কুমিল্লায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে পিটিয়ে হত্যা, আওয়ামী লীগ নেতার ছেলেসহ গ্রেপ্তার ৩

স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়াকে (৫৫) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তাজু মেম্বারের ছেলে আফসার (২৮), কাশিপুর গ্রামের মফিজের ছেলে ফারুক (৪২) ও গোত্রশাল গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে হেলাল উদ্দিন (২৪)। রবিবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিহতের বড় ভাই আব্দুর রহিম বাদী হয়ে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়াকে প্রধান আসামি করে ৩৯ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক নির্বাহী সদস্য কামাল হোসেন মজুমদার, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মহিন প্রকাশ, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম, সদস্যসচিব কামরুজ্জামান টিটু, যুগ্ম আহ্বায়ক মোদাচ্ছের হোসেন লিটন, আবদুল মমিন, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক নুরুল আফসার সজল, সদস্য সচিব কামাল হোসেন, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, দক্ষিণ জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ, উপজেলা ছাত্রদলের নেতা আলী হোসেন টিপু, কিনারা গ্রামের আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, বাঙ্গড্ডা গ্রামের গিয়াস উদ্দিন, শাহ নেওয়াজ, উপজেলা যুবদলের সদস্য ফারুক হোসেন কুতুব, ফারুক মোল্লা, নাঙ্গলকোট উপজেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুফ কমিশনার, বাঙ্গড্ডা গ্রামের সোহাগ, জহির, বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আব্দুল মতিন, সাবেক আহ্বায়ক শাহ আলম, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য মিজানুর রহমান, পৌর ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ পারভেজ, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ, হরিপুর গ্রামের পারভেজ, জামাল হোসেন, উপজেলা যুবদলের সদস্য রফিকুল ইসলাম খোকন, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ ডলি, বেতাগাঁও গ্রামের ইকবাল, পৌর যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী সেলিম, বেতাগাঁও গ্রামের আলমগীর, মাধবপুর গ্রামের আনোয়ার মাহমুদ মিলন, শালুকিয়া গ্রামের রাসেল মাহমুদ, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক আবদুর রহিম সুজন, উপজেলা যুবদল সদস্য মোবারক হোসেন সহ অজ্ঞাত আরো ৪০ জন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকাল ৩টায় বাঙ্গড্ডা বাদশা মিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া।

একই সময়ে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলার রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নে একটি অনুষ্ঠান শেষে পেরিয়া ইউনিয়নে আরেক অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। আব্দুল গফুরের সমর্থকরা গাড়িবহর নিয়ে বাঙ্গড্ডা বাজার অতিক্রম করছিলেন।

এ সময় মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া সমর্থিত নেতাকর্মীরা পেছন থেকে হামলা চালান বলে অভিযোগ করেন গফুর ভূঁইয়ার অনুসারীরা। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।

সেই সঙ্গে পাঁচ জন আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়াকে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সেলিম ভূঁইয়া উপজেলার হেসাখাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি একই ইউনিয়নের দায়েমছাতী গ্রামের খিলপাড়ার আবদুল খালেকের ছেলে।

নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের পর শনিবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করা হয়। রবিবার দুপুর ২টার দিকে নিহতের বড় ভাই আব্দুর রহিম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করলে আটকদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮

You cannot copy content of this page