০১:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
শিক্ষক সিন্ডিকেটের অপতৎপরতায় ফের অস্থিরতায় কুমিল্লা মডার্ণ হাই স্কুল তুরস্কের দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কুবির শিক্ষক–শিক্ষার্থী বিনিময় চুক্তি, নেই টিউশন ফি বেগম জিয়ার আরোগ্য কামনায় হাজী ইয়াছিনের ধারাবাহিক কুরআন খতম ও দোয়া চৌদ্দগ্রামে চিওড়া ইউনিয়ন বিএনপির নির্বাচনী সমন্বয় সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় কৃতী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও সংবর্ধনা প্রদান জীবনের বাকি সময়টা কুমিল্লা-৬ আসনের নেতাকর্মীদের সঙ্গেই থাকতে চাই -হাজী ইয়াছিন বুড়িচংয়ে যৌতুকের দাবিতে প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ; আটক ২ কুবির দত্ত হলে প্রথমবারের মতো আন্তঃহল বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন সংবাদ প্রকাশে নির্ভীক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির এক যুগ শিশুদের নিয়ে কুবি রোটারেক্ট ক্লাবের ‘পুষ্পায়ন’ কর্মসূচি

বরুড়ায় পোলট্রি খামারের মুরগী মেরে ফেলার অভিযোগ করায় বাড়ির চলাচলের রাস্তা বন্ধ

  • তারিখ : ০৫:৩২:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • 170

স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার শাকপুর ইউনিয়নের শাকপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে গড়ে তোলা পোলট্রি খামারের প্রায় ১২০০ মুরগী পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিষ প্রয়োগে মেরে ফেলার অভিযোগ করেছেন খামারের ক্ষতিগ্রস্ত মালিক আবদুল মতিন। সামাজিক সালিশ ও থানায় অভিযোগের পর ঘটনার ২৭দিন অতিবাহিত হলেও ক্ষতিগ্রস্ত আবদুল মতিন ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না। বরং প্রতিপক্ষ একই গ্রামের নিকাটাত্মীয় মো. নোমান ও তার মা বাড়ির চলাচলের রাস্তা টিনের সীমানা প্রাচীরে বন্ধ করে দিয়ে আবদুল মতিন ও তার পরিবারকে প্রায় ১০দিন ধরে অনেকটা গৃহবন্দি অবস্থায় রেখেছে।

ঘটনার বিষয়ে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ওই গ্রামের একই বাড়ির মো. নোমান গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে বিষ প্রয়োগে পোলট্রি খামারের প্রায় ১২০০ মুরগী মেরে ফেলে বলে অভিয়োগ করেন আবদুল মতিন। এঘটনার বিচার চেয়ে তিনি প্রথমে স্থানীয় মেম্বার আবদুস সাত্তার ও গণমান্য লোকদের বিষয়টি অবহিত করেন। স্থানীয় মেম্বার ও অন্যান্যরা প্রায় দুই সপ্তাহ চেষ্টা করেও বিষয়টির সমাধানে পৌঁছতে ব্যর্থ হওয়ায় আবদুল মতিনকে থানায় অভিযোগের পরামর্শ দেন।

পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি ঘটনার বিষয় উল্লেখ করে মো. নোমানের বিরুদ্ধে আবদুল মতিন বরুড়া থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের তদন্ত করেন সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) চন্দন। তিনি অভিযোগের তদন্ত করে বিষয়টি মিমাংসা করে দেওয়ার জন্য স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবদুস সাত্তারের ওপর দায়িত্ব দেন। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে দায়িত্ব পাওয়ার পরও মেম্বার আবদুস সাত্তার প্রতিপক্ষ মো. নোমানের অসহযোগিতার কারণে বিষয়টির শান্তিপূর্ণভাবে মিমাংসা করে দিতে পারেননি। পরে বিষয়টি মেম্বার আবদুস সাত্তার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই চন্দনকে জানান।

এরিমধ্যে প্রতিপক্ষ নোমান থানায় অভিযোগ করার অজুহাত তুলে আবদুল মতিনের বাড়ির মাঝখানে টিনের সীমানা দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এ অবস্থায় আদুল মতিনের পরিবার প্রায় ১০/১২দিন ধরে অনেকটা গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবদুস সাত্তার বলেন, ‘বিষয়টি আমরা প্রথম থেকেই সামাজিকভাবে সমাধান করার চেষ্টা করেছি।কিন্তু আয়ফল নেছা ও তার ছেলে নোমান সহনীয় হলেই কিন্তু দুই পক্ষের এই বিরোধ মিমাংসা হয়ে যেত। তবে আমরা সালিশে বসে আয়ফল নেছাকে বসত বাড়ির জায়গা সম্পত্তির বিষয়ে বলেছি, ওই বাড়ির একজন বিদেশে থাকে, সে দেশে আসলে পরিমাপ করে জায়গাজমি ভাগ করে নেবেন। কিন্তু সালিশের পরদিনই তিনি বাড়ির মাঝখানে টিনের বেড়া দিয়েছেন। এতে আবদুল মতিনের পরিবারের চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা সমাজের লোকজন মিমাংসা করতে না পারার বিষয়টি থানায় অবহিত করেছি।’

অভিযোগকারি ও ক্ষতিগ্রস্ত আবদুল মতিন জানান, ‘প্রতিপক্ষ নোমানের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছে। আর এরই জের ধরে সে আমার মুরগী খামারের প্রায় ১২০০ মুরগী বিষপ্রয়োগ করে মেরে ফেলেছে। এতে আমার প্রায় পৌনে তিন লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। আমি ন্যায় বিচারের জন্য প্রথমে থানায় না গিয়ে গ্রামের মেম্বার মাতব্বর, গণ্যমান্য লোকদের সরণাপন্ন হয়েছি। তাদের বিচার নোমান মানেনি। পরে আমি থানায় অভিযোগ করেছি। থানা থেকেও বিষয়টি সামাজিকভাবে মিমাংসা করার জন্য মেম্বারকে দায়িত্ব দেয়। এরপরও নোমান সমাজের কোন সিদ্ধান্ত বিচার মানতে নারাজ। সে হিংস্র প্রকৃতির। আমি কেন থানায় গেছি, পুলিশকে কেন জানালাম তাই বাড়ির চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। আজকে প্রায় ১২দিন পরিবার নিয়ে একরকম বন্দি জীবন কাটাচ্ছি। নোমানের মা আয়ফলের নেছা থেকে আমি এবং আমার ভাই রফিকুল ইসলাম দুই শতক জায়গা সাবকবলা দলিলমূলে ক্রয় করেছি। অথচ আমাদের ক্রয়কৃত জায়গা আমাদেরকে বুঝিয়ে না দিয়ে নোমান বাড়ির চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। সে আমাকে, আমার পরিবারের লোকদেরকে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমরা তার হিংস্রতায় নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি। আমি প্রশাসনের কাছে এসব ঘটনার ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।’

error: Content is protected !!

বরুড়ায় পোলট্রি খামারের মুরগী মেরে ফেলার অভিযোগ করায় বাড়ির চলাচলের রাস্তা বন্ধ

তারিখ : ০৫:৩২:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার শাকপুর ইউনিয়নের শাকপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে গড়ে তোলা পোলট্রি খামারের প্রায় ১২০০ মুরগী পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিষ প্রয়োগে মেরে ফেলার অভিযোগ করেছেন খামারের ক্ষতিগ্রস্ত মালিক আবদুল মতিন। সামাজিক সালিশ ও থানায় অভিযোগের পর ঘটনার ২৭দিন অতিবাহিত হলেও ক্ষতিগ্রস্ত আবদুল মতিন ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না। বরং প্রতিপক্ষ একই গ্রামের নিকাটাত্মীয় মো. নোমান ও তার মা বাড়ির চলাচলের রাস্তা টিনের সীমানা প্রাচীরে বন্ধ করে দিয়ে আবদুল মতিন ও তার পরিবারকে প্রায় ১০দিন ধরে অনেকটা গৃহবন্দি অবস্থায় রেখেছে।

ঘটনার বিষয়ে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ওই গ্রামের একই বাড়ির মো. নোমান গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে বিষ প্রয়োগে পোলট্রি খামারের প্রায় ১২০০ মুরগী মেরে ফেলে বলে অভিয়োগ করেন আবদুল মতিন। এঘটনার বিচার চেয়ে তিনি প্রথমে স্থানীয় মেম্বার আবদুস সাত্তার ও গণমান্য লোকদের বিষয়টি অবহিত করেন। স্থানীয় মেম্বার ও অন্যান্যরা প্রায় দুই সপ্তাহ চেষ্টা করেও বিষয়টির সমাধানে পৌঁছতে ব্যর্থ হওয়ায় আবদুল মতিনকে থানায় অভিযোগের পরামর্শ দেন।

পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি ঘটনার বিষয় উল্লেখ করে মো. নোমানের বিরুদ্ধে আবদুল মতিন বরুড়া থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের তদন্ত করেন সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) চন্দন। তিনি অভিযোগের তদন্ত করে বিষয়টি মিমাংসা করে দেওয়ার জন্য স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবদুস সাত্তারের ওপর দায়িত্ব দেন। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে দায়িত্ব পাওয়ার পরও মেম্বার আবদুস সাত্তার প্রতিপক্ষ মো. নোমানের অসহযোগিতার কারণে বিষয়টির শান্তিপূর্ণভাবে মিমাংসা করে দিতে পারেননি। পরে বিষয়টি মেম্বার আবদুস সাত্তার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই চন্দনকে জানান।

এরিমধ্যে প্রতিপক্ষ নোমান থানায় অভিযোগ করার অজুহাত তুলে আবদুল মতিনের বাড়ির মাঝখানে টিনের সীমানা দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এ অবস্থায় আদুল মতিনের পরিবার প্রায় ১০/১২দিন ধরে অনেকটা গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবদুস সাত্তার বলেন, ‘বিষয়টি আমরা প্রথম থেকেই সামাজিকভাবে সমাধান করার চেষ্টা করেছি।কিন্তু আয়ফল নেছা ও তার ছেলে নোমান সহনীয় হলেই কিন্তু দুই পক্ষের এই বিরোধ মিমাংসা হয়ে যেত। তবে আমরা সালিশে বসে আয়ফল নেছাকে বসত বাড়ির জায়গা সম্পত্তির বিষয়ে বলেছি, ওই বাড়ির একজন বিদেশে থাকে, সে দেশে আসলে পরিমাপ করে জায়গাজমি ভাগ করে নেবেন। কিন্তু সালিশের পরদিনই তিনি বাড়ির মাঝখানে টিনের বেড়া দিয়েছেন। এতে আবদুল মতিনের পরিবারের চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা সমাজের লোকজন মিমাংসা করতে না পারার বিষয়টি থানায় অবহিত করেছি।’

অভিযোগকারি ও ক্ষতিগ্রস্ত আবদুল মতিন জানান, ‘প্রতিপক্ষ নোমানের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছে। আর এরই জের ধরে সে আমার মুরগী খামারের প্রায় ১২০০ মুরগী বিষপ্রয়োগ করে মেরে ফেলেছে। এতে আমার প্রায় পৌনে তিন লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। আমি ন্যায় বিচারের জন্য প্রথমে থানায় না গিয়ে গ্রামের মেম্বার মাতব্বর, গণ্যমান্য লোকদের সরণাপন্ন হয়েছি। তাদের বিচার নোমান মানেনি। পরে আমি থানায় অভিযোগ করেছি। থানা থেকেও বিষয়টি সামাজিকভাবে মিমাংসা করার জন্য মেম্বারকে দায়িত্ব দেয়। এরপরও নোমান সমাজের কোন সিদ্ধান্ত বিচার মানতে নারাজ। সে হিংস্র প্রকৃতির। আমি কেন থানায় গেছি, পুলিশকে কেন জানালাম তাই বাড়ির চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। আজকে প্রায় ১২দিন পরিবার নিয়ে একরকম বন্দি জীবন কাটাচ্ছি। নোমানের মা আয়ফলের নেছা থেকে আমি এবং আমার ভাই রফিকুল ইসলাম দুই শতক জায়গা সাবকবলা দলিলমূলে ক্রয় করেছি। অথচ আমাদের ক্রয়কৃত জায়গা আমাদেরকে বুঝিয়ে না দিয়ে নোমান বাড়ির চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। সে আমাকে, আমার পরিবারের লোকদেরকে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমরা তার হিংস্রতায় নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি। আমি প্রশাসনের কাছে এসব ঘটনার ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।’