
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এড. মো.আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। যে জাতি শিশুদের কথা ভাবে না, সে জাতি খুব বেশি উন্নত হতে পারে না। বিশ্বব্যাপী শিশুকে মায়ের দুধ পান করানোর হার অনেক কম। আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের ফলে আমরাও বাজার থেকে বিভিন্ন কৃত্রিমভাবে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য শিশুকে খাওয়াচ্ছি। দেশীয় পু্িষ্টসমৃদ্ধ ফল না খাওয়ায়ে ফরমালিনযুক্ত বিদেশী ফল খাওয়াচ্ছি।
এতে আমাদের বাচ্ছারা ফার্মের মুরগীর মতোই গড়ে উঠছে। মানসিক, সামাজিক বিকাশ ঘটছে না। শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারাচ্ছে। শিশুর দেহের বৃদ্ধি ও মেধা বিকাশের সব উপাদান মায়ের দুধে বিদ্যমান। শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মায়ের দুধের কোনও বিকল্প নাই। এ বিষয়ে মায়েদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে মাঠকর্মীদের ভূমিকা অত্যধিক।’ গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ আয়োজিত মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘মাতৃদুগ্ধ দান সুরক্ষায়: সকলের সম্মিলিত দায়’ এ প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের জাতীয় পুষ্টি সেবার মাধ্যমে দেশজুড়ে সপ্তাহব্যাপী মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ পালিত হয়েছে। গতকাল কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতাল ক্যাম্পাসে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যলয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শামসাদ রব্বানী খান। রিসোর্স পারসন হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চৌধুরী মোরশেদ আলম, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সায়েফ উদ্দিন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা মাহফুজা আহমদ, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম প্রমুখ। সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবাসিক চিকিৎসক ডা.তানিয়া বিনতে হোসাইন। সঞ্চালনা করেন অপর আবাসিক চিকিৎসক ডা.তানজিয়া ইসলাম।
সভায় সমাপনী বক্তব্যে ডাঃ শামসাদ রব্বানী খান বলেন, ‘ কৌটাজাত দুধ খেলে শিশুর মৃত্যুঝুঁকি, ডায়রিয়া ১০ গুণ ও নিউমোনিয়া প্রায় ১৫ গুণ বৃদ্ধি পায়। জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ পান করালে মৃত্যুর হার শতকরা ৩১ ভাগ কমে যায়। তাই শিশুর মৃত্যুহার রোধে এবং শারীরিক ও মানসিক বিকাশে জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যেই মায়ের দুধ পান, পূর্ণ ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ পান এবং পূর্ণ ৬ মাস বয়সের পর থেকে ২ বছর বয়স পর্যন্ত ঘরে তৈরি বাড়তি খাবারের পাশাপাশি মায়ের দুধ চালিয়ে যেতে হবে। ’
উল্লেখ্য,মায়েদের বুকের দুধ খাওয়ানোর প্রতি উৎসাহ জোগাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর ১-৭ আগস্ট বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ পালিত হয়ে আসছে। এ বছর করোনা সংকটের কারণে এলাকাভেদে সূচিতে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে।