
আরাফাত হোসেন,বরুড়া প্রতিনিধিঃ
কলেজ মাঠে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা।কোথাও কোমরপানি, কোথাও হাঁটুপানি। ঘাস ও কচুরিপানা জমে আছে। সড়কের মধ্যে শেওলা জমেছে। কালো পানিতে জলজ কীটপতঙ্গ কিলবিল করছে। পানি থেকে আসছে পচা গন্ধ। পুরো মাঠ ও কলেজের ভেতরের সড়কজুড়ে পানি থইথই করছে। তা মাড়িয়ে শ্রেণিকক্ষে যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতায় এ অবস্থা কুমিল্লার বরুড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের। করোনা পরিস্থিতিতে এত দিন বন্ধ ছিল। ১২ সেপ্টেম্বর কলেজে পাঠদান শুরুর পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সবাই জলাবদ্ধতার কারণে ভোগান্তিতে পড়ছেন।
১৯৭২ সালের ১ জুলাই ৬ দশমিক ৪১ একর জায়গা নিয়ে বরুড়া শহীদ স্মৃতি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৫ সালের ১ জুলাই কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। এরপর কলেজের নাম হয় বরুড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ। বর্তমানে এখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ২ হাজার ৬৬৪। তাঁদের পাঠদানের জন্য ২১ জন শিক্ষক রয়েছেন। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠালগ্নে কলেজের দক্ষিণ পাশে টিনশেডের একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। সেই ভবনের এখন জরাজীর্ণ অবস্থা।
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় টিনশেডের ভবনটির কোনো কোনো অংশে টিনের চাল উড়ে গেছে। কয়েকটি কক্ষ পরিত্যক্ত। জানালা ভাঙাচোরা। দরজাও ভাঙা। বিভিন্ন কক্ষে টেবিলে ধুলাবালু পড়ে আছে।
টিনশেডের ভবনের পাশাপাশি দোতলা দুটি বিজ্ঞান ও বাণিজ্য ভবন রয়েছে। চারতলাবিশিষ্ট একটি ছাত্রাবাস থাকলেও সেটির অবস্থা খুবই নাজুক। সামান্য বৃষ্টিতেই কলেজের মাঠে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। কারণ, পানি নামার সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
কলেজের অন্তত তিনজন শিক্ষক বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির চারপাশের সড়ক ও বাড়িঘর উঁচু করে নির্মিত হয়েছে। ফলে আবাসিক এলাকা ও সড়কের পানি এখন কলেজের ভেতরে চলে আসে। এই ভোগান্তি চলছে এক দশক ধরে। পানি জমে থাকায় টিনশেডের ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
কলেজের অধ্যক্ষ শিবতোষ নাথ বলেন, গত ৯ জানুয়ারি কলেজের ছয়তলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে চাইছে না। ফলে ভবনের কাজ শুরুই করা যায়নি। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা এগিয়ে এসে প্রকল্প নিলে জলাবদ্ধতা দূর হবে বলে তিনি মনে করেন।
বরুড়া পৌরসভার মেয়র বক্তার হোসেন বলেন, জলাবদ্ধতা ও অবকাঠামোর স্বল্পতা এই কলেজের প্রধান সমস্যা। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হবে।বরুড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস আধুনিকায়ন করতে পৌরসভা থেকে প্রকল্প হাতে নেয়া হবে।