গোলাম কিবরিয়া, কুমিল্লা।।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, একই সাথে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অভিজ্ঞতা লংঘীত করে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে, অবৈধ এমপিও ভূক্তিতে সরকারের প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এক শিক্ষক। সম্প্রতি এসকল অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, কুমিল্লা।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাহেবাবাদ লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোস্তফা ছারোয়ার খান ২০০৯ সালের ১ ডিসেম্বর ওই বিদ্যালয়ে চাকুরীতে যোগদান করেন। যোগদান কালে তিনি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ১২ বছরের নির্ধারীত নিরবিছিন্ন অভিজ্ঞতার কথা গোপন করেন। তাছাড়া তিনি যোগদানের অনেক পর ছাড়পত্র ও অভিজ্ঞতা পত্র প্রদান করেন, পরবর্তীতে তদন্তে যা জাল বলে প্রমানিত হয়।
এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থাকাবস্থায় ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করে মোঃ মোস্তফা ছারোয়ার খান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আইন ও বিধিবিধান লঙ্ঘন করে সাহেবাবাদ লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়েরও প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত থেকে সরকারি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও বেতন-ভাতা হাতিয়ে নেন।
এদিকে ইউপি থাকাকালিন সময়ে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতামূলক কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে ইউপির গণ্যমান্য ৪৪ জন ব্যাক্তি স্বাক্ষর করে দুর্নীতি দমন কমিশন ও জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে ইউপি বাসিন্দাদের কাছ থেকে মনগড়াভাবে ট্যাক্স ধার্য করে আদায়পূর্বক প্রায় ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ, কাজ না করেই এলজিএসপি বরাদ্দের প্রায় ২৫ লাখ টাকা, টিআর, কাবিখা, কাবিটা বরাদ্দের ২৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ১% হারে প্রাপ্ত কমিশনের প্রায় ১৮ লাখ টাকা মেম্বারদের না জানিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব থেকে বিনা রেজুলেশনে উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
সাহেবাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ভিপি মোঃ মনির হোসেন চৌধুরী বলেন, দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। বিদ্যালয়ের দুর্ণীতি নিয়ে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের দেয়া তদন্ত রিপোর্ট ৬ মাস ধরে চাপা রাখা হয়। এতে প্রমানিত হয় ওই শিক্ষক দূর্নীতির সাথে জড়িত।
অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ মোস্তফা ছারোয়ার খান সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন- রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনেক তদন্ত হয়েছে। সর্বশেষ আরেকটি অভিযোগ উপজেলা চেয়ারম্যান তদন্ত না করেই আমার বিরুদ্ধে শিক্ষা বোর্ডে জমা দিয়েছে। বোর্ড থেকে তার কাছে চিঠি দিলেও তিনি হাতে পায়নি। ২য় বার চিঠি দেয়ার পর তিনি সমস্ত কাগজপত্র জমা প্রদান করেছেন।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page