০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জাতীয় পর্যায়ের তুলনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা বেশি ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন- ড. ইমরান আনসারী কোনো ষড়যন্ত্রই কুমিল্লা-৬ আসনের মানুষের সঙ্গে আমার বন্ধন ভাঙতে পারবে না-হাজী ইয়াছিন কুমিল্লা-৯ আসনে মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা মোঃ শফিকুর রহমান কুমিল্লা-১১ চৌদ্দগ্রাম আসনে বিএনপির প্রার্থী কামরুল হুদার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ বুড়িচংয়ে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস পালিত স্বপ্নের বুড়িচংয়ের নেতৃত্বে ২৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার, আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস কুবি আন্তঃবিভাগ ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন এমসিজে ও সিএসই বিভাগ কুমিল্লায় চালু হলো দেশের প্রথম স্বয়ংক্রিয় জ্বালানি বিপণন ডিপো, সরবরাহ ৪ জেলায় মুরাদনগরে পুলিশের অভিযানে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতিসহ গ্রেপ্তার ৪ কুবি ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন ছাড়িয়েছে ৮০ হাজার, সময় শেষ ৩১ ডিসেম্বর

কুমিল্লায় অটোরিকশাচালক হত্যা; ৯৯৯ এ কলের সূত্র ধরে কিশোর গ্যাংয়ের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

  • তারিখ : ০৭:৪১:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩
  • 48

মনোয়ার হোসেন।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ৯৯৯ এর সূত্র ধরে চাঞ্চল্যকর অটো-রিকশা চালক শিমুল হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে থানা পুলিশ।

রবিবার (১৩ আগস্ট) রাতে চৌদ্দগ্রাম থানার এএসআই জহির উদ্দিন এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম বিশেষ অভিযান চালিয়ে অটো-রিকসা চালক শিমুল হত্যার সঙ্গে জড়িত ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। তারা কিশোর গ্যাং এর সদস্য বলে জানা গেছে।

আটককৃতরা হলো: উপজেলার পেঁচাইমুড়ি গ্রামের সুমন মিয়ার ছেলে সাইমন (১৬), পৌরসভার পশ্চিম শ্রীপুর এলাকার হারুনুর রশিদের ছেলে আব্দুল মান্নান (২৪), বাবুল মিয়ার ছেলে বাপ্পি (১৪), রামরায়গ্রাম এলাকার দুদু মিয়ার ছেলে রবিন (২২) ও মৃত আলমগীর মিয়ার ছেলে সৈকত (১৬)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা।

থানা সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন আগে জুয়েল (১২) নামে এক কিশোরকে বাইসাইকেল ও পাঁচশত টাকাসহ অপহরণ করে দোয়েল চত্ত্বর এলাকার একটি বাসায় আটকে রাখে সাইমন, রবিন, সৈকত। পরে ভুক্তভোগি জুয়েলের পিতা মোহন মিয়ার কাছে তারা মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করে।

মোহন মিয়া জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিলে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে থানার এএসআই জহির উদ্দিন তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে সাইমন নামে এক কিশোরকে আটক করে। পরে আটককৃত সাইমনের স্বীকারোক্তি মোতাবেক অপহরণের সাথে জড়িত আরো ৪ জনকে আটক করে পুলিশ।

এই অপহরণের সাথে জড়িত সন্দেহে আটককৃত ৪ জনের একজন, আসামী রবিন (২২) পুলিশের সামনে অপর আসামী সাইমনকে ‘তার মতো তোরেও মারা হবে’ বলে হুমকি দেয়। এএসআই জহির এই কথাটি শুনতে পায়। পরে এ বিষয়ে রবিন সহ অপর আসামীদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

পরে ধৃত আসামীদের সীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস অটো-রিকশা চালক শিমুল হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য।

স্বীকারোক্তিতে তারা বলে, গত ২২ জুন অটোরিকশা চালক শিমুলকে গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে মহাসড়কের হায়দারপুল এলাকায় রাস্তার পূর্ব পাশের ডোবায় ফেলে চলে যায়। চাঞ্চল্যকর এ হত্যার ঘটনার ৫৩ দিন পরে রহস্য উদঘাটন সহ ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার মূলহোতা সাইমন আরো জানায়, অটোচালক শিমুল তাদের বন্ধু ছিল। তারা শিমুলের অটো-রিকসা ছিনতায়ের জন্য পরিকল্পনা করলেও হত্যা করা তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। পরিকল্পনা অনুসারে তারা শিমুলকে চৌদ্দগ্রাম বাজার থেকে হায়দারপুল এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে আব্দুল মান্নান বেল্ট দিয়ে শিমুলের গলা পেঁচিয়ে ধরে। একপর্যায়ে শিমুল নড়াচড়া না করায় মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে তারা তাকে মহাসড়কের ডোবায় ফেলে দিয়ে তার অটো-রিকসা নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে গত ২৪ জুন সকালে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ হায়দারপুল এলাকা থেকে অটোচালক শিমুলের মৃতদেহ উদ্ধার করে। ওইদিন রাতে নিহতের পিতা সুমন ড্রাইভার বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল পেয়ে থানা পুলিশ একটি অপহরণ সংক্রান্ত ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে ক্লুলেস অটোচালক শিমুল হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ কিশোরকে আটক করে সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে আটক আসামীদের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। হত্যাকান্ডের সাথে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত জানা যাবে।’

error: Content is protected !!

কুমিল্লায় অটোরিকশাচালক হত্যা; ৯৯৯ এ কলের সূত্র ধরে কিশোর গ্যাংয়ের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

তারিখ : ০৭:৪১:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩

মনোয়ার হোসেন।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ৯৯৯ এর সূত্র ধরে চাঞ্চল্যকর অটো-রিকশা চালক শিমুল হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে থানা পুলিশ।

রবিবার (১৩ আগস্ট) রাতে চৌদ্দগ্রাম থানার এএসআই জহির উদ্দিন এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম বিশেষ অভিযান চালিয়ে অটো-রিকসা চালক শিমুল হত্যার সঙ্গে জড়িত ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। তারা কিশোর গ্যাং এর সদস্য বলে জানা গেছে।

আটককৃতরা হলো: উপজেলার পেঁচাইমুড়ি গ্রামের সুমন মিয়ার ছেলে সাইমন (১৬), পৌরসভার পশ্চিম শ্রীপুর এলাকার হারুনুর রশিদের ছেলে আব্দুল মান্নান (২৪), বাবুল মিয়ার ছেলে বাপ্পি (১৪), রামরায়গ্রাম এলাকার দুদু মিয়ার ছেলে রবিন (২২) ও মৃত আলমগীর মিয়ার ছেলে সৈকত (১৬)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা।

থানা সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন আগে জুয়েল (১২) নামে এক কিশোরকে বাইসাইকেল ও পাঁচশত টাকাসহ অপহরণ করে দোয়েল চত্ত্বর এলাকার একটি বাসায় আটকে রাখে সাইমন, রবিন, সৈকত। পরে ভুক্তভোগি জুয়েলের পিতা মোহন মিয়ার কাছে তারা মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করে।

মোহন মিয়া জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিলে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে থানার এএসআই জহির উদ্দিন তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে সাইমন নামে এক কিশোরকে আটক করে। পরে আটককৃত সাইমনের স্বীকারোক্তি মোতাবেক অপহরণের সাথে জড়িত আরো ৪ জনকে আটক করে পুলিশ।

এই অপহরণের সাথে জড়িত সন্দেহে আটককৃত ৪ জনের একজন, আসামী রবিন (২২) পুলিশের সামনে অপর আসামী সাইমনকে ‘তার মতো তোরেও মারা হবে’ বলে হুমকি দেয়। এএসআই জহির এই কথাটি শুনতে পায়। পরে এ বিষয়ে রবিন সহ অপর আসামীদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

পরে ধৃত আসামীদের সীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস অটো-রিকশা চালক শিমুল হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য।

স্বীকারোক্তিতে তারা বলে, গত ২২ জুন অটোরিকশা চালক শিমুলকে গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে মহাসড়কের হায়দারপুল এলাকায় রাস্তার পূর্ব পাশের ডোবায় ফেলে চলে যায়। চাঞ্চল্যকর এ হত্যার ঘটনার ৫৩ দিন পরে রহস্য উদঘাটন সহ ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার মূলহোতা সাইমন আরো জানায়, অটোচালক শিমুল তাদের বন্ধু ছিল। তারা শিমুলের অটো-রিকসা ছিনতায়ের জন্য পরিকল্পনা করলেও হত্যা করা তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। পরিকল্পনা অনুসারে তারা শিমুলকে চৌদ্দগ্রাম বাজার থেকে হায়দারপুল এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে আব্দুল মান্নান বেল্ট দিয়ে শিমুলের গলা পেঁচিয়ে ধরে। একপর্যায়ে শিমুল নড়াচড়া না করায় মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে তারা তাকে মহাসড়কের ডোবায় ফেলে দিয়ে তার অটো-রিকসা নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে গত ২৪ জুন সকালে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ হায়দারপুল এলাকা থেকে অটোচালক শিমুলের মৃতদেহ উদ্ধার করে। ওইদিন রাতে নিহতের পিতা সুমন ড্রাইভার বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল পেয়ে থানা পুলিশ একটি অপহরণ সংক্রান্ত ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে ক্লুলেস অটোচালক শিমুল হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ কিশোরকে আটক করে সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে আটক আসামীদের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। হত্যাকান্ডের সাথে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত জানা যাবে।’