০২:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ২৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ফ্যাসিবাদ মোকাবেলা ব্যর্থ ইউনূস সরকার; কুমিল্লায় ইসলামী ৮ দলের নেতারা কুমিল্লা-৪ আসনে এনসিপির মনোনয়ন ফরম কিনলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ কুমিল্লার নতুন জেলা প্রশাসক মু. রেজা হাসান দেবিদ্বারে লকডাউন কর্মসূচির প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ কুমিল্লায় মাদক সেবনে বাধা দেয়ায় নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা হাজী ইয়াছিনের পক্ষে দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি; ১১তম দিনে দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান বুড়িচংয়ে কোরপাই থেকে নাজিরা বাজার পর্যন্ত টহল-চেকপোস্টে তল্লাশি জোরদার কুমিল্লায় গত ২৪ ঘণ্টায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ২৬ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার কুমিল্লায় নাশকতার অভিযোগে আ.লীগ নেতা গ্রেফতার কুমিল্লা–৬ আসনে টানা কর্মসূচির দশম দিনে হাজী ইয়াছিনের পক্ষে গণস্বাক্ষর অভিযান

কুমিল্লায় এনজিও’র ঋণের চাপ ও অভাবে মা-মেয়ের আত্মহত্যা

  • তারিখ : ০৬:৫০:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
  • 2221

জহিরুল হক বাবু
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে অভাব, এনজিও ঋণের চাপ ও দীর্ঘদিনের অসুস্থতার জেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন মা ও মেয়ে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে নিজ বাড়িতেই ঘটে এ মর্মান্তিক ঘটনা। নিহতরা হলেন—নমিতা রাণি পাল (৪২) ও তার মেয়ে তন্বী রাণি পাল (১৮)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃত জীবন চন্দ্র পালের স্ত্রী নমিতা রাণি পালের তিন মেয়ে ছিল। এর মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট মেয়ে তন্বী অবিবাহিত এবং পড়াশোনা করছিল। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন নমিতা রাণি, যিনি স্থানীয় দেবপুর স্পিনিং মিলে চাকরি করতেন।

তবে গত দুই মাস ধরে অসুস্থ থাকায় কাজে যেতে পারছিলেন না। এর ফলে পরিবারের আয় বন্ধ হয়ে যায় এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। পাশাপাশি, বিভিন্ন এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে তারা চরম মানসিক চাপে ছিলেন।

বুধবার সকালে মা ও মেয়ে দুজনেই বিষপান করেন। প্রতিবেশীরা দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল্লাহ প্রধান বলেন, “খবর পেয়ে বেলা আড়াইটায় ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করি।”

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক জানান, “প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে ঋণগ্রস্ত ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অভাব, ঋণ ও অসুস্থতার কারণেই মা-মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হবে।”

গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, নমিতা রাণি ও তন্বী রাণি ছিলেন শান্ত-ভদ্র স্বভাবের মানুষ। তবে আর্থিক সংকট, অসুস্থতা ও ঋণের চাপ ধীরে ধীরে তাদের মানসিকভাবে ভেঙে দেয়।

error: Content is protected !!

কুমিল্লায় এনজিও’র ঋণের চাপ ও অভাবে মা-মেয়ের আত্মহত্যা

তারিখ : ০৬:৫০:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

জহিরুল হক বাবু
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে অভাব, এনজিও ঋণের চাপ ও দীর্ঘদিনের অসুস্থতার জেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন মা ও মেয়ে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে নিজ বাড়িতেই ঘটে এ মর্মান্তিক ঘটনা। নিহতরা হলেন—নমিতা রাণি পাল (৪২) ও তার মেয়ে তন্বী রাণি পাল (১৮)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃত জীবন চন্দ্র পালের স্ত্রী নমিতা রাণি পালের তিন মেয়ে ছিল। এর মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট মেয়ে তন্বী অবিবাহিত এবং পড়াশোনা করছিল। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন নমিতা রাণি, যিনি স্থানীয় দেবপুর স্পিনিং মিলে চাকরি করতেন।

তবে গত দুই মাস ধরে অসুস্থ থাকায় কাজে যেতে পারছিলেন না। এর ফলে পরিবারের আয় বন্ধ হয়ে যায় এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। পাশাপাশি, বিভিন্ন এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে তারা চরম মানসিক চাপে ছিলেন।

বুধবার সকালে মা ও মেয়ে দুজনেই বিষপান করেন। প্রতিবেশীরা দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল্লাহ প্রধান বলেন, “খবর পেয়ে বেলা আড়াইটায় ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করি।”

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক জানান, “প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে ঋণগ্রস্ত ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অভাব, ঋণ ও অসুস্থতার কারণেই মা-মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হবে।”

গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, নমিতা রাণি ও তন্বী রাণি ছিলেন শান্ত-ভদ্র স্বভাবের মানুষ। তবে আর্থিক সংকট, অসুস্থতা ও ঋণের চাপ ধীরে ধীরে তাদের মানসিকভাবে ভেঙে দেয়।