লাকসাম প্রতিনিধি।।
ভিসা, টিকেট সব কিছুই ছিল ঠিকঠাক। জীবিকার তাগিদে আগামী বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে যাওয়ার কথা ছিল মহিনের। কিন্তু নিয়তি কত নিষ্ঠুর! কত নির্মম। এত সুখ কি আর কপালে সয়।
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। তার আগেই পরপারের ভিসা, টিকিটসহ পৃথিবী থেকে একেবারেই বিদায় নিয়ে গেছেন তিনি। সোমবার (২৮ অক্টোবর) এমন মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মুদাফরগঞ্জ (দক্ষিণ) ইউনিয়নের শ্রীয়াং গ্রামে। শ্রীয়াং গ্রামের মো. মোখলেছুর রহমান ফরাজীর জ্যেষ্ঠ ছেলে মো. মহিন উদ্দিন (২৮)।
পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক। অভাবের সংসার। সংসারের অভাব ঘুচাতে এবং পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে স্বপ্ন দেখেন প্রবাস জীবনের। সেমতে ভিসা, টিকিট সব কিছু ঠিকঠাকও ছিল।
শুধু বাড়ি থেকে বের হয়ে ঢাকা বিমানবন্দর যাবেন। সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে সেখান থেকে বিমানে উঠবেন। কিন্তু প্রবাস জীবনের স্বপ্ন পূরণ হলো না মহিনের। হলো না বিমানে ওঠা। তার আগেই সোমবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে।
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আমান উল্ল্যাহ বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মো. মহিন উদ্দিনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মহিন উদ্দিন পেশায় একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক ছিলেন। জীবিকার তাগিদে আগামী বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সৌদি আরবের উদ্দেশে বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার কথা ছিল। বিদেশ যাওয়ার আগে পরিবারের জন্য একটি রান্নাঘর মেরামতের কাজ করছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় রান্নাঘরে বিদ্যুৎ লাইন মেরামত করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত হন। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যরা লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরো জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছার আগেই পথিমধ্যে মারা যায় মহিন। তবুও মানসিক প্রশান্তি এবং নিশ্চিত হওয়ার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তার স্ত্রী এবং ছোট্ট দুইটি অবুঝ সন্তান রয়েছে। মহিনের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, গ্রামবাসীসহ পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সন্তানকে হারিয়ে মা-বাবা অনেকটা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page