এন এ মুরাদ, মুরাদনগর।।
যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে প্রবাসী এক যুবকের বিরুদ্ধে। স্বামীর জন্য ৬ বছরের ছেলেকে বুকে নিয়ে বাজারে বসে কাঁদছেন ওই নারী। এমন একটি ভিডিও ঘুরছে সোস্যাল মিডিয়ায়। মুরাদনগর উপজেলার আকবপুর ইউনিয়নের বলিঘর গ্রামে এঘটনা ঘটে।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগী নারীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৪ নভেম্বর বাঙ্গরা বাজার থানাধীন পশ্চিম জাঙ্গাল গ্রামের ধন মিয়ার মেয়ে লাকী আক্তারকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন একই থানার বলিঘর গ্রামের মৃত ফরিদ মিয়ার ছেলে কামরুল হাছান (৩০)। তাঁদের একটি পুত্র সন্তান আছে। বিয়ের পর রাজমিস্ত্রি কাজ করত কামরুল। সংসারের অভাব শেষ হয়না তাই বিদেশে যেতে শ্বশুর বাড়িতে টাকা চায়। মেয়ের সুখের জন্য জামাইকে বিদেশে পাঠাতে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেয় শাশুড়ি। শ্বশুড় বাড়ির যৌতুকের টাকায় ভর করে বিদেশে পাড়ি দেন কামরুল ।
৫ বছর পর জুন মাসে দেশে আসেন এবং মালেশিয়াতে ব্যবসা করার সুযোগ আছে বলে আরো ৫ লাখ টাকা আনার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। শ্বশুর বাড়ি থেকে টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় স্বামী ও শাশুড়ি মিলে তাকে নির্মমভাবে মেরে ঘর থেকে বের করে দেন। পরে আদালতের শরণাপন্ন হয়ে যৌতুকের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন লাকী।
গাজীরহাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমন বলেন, “মেয়েটি আমার গ্রামের। জামাই বিদেশে যাওয়ার সময় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা গাজীর হাট বাজারে আমার দোকানে বসে দিছে। বলিঘর গ্রামের সাবেক মেম্বার রফিকুল ইসলাম বলেন, যৌতুকের টাকার অযুহাতে মেয়েটিকে নির্যাতন করে বের করে দিছে। সে এখন এলাকায় নাই। শুনতেছি বিয়ে করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
ভুক্তভোগী নারী কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, স্বামীকে একবার সাড়ে ৩ লাখ এনে দিছি। আবার ৫ লাখ টাকা দিতে চাপ সৃষ্টি করছে। বিদেশ থেকে বলত “তুই ৫লাখ টাকা না দিলে দেশে এসে তোর চেয়ে সুন্দর মেয়েকে বিয়ে করে ৫ লাখ টাকা যৌতুক নিব”। তুর মতো কাইল্লা লইয়া সংসার করতাম না। জুন মাসে দেশে আসছে। আসার পর আমাকে মেরে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে আরেক বিয়ে করছে। তিনি আরো বলেন – চাচা শ্বশুরের সাথে শাশুড়ির অনৈতিক সম্পর্কের ব্যাপারটি দেখার পর থেকেই আমি শাশুড়ির গলার কাটা।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে কামরুলের মোঠো ফোন ০১৩২৫-১৯২৭৩০ বহুবার চেষ্টা করা হয়েছে। তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
মুরাদনগর উপজেলার আকাবপুর ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আতাউর রহমান (রিপন) বলেন,প্রবাসী কামরুলের বউ লাকী আক্তার কান্না-কাটি করে আমাকে সব ঘটনা বলেছে। আমরা চাচ্ছিলাম সামাজিক ভাবে বসে মেয়েটিকে স্বামীর ঘরে দিতে কিন্তু ছেলেকে বাড়িতে পাচ্ছি না।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page