮ মানে হলো সব বাধা অতিক্রম করে সামনে অগ্রসর হওয়া, অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠা। এই সব কারণে ১৮তম ব্যাচে ভর্তি হতে পারা আমাকে বিশেষ আনন্দিত করে।আমি চাই, আমার ক্যাম্পাস সৃজনশীল এবং সম্পর্কের মেলবন্ধন ঘটানোর একটি নির্মল স্থান হোক। যেখানে সকল প্রকার ঝামেলা মুক্ত পরিবেশ থাকবে, সবাই একে অপরের সহায়তায় এগিয়ে আসবে।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কে নিয়ে আমার বিভিন্ন স্বপ্ন প্রতিটি মুহূর্তে আমাকে রোমাঞ্চিত করে তোলে। আমি বিশ্বাস করি, কুবি আমাদের উচ্চ শিক্ষার পথ আরও সুন্দর করবে। এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রন্থাগার, মেডিকেল সুবিধা এবং শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা থাকবে। বিভিন্ন শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে, যা আমাদের মেধা বিকাশে সহায়তা করবে।

সবশেষে, আমি চাই কুবিতে রাজনৈতিক কার্যক্রম যেন ইতিবাচক থাকে। ছাত্র-রাজনীতি নয়, বরং এমন একটি সংগঠন থাকা উচিত, যা শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরবে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি খণ্ডকালীন চাকরি, কোন শিক্ষার্থীর শিক্ষাবৃত্তির প্রয়োজন এবং কোন ধরনের শিক্ষামূলক কার্যক্রমের সুফল নিয়ে আসবে তা সম্পর্কে তাদের ধারণা থাকবে।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১

You cannot copy content of this page