কুবি প্রতিনিধি।।
চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লায় ফেরার পথে বাসের হেলপারের হেনস্তার শিকার হয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ১৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মামুনুর রশীদ রাজীব। শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে মিরসরাই ও বারইয়ারহাটের মাঝামাঝি স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর রাজীবের সহপাঠীরা বাসটি জব্দ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বাস মালিক সমিতির উপস্থিতিতে লিখিত মুচলেকার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।
ভুক্তভোগী রাজীব বলেন, “চট্টগ্রামের অলংকার কাউন্টার থেকে ৩০০ টাকায় ঢাকাগামী ‘তিশা প্লাটিনাম’ বাসের টিকিট কাটি। কাউন্টারের কর্মীরা বলেন, বাসটি কোটবাড়ি বিশ্বরোডে আমাকে নামিয়ে দেবে। কিন্তু তারা ভুলভাবে আমাকে ‘কুমিল্লা ট্রাভেলস এক্সক্লুসিভ তিশা’ নামের একটি লোকাল বাসে তুলে দেন।”
বাস ছাড়ার কিছুক্ষণ পরই তিনি বুঝতে পারেন, গাড়িটি পথে পথে যাত্রী উঠানামা করছে। এতে আপত্তি জানালে হেলপার বলেন, ‘আমি কি খালি বাস নিয়ে যাবো?’ রাজীব জানান, লোকাল ভাড়া ২০০ টাকা হওয়ায় তিনি ১০০ টাকা ফেরত দাবি করেন। এতে হেলপার ও ড্রাইভারসহ কয়েকজনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়।
রাজীব বলেন, “আমি বলি আমি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তখন হেলপার ধাক্কা দিয়ে বলে, ‘তুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তো কী হয়েছে?’” এ সময় অন্যান্য যাত্রীরা প্রতিবাদ করেন।
এরপর রাজীব ফোনে বন্ধুদের ঘটনাটি জানান। তারা পদুয়ারবাজার বিশ্বরোডে এসে বাসটি আটকানোর প্রস্তুতি নেন। কিন্তু ড্রাইভার মিয়াবাজারে গিয়ে জানায়, বাসটি নষ্ট হয়ে গেছে। পরে যাত্রীদের আংশিক ভাড়া ফেরত দেওয়া হয়। রাজীবকে প্রথমে ৫০ টাকা, পরে ১০০ টাকা ফেরত দিতে চাইলেও তিনি তা নেননি।
মিয়াবাজারে কিছু স্থানীয় লোক ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করেন। পরে রাজীবের সহপাঠীরা সেখানে গিয়ে বাসটি জব্দ করেন। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় সাদা গেঞ্জি পরিহিত এক ব্যক্তি শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠি নিয়ে হামলার চেষ্টা করেন।
সন্ধ্যা ছয়টার দিকে জব্দ করা বাসটি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আনা হয়। কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট মো. হারুন, বাস মালিক সমিতির প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে ঘটনাটি মীমাংসা করেন। রাত নয়টার দিকে অভিযুক্ত পক্ষের কাছ থেকে লিখিত মুচলেকা নেওয়ার পর বাসটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
মুচলেকায় বলা হয়, ভবিষ্যতে যাত্রীদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করা, শিক্ষার্থীদের প্রতি সম্মান দেখানো, নির্ধারিত টিকিট কাউন্টার ব্যবহার করা এবং অভিযোগ জানানোর জন্য বাসে দৃশ্যমান স্থানে মোবাইল নম্বর ঝুলিয়ে রাখা হবে।
বাসচালক মোহাম্মদ রানা ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্ত হেলপার তাঁর ছোট ভাই। বাস মালিক সমিতির এক প্রতিনিধি বলেন, “বাসটি লোকাল সার্ভিসের। ছাত্রটি দালালের মাধ্যমে টিকিট নিয়েছে, দালাল অতিরিক্ত টাকা নিয়েছে। সেই টাকা বাসচালকের কাছে যায়নি।”









