স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বৈলপুর গ্রামে ভুয়া তথ্য দিয়ে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ সম্পন্নের অভিযোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকিয়া সরওয়ার লিমা। অভিযানে বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে কনের মাকে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং ভবিষ্যতে এমন কাজে জড়িত না হওয়ার অঙ্গীকারে মুচলেকা গ্রহণ করা হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই ২০২৫) জনস্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চৌদ্দগ্রামের বৈলপুর গ্রামে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। অভিযানে সহযোগিতা করেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের একটি টিম।
অভিযানকালে দেখা যায়, সানজিদা আক্তার (বয়স ১৫), পিতা: আমিনুল হক, মাতা: আয়েশা বেগম — নামের একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক কন্যার বিয়ের আয়োজন চলছিল। প্রাথমিকভাবে কনের মা মেয়ের বয়স ১৮ বছর দাবি করেন এবং বয়স প্রমাণের জন্য একটি নোটারী পাবলিক ডকুমেন্ট পেশ করেন, যেখানে জন্ম তারিখ ৩১ মে ২০০৬ উল্লেখ ছিল।
তবে ম্যাজিস্ট্রেট মেয়েটিকে দেখে সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং সুকৌশলে প্রকৃত জন্ম সনদ সংগ্রহ করে দেখতে পান, সানজিদার প্রকৃত জন্ম তারিখ ৩১ মে ২০১০ — অর্থাৎ তার বর্তমান বয়স ১৫ বছর। এই তথ্যের ভিত্তিতে বোঝা যায়, মেয়েটি বিয়ের উপযুক্ত বয়সসীমা (নারীর ক্ষেত্রে ১৮ বছর) অতিক্রম করেনি এবং বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ অনুযায়ী এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এ ঘটনায় কনের মা আয়েশা বেগমকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে জরিমানার টাকা পরিশোধ করা হয় এবং মা-মেয়ের কাছ থেকে ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত না হওয়ার অঙ্গীকারে মুচলেকা গ্রহণ করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকিয়া সরওয়ার লিমা বলেন, “নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে কোর্ট ম্যারেজের নামে ভুয়া বয়স দেখিয়ে বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে, যা আইন বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এই অপপ্রক্রিয়া রোধে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।”
তিনি আরও জানান, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রশাসনের জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে এবং যেকোনো অভিযোগ প্রাপ্তির পরই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page