১২:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লায় উল্টো পথে আসা পিকআপে ধাক্কা, মোটরসাইকেল চালক নিহত কুমিল্লা নিউজের প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ কুমিল্লায় বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে আহত এক নারীসহ ২ জনের মৃত্যু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে মব তৈরি করে ৩ সাংবাদিক হেনস্তা ব্রাহ্মণপাড়ায় স্কুল পরিদর্শনে ইউএনও, ক্লাস নিলেন শিক্ষার্থীদের কুমিল্লায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন আহত; ২ জনের হাত-পা বিচ্ছিন্ন কুমিল্লায় সেনা অভিযানে দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী আটক, বিপুল অস্ত্র-সামগ্রী জব্দ জাতীয়তাবাদী মহিলাদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে কুমিল্লা উত্তর জেলা মহিলা দলের বর্ণাঢ্য র‍্যালী মুরাদনগরে অগ্নিকাণ্ডে দোকান পুড়ে ছাই, ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতি কুমিল্লায় বাল্যবিয়ের খবর বিয়ে বাড়ীতে অভিযান; বরের বাবাকে জরিমানা

ইদের ছুটিতে বাড়ি যেতে পারেন না কুবির নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা

  • তারিখ : ১২:৪০:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ এপ্রিল ২০২৪
  • 9

কুবি প্রতিনিধি।।
পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব সবাই যখন ঈদের খুশি ভাগাভাগিতে ব্যস্ত, পেশাগত কারণে দায়িত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে কিছু মানুষ থাকে উৎসব-আনন্দের ঊর্ধ্বে। ঈদের দিনেও কর্মস্থলে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হয় তাদের। চাইলেও ইদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ নেই । বলছিলাম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যদের কথা।

শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তারা পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে যখন সবাই ক্যাম্পাস ত্যাগ করে বাড়িতে অবস্থান করে তখনই স্বপ্নের ক্যাম্পাসটাকে আগলে রাখার জন্য বদ্ধপরিকর তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে ছয় হাজার মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব আনসার সদস্যদের । কারো কাছে মামা, কারো কাছে ভাই আবার কারো কাছে আঙ্কেল। সর্বক্ষণ দায়িত্ব পালন করে চলছেন তারা। ঈদে ক্যাম্পাস শূন্য হয়ে গেলেও তাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা । চেয়ে চেয়ে দেখছেন আর পরিচিতদের হাসিমুখে বিদায় দিচ্ছেন। এ যেন একা রেখে চলে যাওয়া বিচ্ছেদ। পরিবারের বাইরে নিজ কর্মস্থলে এভাবেই ঈদ কাটাবেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালে মোট আনসার সদস্য আছে ৫০ জন। এরমধ্যে ইদের ছুটি পেয়েছেন ২০ জন। বাকিরা দিবে ক্যাম্পাস পাহারা। যারা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন তারা হয়তো পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারবে না কিন্তু সহকর্মীদের সাথেই কাটবে তাদের ঈদ। এ এক অন্যরকম ঈদ। এক ঈদে যারা বাড়ি ফিরবে অন্য ঈদে তারা ফিরতে পারবে না৷ একজন রোজার ঈদে ছুটি পেলে কোরবানির ঈদে ছুটি পাবেন না। এনিয়ে তাদের আফসোস হলেও অন্য সহকর্মীরা যে পরিবারের সাথে ঈদ পালন করতে পারছে এতেই তাদের আনন্দ।

ঈদে বাড়ি ফেরা নিয়ে কথা হলো তাদের সঙ্গে। এক আনসার সদস্য বলেন, পরিবারের সাথে ঈদ করতে সবারই মন চায় কিন্তু বাস্তবতা তো আলাদা। আমাদের দায়িত্ব তো পালন করতে হবে। আমার ছোট ছোট দু’টো সন্তান রয়েছে তাদের জন্য খারাপ লাগে। সব মিলিয়ে আমাদের কাজের মধ্যই আনন্দ খুঁজে নিয়েছি, এই ক্যাম্পাসই এখন আমাদের দ্বিতীয় পরিবার হয়ে উঠেছে। আপনাদের জন্য এই ভার্সিটি দেখাশুনা করে রাখতে পারছি এটাই প্রাপ্তি।

আরেক নিরাপত্তা কর্মী বলেন , এইখানে এটা আমার প্রথম ঈদ, মন চাই বাড়িতে গিয়ে মায়ের সাথে ঈদ করতে। মায় কইছিলো বাড়ি যাবার জন্য কিন্তু মাকে মোবাইলে বলছি এবার আমার ছুটি নেই ঈদে আসা হবে না। বলছিলেন, ছুটি না থাকলে যাওয়া যায় না, ঝামেলা হয়।

এবার ঈদে পরিবার ছাড়া ঈদ উদযাপন করবে বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বরত ৩০  জন আনসার সদস্য। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুই ঈদ। এই দুই ঈদে প্রত্যেকেই চায় পরিবারের সাথে থাকতে। কিন্তু কাঁধে তাদের রয়েছে দায়িত্ব। এই দায়িত্বের দায়বদ্ধতা থেকেই ঈদের আনন্দ বিসর্জন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে রাখছে নিরাপদ। তাদের এই ত্যাগই মনে করিয়ে দেয়, মানুষ একে অপরের জন্য। কেউ একজন সুখ পেতে হলে অপর আরেকজনকে ত্যাগ করতেই হয়।

error: Content is protected !!

ইদের ছুটিতে বাড়ি যেতে পারেন না কুবির নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা

তারিখ : ১২:৪০:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ এপ্রিল ২০২৪

কুবি প্রতিনিধি।।
পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব সবাই যখন ঈদের খুশি ভাগাভাগিতে ব্যস্ত, পেশাগত কারণে দায়িত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে কিছু মানুষ থাকে উৎসব-আনন্দের ঊর্ধ্বে। ঈদের দিনেও কর্মস্থলে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হয় তাদের। চাইলেও ইদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ নেই । বলছিলাম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যদের কথা।

শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তারা পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে যখন সবাই ক্যাম্পাস ত্যাগ করে বাড়িতে অবস্থান করে তখনই স্বপ্নের ক্যাম্পাসটাকে আগলে রাখার জন্য বদ্ধপরিকর তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে ছয় হাজার মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব আনসার সদস্যদের । কারো কাছে মামা, কারো কাছে ভাই আবার কারো কাছে আঙ্কেল। সর্বক্ষণ দায়িত্ব পালন করে চলছেন তারা। ঈদে ক্যাম্পাস শূন্য হয়ে গেলেও তাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা । চেয়ে চেয়ে দেখছেন আর পরিচিতদের হাসিমুখে বিদায় দিচ্ছেন। এ যেন একা রেখে চলে যাওয়া বিচ্ছেদ। পরিবারের বাইরে নিজ কর্মস্থলে এভাবেই ঈদ কাটাবেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালে মোট আনসার সদস্য আছে ৫০ জন। এরমধ্যে ইদের ছুটি পেয়েছেন ২০ জন। বাকিরা দিবে ক্যাম্পাস পাহারা। যারা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন তারা হয়তো পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারবে না কিন্তু সহকর্মীদের সাথেই কাটবে তাদের ঈদ। এ এক অন্যরকম ঈদ। এক ঈদে যারা বাড়ি ফিরবে অন্য ঈদে তারা ফিরতে পারবে না৷ একজন রোজার ঈদে ছুটি পেলে কোরবানির ঈদে ছুটি পাবেন না। এনিয়ে তাদের আফসোস হলেও অন্য সহকর্মীরা যে পরিবারের সাথে ঈদ পালন করতে পারছে এতেই তাদের আনন্দ।

ঈদে বাড়ি ফেরা নিয়ে কথা হলো তাদের সঙ্গে। এক আনসার সদস্য বলেন, পরিবারের সাথে ঈদ করতে সবারই মন চায় কিন্তু বাস্তবতা তো আলাদা। আমাদের দায়িত্ব তো পালন করতে হবে। আমার ছোট ছোট দু’টো সন্তান রয়েছে তাদের জন্য খারাপ লাগে। সব মিলিয়ে আমাদের কাজের মধ্যই আনন্দ খুঁজে নিয়েছি, এই ক্যাম্পাসই এখন আমাদের দ্বিতীয় পরিবার হয়ে উঠেছে। আপনাদের জন্য এই ভার্সিটি দেখাশুনা করে রাখতে পারছি এটাই প্রাপ্তি।

আরেক নিরাপত্তা কর্মী বলেন , এইখানে এটা আমার প্রথম ঈদ, মন চাই বাড়িতে গিয়ে মায়ের সাথে ঈদ করতে। মায় কইছিলো বাড়ি যাবার জন্য কিন্তু মাকে মোবাইলে বলছি এবার আমার ছুটি নেই ঈদে আসা হবে না। বলছিলেন, ছুটি না থাকলে যাওয়া যায় না, ঝামেলা হয়।

এবার ঈদে পরিবার ছাড়া ঈদ উদযাপন করবে বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বরত ৩০  জন আনসার সদস্য। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুই ঈদ। এই দুই ঈদে প্রত্যেকেই চায় পরিবারের সাথে থাকতে। কিন্তু কাঁধে তাদের রয়েছে দায়িত্ব। এই দায়িত্বের দায়বদ্ধতা থেকেই ঈদের আনন্দ বিসর্জন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে রাখছে নিরাপদ। তাদের এই ত্যাগই মনে করিয়ে দেয়, মানুষ একে অপরের জন্য। কেউ একজন সুখ পেতে হলে অপর আরেকজনকে ত্যাগ করতেই হয়।