০৪:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লার মুরাদনগরে মামলায় আটক বিএনপির ১৩ নেতা-কর্মীর জামিন কুমিল্লার মুরাদনগরে অতিরিক্ত মদ পানে ২ জনের মৃত্যু কুমিল্লায় এনজিও’র ঋণের চাপ ও অভাবে মা-মেয়ের আত্মহত্যা চৌদ্দগ্রামে সাংবাদিক মামুনের রোগমুক্তি কামনায় দোয়া-মিলাদ বুড়িচংয়ে দখলকৃত খাল উদ্ধারে প্রশাসনের অভিযান কুমিল্লায় টিফিনের টাকায় গাছের চারা উপহার: ৫০০ শিক্ষার্থীর সবুজ শপথ কুমিল্লায় ৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ করে বিএনপির সম্মেলন চৌদ্দগ্রামে বিনাধান-১৯, ২১ ও ব্রি ধান-৪৮ এর মূল্যায়ন শীর্ষক মাঠ দিবস পালিত কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানকে ‘কলিজা খুলে নেওয়ার’ হুমকি, অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ৭৫ বোতল স্কাফ ও ১ লাখ ১০ হাজার টাকাসহ মাদক কারবারি আটক

কুমিল্লায় এনজিও’র ঋণের চাপ ও অভাবে মা-মেয়ের আত্মহত্যা

  • তারিখ : ০৬:৫০:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
  • 1624

জহিরুল হক বাবু
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে অভাব, এনজিও ঋণের চাপ ও দীর্ঘদিনের অসুস্থতার জেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন মা ও মেয়ে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে নিজ বাড়িতেই ঘটে এ মর্মান্তিক ঘটনা। নিহতরা হলেন—নমিতা রাণি পাল (৪২) ও তার মেয়ে তন্বী রাণি পাল (১৮)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃত জীবন চন্দ্র পালের স্ত্রী নমিতা রাণি পালের তিন মেয়ে ছিল। এর মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট মেয়ে তন্বী অবিবাহিত এবং পড়াশোনা করছিল। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন নমিতা রাণি, যিনি স্থানীয় দেবপুর স্পিনিং মিলে চাকরি করতেন।

তবে গত দুই মাস ধরে অসুস্থ থাকায় কাজে যেতে পারছিলেন না। এর ফলে পরিবারের আয় বন্ধ হয়ে যায় এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। পাশাপাশি, বিভিন্ন এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে তারা চরম মানসিক চাপে ছিলেন।

বুধবার সকালে মা ও মেয়ে দুজনেই বিষপান করেন। প্রতিবেশীরা দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল্লাহ প্রধান বলেন, “খবর পেয়ে বেলা আড়াইটায় ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করি।”

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক জানান, “প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে ঋণগ্রস্ত ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অভাব, ঋণ ও অসুস্থতার কারণেই মা-মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হবে।”

গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, নমিতা রাণি ও তন্বী রাণি ছিলেন শান্ত-ভদ্র স্বভাবের মানুষ। তবে আর্থিক সংকট, অসুস্থতা ও ঋণের চাপ ধীরে ধীরে তাদের মানসিকভাবে ভেঙে দেয়।

কুমিল্লায় এনজিও’র ঋণের চাপ ও অভাবে মা-মেয়ের আত্মহত্যা

তারিখ : ০৬:৫০:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

জহিরুল হক বাবু
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে অভাব, এনজিও ঋণের চাপ ও দীর্ঘদিনের অসুস্থতার জেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন মা ও মেয়ে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে নিজ বাড়িতেই ঘটে এ মর্মান্তিক ঘটনা। নিহতরা হলেন—নমিতা রাণি পাল (৪২) ও তার মেয়ে তন্বী রাণি পাল (১৮)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃত জীবন চন্দ্র পালের স্ত্রী নমিতা রাণি পালের তিন মেয়ে ছিল। এর মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট মেয়ে তন্বী অবিবাহিত এবং পড়াশোনা করছিল। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন নমিতা রাণি, যিনি স্থানীয় দেবপুর স্পিনিং মিলে চাকরি করতেন।

তবে গত দুই মাস ধরে অসুস্থ থাকায় কাজে যেতে পারছিলেন না। এর ফলে পরিবারের আয় বন্ধ হয়ে যায় এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। পাশাপাশি, বিভিন্ন এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে তারা চরম মানসিক চাপে ছিলেন।

বুধবার সকালে মা ও মেয়ে দুজনেই বিষপান করেন। প্রতিবেশীরা দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল্লাহ প্রধান বলেন, “খবর পেয়ে বেলা আড়াইটায় ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করি।”

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক জানান, “প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে ঋণগ্রস্ত ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অভাব, ঋণ ও অসুস্থতার কারণেই মা-মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হবে।”

গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, নমিতা রাণি ও তন্বী রাণি ছিলেন শান্ত-ভদ্র স্বভাবের মানুষ। তবে আর্থিক সংকট, অসুস্থতা ও ঋণের চাপ ধীরে ধীরে তাদের মানসিকভাবে ভেঙে দেয়।