কুমিল্লা নিউজ ডেস্ক।।
মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে কুমিল্লা নগরবাসী। তাদের ব্যস্ততম জীবনযাত্রায় এখন আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে শব্দদূষণ। নগরীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে মানুষের শ্রবণশক্তির সহনশীলতার সীমা ছাড়িয়ে শব্দের মাত্রা দিন দিন দূষণে পরিণত হচ্ছে। নীরবে মানুষের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতিসাধন করছে উচ্চমাত্রার শব্দ। নগরীর বিভিন্ন সড়কে অতিরিক্ত যানজটে গাড়ির হর্ন, হাইড্রোলিক হর্ন এবং অতিরিক্ত মাইকিংয়ের ফলে শব্দদূষণের মাত্রা দিনদিন বেড়েই চলেছে কুমিল্লায়।
এ অবস্থায় বুধবার (৩০ মার্চ) কুমিল্লায় ‘শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত এবং অংশীদারিত্ব প্রকল্প’ এর আওতায় পেশাজীবীদের অংশগ্রহণে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। এসময় কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শওকত আরা কলিসহ কুমিল্লা নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর নির্ধারিত কুমিল্লা নগরীর পাঁচটি পয়েন্টে শব্দ পরিমাপক যন্ত্র বসানো হবে। সেখান থেকে শব্দ দূষণের মাত্রা জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এছাড়া কম শব্দের হর্ন ও যন্ত্র ব্যবহার করার লক্ষ্যে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হবে। প্রয়োজনে সভা সেমিনার এবং লিফলেট দিয়ে এই সচেতনতা চালানো যেতে পারে। পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে- প্রয়োজনে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ম্যাজিষ্ট্রেটগণের মাধ্যমে শব্দদূষণ যারা ছড়াচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শওকত আরা কলি জানান, আবাসিক এলাকা হিসেবে রানীর দিঘীর পাড়, হাউজিং এস্টেট, ঠাকাুর পাড়া, বাঁগিচাগাও। নীরব এলাকা হিসেবে- কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতাল, আদালত, কুমিল্লা জিলা স্কুল, নবাব ফয়জুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুমিল্লা মডার্ন স্কুল, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ এলাকা। মিশ্র এলাকা মুন হাসপাতাল ও রামঘাট থেকে টমছমব্রীজ। শিল্প এলাকা হিসেবে বিসিকি ও ইয়াছিন মার্কেট ইপিজেড এবং বানিজ্যিক এলাকা হিসেবে পূবালী চত্বর এবং চকবাজার সার্কেল এরিয়া চিহ্নিত করে এই এলাকাগুলোতে ২৪ ঘন্টা শব্দের মাত্রা পরিমাপ করা হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সাধারণ মানুষের জন্য প্রযোজ্য সুরক্ষিত শব্দমাত্রা ৪০ থেকে ৫০ ডেসিবল। সাধারণত ৬০ ডেসিবলের শব্দ মানুষকে সাময়িকভাবে বধির করে দিতে পারে। আর ১০০ ডেসিবল মাত্রার শব্দ সম্পূর্ণ বধিরতা তৈরি করতে পারে। যদিও কুমিল্লা নগরীর কিছু এলাকায় সেই মাত্রা ৯০ ডেসিবল ছাড়িয়ে গেছে। শব্দদূষণের এ মাত্রা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন জেলার বিশিষ্ট নাগরিকগণ।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page