নির্বাচনে হস্তক্ষেপের মামলায় ট্রাম্প গ্রেপ্তার

নিউজ ডেস্ক।।
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায় ২০২০ সালে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁকে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরের ফুলটন কাউন্টি কারাগারে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

গ্রেপ্তারের পর বেশিক্ষণ কারাবন্দী থাকতে হয়নি সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে। সিএনএনের সরাসরি সম্প্রচারিত খবরে বলা হয়েছে, তিনি কারাগার ছিলেন ২০ মিনিটের মতো। এ নিয়ে চলতি বছরে দুবার গ্রেপ্তার হলেন ট্রাম্প। এর আগে গত এপ্রিলে পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ওই সময় নিউইয়র্কে ম্যানহাটানের আদালতে ট্রাম্পকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ট্রাম্প ও তাঁর ১৮ সহযোগী ২০২০ সালে জর্জিয়ায় নির্বাচনের ফল বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন, এমন অভিযোগ আনা হয় গত ১৪ আগস্ট। ওই দিন ৯৮ পৃষ্ঠার একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে ট্রাম্পসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে ৪১টি অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযুক্তদের সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। জর্জিয়ার গ্র্যান্ড জুরি ট্রাম্পসহ তাঁদের বিরুদ্ধে র‍্যাকিটেরিং ইনফ্লুয়েন্সড অ্যান্ড করাপ্ট অর্গানাইজেশন (আরআইসিও) আইন ভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জর্জিয়ার ফুলটন কাউন্টির ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ফ্যানি উইলিস এসব অভিযোগ তুলেছেন। গত ১৪ আগস্ট ফ্যানি উইলিস বলেছিলেন, নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে জর্জিয়ার আইনি প্রক্রিয়া অবলম্বনের বদলে অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধ অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। ভোটের ফল বদলে দিতে এই পথে হাঁটেন তাঁরা।

এরপর ট্রাম্প ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গ্রেপ্তারের আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প নিজেই। বৃহস্পতিবার তাই ঘটল। তবে ২ লাখ ডলারের মুচলেকা সাপেক্ষে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এদিকে ট্রাম্পকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারের নথির বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে সিএনএন। এতে বলা হয়, ট্রাম্পের উচ্চতা ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি। কারা নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁর ওজন ৯৭ কেজি ৫০০ গ্রাম। তাঁর চোখের রং নীল। চুলের রং সোনালী বা স্ট্রবেরি।

যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে
গত ১৪ আগস্ট ট্রাম্পের এই অভিযোগপত্র দেওয়ার আগের দিন আদালতের ওয়েবসাইটে ১৩ অভিযোগসংবলিত একটি নথি প্রকাশ করা হয়েছিল। পরে এই নথি সরিয়ে দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি ট্রাম্প জর্জিয়ার শীর্ষ নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন। এ সময় ট্রাম্প ওই কর্মকর্তাকে বলেন, কিছু ভোট খুঁজে বের করুন, যাতে নির্বাচনের ফল বদলে দেওয়া যায়। ট্রাম্পের ওই আহ্বানে সাড়া দেননি কর্মকর্তা।

এর ছয় দিন পর কংগ্রেস ভবন ইউএস ক্যাপটিলে ব্যাপক হামলা চালান ট্রাম্পের সমর্থকেরা। সেই দিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জয়ের স্বীকৃতি দিতে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন বসেছিল। কংগ্রেস সদস্যরা যাতে জো বাইডেনকে জয়ী ঘোষণা করতে না পারেন, এ লক্ষ্যে হামলা চালিয়েছিলেন তাঁরা।

ওই অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর ভোটের আগে থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ট্রাম্প ও তাঁর সহযোগীরা বেশ কিছু অপরাধ করেছেন। এর মধ্যে ২০২০ সালের নির্বাচন যাচাই-বাছাইয়ে আইনপ্রণেতাদের গঠিত কমিটিতে মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধা, নির্বাচনী সরঞ্জাম ভাঙচুরের অভিযোগও আনা হয়েছে ট্রাম্প ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে। বলা হয়েছে, জর্জিয়ার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোয় ভোটারদের তথ্য চুরি ও ব্যালটের ছবি তুলেছেন ট্রাম্পের সমর্থকেরা। এ ছাড়া তাঁর সমর্থকেরা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের হয়রানিও করেছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

যদিও ট্রাম্পও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলছেন, এসব অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি যাতে আর প্রেসিডেন্ট হতে না পারেন, সেই চক্রান্ত হচ্ছে।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page