০৩:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লায় বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে আহত এক নারীসহ ২ জনের মৃত্যু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে মব তৈরি করে ৩ সাংবাদিক হেনস্তা ব্রাহ্মণপাড়ায় স্কুল পরিদর্শনে ইউএনও, ক্লাস নিলেন শিক্ষার্থীদের কুমিল্লায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন আহত; ২ জনের হাত-পা বিচ্ছিন্ন কুমিল্লায় সেনা অভিযানে দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী আটক, বিপুল অস্ত্র-সামগ্রী জব্দ জাতীয়তাবাদী মহিলাদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে কুমিল্লা উত্তর জেলা মহিলা দলের বর্ণাঢ্য র‍্যালী মুরাদনগরে অগ্নিকাণ্ডে দোকান পুড়ে ছাই, ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতি কুমিল্লায় বাল্যবিয়ের খবর বিয়ে বাড়ীতে অভিযান; বরের বাবাকে জরিমানা কুমিল্লা শাসনগাছা এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে পথচারীর মৃত্যু কুমিল্লায় বালুর স্তূপ থেকে যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

কুমিল্লায় ছেলের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে বাবার মৃত্যু

  • তারিখ : ০৫:১১:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
  • 28

নেকবর হোসেন।।
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ছেলেকে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার অবস্থায় দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এক বৃদ্ধ বাবা। রবিবার (১৩ জুলাই) রাতে উপজেলার গৌরীপুর এলাকায় ঘটে মর্মান্তিক এই ঘটনা।
মারা যাওয়া বৃদ্ধের নাম সুরুজ মিয়া (৭০)। তিনি দাউদকান্দি উপজেলার মারুকা ইউনিয়নের চক্রতলা গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত সুরুজ মিয়ার ছেলে পাবেল (২৫) রবিবার দুপুরে গৌরীপুর বাজারের ঈদগাহ মাঠে কবুতর কিনতে যান। সেখানে প্রথমে দুজন ব্যক্তি তাকে ঘিরে ধরে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করে। পরে আরও ৫–৬ জন এসে তাকে জোরপূর্বক একটি বাড়িতে নিয়ে যায় এবং চোখ বেঁধে আটকে রাখে।

সেখান থেকে পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না দিলে পাবেলকে মারধর করা হয় বর্বরভাবে। অবশেষে পরিবার বিকাশের মাধ্যমে অপহরণকারীদের দাবি করা টাকা পরিশোধ করে এবং রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাবেলকে মুক্তি দেওয়া হয়।

ছেলেকে নির্যাতনের চিহ্নসহ বাড়িতে ফিরে আসতে দেখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বাবা সুরুজ মিয়া। গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখে তিনি তাৎক্ষণিক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ১০টায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পাবেলের ফুফাতো ভাই কাইয়ুম হাসান বলেন, “পাবেল কবুতর কিনতে গিয়েছিল। সেখানেই কিছু যুবক এসে মারধর করে, পরে চোখ বেঁধে বাসায় নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালায়। মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার পর ছাড়া পায়। বাড়ি ফিরলে মামা ছেলের অবস্থা দেখে সঙ্গে সঙ্গেই স্ট্রোক করেন। পরে মারা যান।”

দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী জানান, “বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, বাজার এলাকায় সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়ে গেছে। প্রশাসনের নিকট দাবিও উঠেছে—অপহরণ ও নির্যাতনকারী চক্রকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার।

error: Content is protected !!

কুমিল্লায় ছেলের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে বাবার মৃত্যু

তারিখ : ০৫:১১:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

নেকবর হোসেন।।
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ছেলেকে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার অবস্থায় দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এক বৃদ্ধ বাবা। রবিবার (১৩ জুলাই) রাতে উপজেলার গৌরীপুর এলাকায় ঘটে মর্মান্তিক এই ঘটনা।
মারা যাওয়া বৃদ্ধের নাম সুরুজ মিয়া (৭০)। তিনি দাউদকান্দি উপজেলার মারুকা ইউনিয়নের চক্রতলা গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত সুরুজ মিয়ার ছেলে পাবেল (২৫) রবিবার দুপুরে গৌরীপুর বাজারের ঈদগাহ মাঠে কবুতর কিনতে যান। সেখানে প্রথমে দুজন ব্যক্তি তাকে ঘিরে ধরে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করে। পরে আরও ৫–৬ জন এসে তাকে জোরপূর্বক একটি বাড়িতে নিয়ে যায় এবং চোখ বেঁধে আটকে রাখে।

সেখান থেকে পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না দিলে পাবেলকে মারধর করা হয় বর্বরভাবে। অবশেষে পরিবার বিকাশের মাধ্যমে অপহরণকারীদের দাবি করা টাকা পরিশোধ করে এবং রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাবেলকে মুক্তি দেওয়া হয়।

ছেলেকে নির্যাতনের চিহ্নসহ বাড়িতে ফিরে আসতে দেখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বাবা সুরুজ মিয়া। গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখে তিনি তাৎক্ষণিক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ১০টায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পাবেলের ফুফাতো ভাই কাইয়ুম হাসান বলেন, “পাবেল কবুতর কিনতে গিয়েছিল। সেখানেই কিছু যুবক এসে মারধর করে, পরে চোখ বেঁধে বাসায় নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালায়। মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার পর ছাড়া পায়। বাড়ি ফিরলে মামা ছেলের অবস্থা দেখে সঙ্গে সঙ্গেই স্ট্রোক করেন। পরে মারা যান।”

দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী জানান, “বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, বাজার এলাকায় সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়ে গেছে। প্রশাসনের নিকট দাবিও উঠেছে—অপহরণ ও নির্যাতনকারী চক্রকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার।