০৫:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লার হোমনায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলিসহ যুবক আটক কুমিল্লায় জলাতংক বিস্তার রোধে বিড়াল-কুকুরের বিনামূল্যে চেকাপ ও ভেক্সিন ক্যাম্প চৌদ্দগ্রামের কুলিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী; স্মৃতির প্রাঙ্গনে প্রীতির বন্ধনে মিলনমেলা কুমিল্লায় ঢাকাগামী বিএনপির নেতাকর্মীদের বাস দুর্ঘটনা, আহত ৩২ কুমিল্লা-৬ আসনে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করলেন জামায়াতের প্রার্থী কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বুড়িচংয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সভাপতি সুজন গ্রেপ্তার চৌদ্দগ্রামে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে মাটি ব্যবসায়ীকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা কুমিল্লার হোমনায় পানিতে পড়ে ২ বছরের শিশুর মৃত্যু কুমিল্লা-৬ আসনে হাজী ইয়াছিনের পক্ষে মনোনয়নপত্র ক্রয় সেই আরশাদুলের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিতে এগিয়ে এলেন ব্রাহ্মণপাড়া’র ইউএনও

কুমিল্লায় কনের বাড়িতে বরকে আটকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা

  • তারিখ : ০৯:২০:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫
  • 3414

স্টাফ রিপোর্টার।।

কুমিল্লার লালমাইয়ে বিয়েবাড়িতে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। সাজসজ্জা শেষ, হলুদের অনুষ্ঠানও সম্পন্ন, কনের গেটে বরকে ফুল-মিষ্টি দিয়ে বরণ—ঠিক তখনই ছড়ালো বোমা ফাটানো অভিযোগ। স্থানীয় এক ব্যক্তি দাবি করেন, বর আগে থেকেই বিবাহিত।

এ অভিযোগের পরপরই কনের পরিবার বর ও তার স্বজনদের পাশের একটি ঘরে আটক করে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বরপক্ষের কাছ থেকে নগদ টাকা, চেক, সোনা ও মোবাইলফোন রেখে মোট ১৫ লাখ টাকার জরিমানা আদায় করা হয়।

ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে লালমাই উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের ছোট বিজরা গ্রামে। পরদিন শনিবার রাত থেকেই ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের ছোট হাড়গিলা গ্রামের কাতারপ্রবাসী শেখ রাসেল (২৬) ও ছোট বিজরা গ্রামের মাদ্রাসা ছাত্রী ফারহানা আক্তার মুন্নীর (১৫) বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। সব আয়োজনও শেষ হয়েছিল।

কনের দাদা আলী আক্কাস বলেন, “আমার নাতিন এ বছর দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে। প্রবাসী ও সচ্ছল ছেলে দেখে বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু গেটে আসার পর জানতে পারি বর আগে বিয়ে করেছে। তখন তাকে ঘরে আটকে স্থানীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।”

তিনি আরও জানান, জরিমানার টাকা, চেক, স্ট্যাম্প ও সোনা স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাফেজ আনোয়ারের কাছে আছে। তবে এর কিছুই কনের পরিবার পায়নি।

বর শেখ রাসেল অভিযোগ করে বলেন, “আমি কাতারে দীর্ঘ ৮ বছর ধরে ব্যবসা করছি। আগেও একবার প্রতারণার শিকার হয়েছিলাম, যার সমঝোতা আইনজীবীর মাধ্যমে হয়েছে। এবারও আমাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসিয়ে কনের বাড়িতে আটকে রেখে চাঁদাবাজির মতো টাকা আদায় করা হয়েছে।”

রাসেলের ছোট ভাই মাহদী হাসান হৃদয় জানান, নগদ ২ লাখ টাকা দেওয়ার পর তাদের কাছ থেকে ৮ লাখ ও ৫ লাখ টাকার দুটি চেক নেওয়া হয়। এ ছাড়া কনের জন্য কেনা প্রায় ৪ ভরি সোনা, ট্রলি ভর্তি পোশাক-সাজসজ্জা, একটি আইফোন ও একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনও রেখে দেওয়া হয়। এমনকি ৫০ টাকার মূল্যের পাঁচটি খালি স্ট্যাম্পেও তার স্বাক্ষর নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালিশ বৈঠকের সভাপতিত্বকারী বাকই উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাফেজ আনোয়ারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে স্থানীয়রা জানায়, বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। পরে বর ও তার স্বজনদের নিরাপদে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।”

error: Content is protected !!

কুমিল্লায় কনের বাড়িতে বরকে আটকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা

তারিখ : ০৯:২০:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার।।

কুমিল্লার লালমাইয়ে বিয়েবাড়িতে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। সাজসজ্জা শেষ, হলুদের অনুষ্ঠানও সম্পন্ন, কনের গেটে বরকে ফুল-মিষ্টি দিয়ে বরণ—ঠিক তখনই ছড়ালো বোমা ফাটানো অভিযোগ। স্থানীয় এক ব্যক্তি দাবি করেন, বর আগে থেকেই বিবাহিত।

এ অভিযোগের পরপরই কনের পরিবার বর ও তার স্বজনদের পাশের একটি ঘরে আটক করে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বরপক্ষের কাছ থেকে নগদ টাকা, চেক, সোনা ও মোবাইলফোন রেখে মোট ১৫ লাখ টাকার জরিমানা আদায় করা হয়।

ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে লালমাই উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের ছোট বিজরা গ্রামে। পরদিন শনিবার রাত থেকেই ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের ছোট হাড়গিলা গ্রামের কাতারপ্রবাসী শেখ রাসেল (২৬) ও ছোট বিজরা গ্রামের মাদ্রাসা ছাত্রী ফারহানা আক্তার মুন্নীর (১৫) বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। সব আয়োজনও শেষ হয়েছিল।

কনের দাদা আলী আক্কাস বলেন, “আমার নাতিন এ বছর দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে। প্রবাসী ও সচ্ছল ছেলে দেখে বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু গেটে আসার পর জানতে পারি বর আগে বিয়ে করেছে। তখন তাকে ঘরে আটকে স্থানীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।”

তিনি আরও জানান, জরিমানার টাকা, চেক, স্ট্যাম্প ও সোনা স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাফেজ আনোয়ারের কাছে আছে। তবে এর কিছুই কনের পরিবার পায়নি।

বর শেখ রাসেল অভিযোগ করে বলেন, “আমি কাতারে দীর্ঘ ৮ বছর ধরে ব্যবসা করছি। আগেও একবার প্রতারণার শিকার হয়েছিলাম, যার সমঝোতা আইনজীবীর মাধ্যমে হয়েছে। এবারও আমাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসিয়ে কনের বাড়িতে আটকে রেখে চাঁদাবাজির মতো টাকা আদায় করা হয়েছে।”

রাসেলের ছোট ভাই মাহদী হাসান হৃদয় জানান, নগদ ২ লাখ টাকা দেওয়ার পর তাদের কাছ থেকে ৮ লাখ ও ৫ লাখ টাকার দুটি চেক নেওয়া হয়। এ ছাড়া কনের জন্য কেনা প্রায় ৪ ভরি সোনা, ট্রলি ভর্তি পোশাক-সাজসজ্জা, একটি আইফোন ও একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনও রেখে দেওয়া হয়। এমনকি ৫০ টাকার মূল্যের পাঁচটি খালি স্ট্যাম্পেও তার স্বাক্ষর নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালিশ বৈঠকের সভাপতিত্বকারী বাকই উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাফেজ আনোয়ারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে স্থানীয়রা জানায়, বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। পরে বর ও তার স্বজনদের নিরাপদে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।”