স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লায় বিয়ের মাত্র ১৩ দিনের মাথায় শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীর সাবেক প্রেমিকের ছুরিকাঘাতে আবু বক্কর ওরফে আসিফ (২৬) নামের এক যুবক নিহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘাতকদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে লাশ নিয়ে আজ শনিবার সকালে নিহত ব্যক্তির স্বজন ও এলাকাবাসী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন।
সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় অবরোধ করেন তাঁরা। এ সময় মহাসড়কের দুই দিকে প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
নিহত আসিফ চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের কেন্ডা গ্রামের ফটিক মিয়ার ছেলে। ৮ নভেম্বর সদর দক্ষিণ উপজেলায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে আসিফকে ছুরিকাঘাত করা হয়। শুক্রবার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
আসিফের ছোট ভাই আরাফাত হোসেন জানান, তাঁর ভাই দুই মাস আগে সৌদি আরব থেকে ছুটিতে দেশে আসেন এবং গত ২৭ অক্টোবর সদর দক্ষিণ উপজেলার আবদুল্লাহপুর গ্রামে বিয়ে করেন।
আরাফাতের অভিযোগ, ৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়ি থেকে অলির বাজারে ঘোরাঘুরি শেষে হেঁটে বাড়ি ফেরার সময় আবদুল্লাহপুর সাদিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার সামনে ওত পেতে থাকা বাপ্পি (রাব্বি প্রকাশ বাপ্পি) ও পারভেজ নামের দুই যুবক আসিফকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। পরে গুরুতর অবস্থায় আসিফকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার বিএমইউতে নেওয়া হলে শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিহত আসিফের স্ত্রীর সঙ্গে বাপ্পি নামের এক যুবকের বিয়ের আগে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরিবারের ধারণা, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে আসিফের স্ত্রীরও ইন্ধন রয়েছে। শুক্রবার রাতে আসিফের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে গ্রামবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
ছোট ভাই আরাফাত অভিযোগ করেন, ‘ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ভাবি নিজেই বাদী হয়ে সদর দক্ষিণ থানায় ছুরিকাঘাতের একটি মামলা করেছেন। আমরা এই হত্যায় ভাবিকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করব।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আসিফের শ্বশুর বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমার মেয়ে কোনোভাবেই জড়িত নয়। বিয়ের আগে আমার মেয়ের সঙ্গে কারও প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। আমি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আসিফের মৃত্যুর ঘটনাটি সদর দক্ষিণ থানার। তাঁর স্বজনেরা দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে চৌদ্দগ্রামের সৈয়দপুর এলাকায় অবরোধ করেন। মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বিষয়টি পুলিশের মহাপরিদর্শক ও কুমিল্লা পুলিশ সুপার জেনেছেন। আমরা দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা মহাসড়কের অবরোধ তুলে নেয়।’
সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। আমরা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।’











