জহিরুল হক বাবু।।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার বেলতলী এলাকায় বিভাজকে উজাড় হওয়া গাছের জায়গায় নতুন করে ৬৪টি বকুল গাছ রোপণ করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব গাছ রোপণ করেন।
সড়ক ও জনপদ বিভাগ কুমিল্লার উপ-বিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী আদনান ইবনে হাসান বলেন, আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গিয়ে ৬৪টি বকুল গাছ লাগিয়ে এসেছে। প্রায় ৫০০ মিটার জায়গাজুড়ে এসব গাছ লাগানো হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব গাছ যে কেটে নিয়েছে তাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভাজকে যেসব গাছ লাগানো হয়েছে সেগুলো দেখাশোনা করার জন্য আলাদা লোকবল নেই বলেও জানান তিনি। সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নির্মাণ শ্রমিকরাই এসব গাছের দেখাশোনা করেন।
কুমিল্লা শহরের সুপরিচিত উদ্ভিদপ্রেমী ও চিকিৎসক আবু নাঈম বলেন, বকুল গাছ খুবই কষ্টসহিষ্ণু। কেউ ইচ্ছা করে কেটে না ফেললে কিংবা উপরে না ফেললে এসব গাছ সহজে মরে না। মহাসড়কের বিভাজকের যে বকুল গাছগুলো লাগানো হয়েছে সেগুলো আসলেই চালকদের উপকারী এবং দীর্ঘস্থায়ী। কারণ আমাদের মহাসড়ক অনেক বেশি পরিমাণে আঁকাবাঁকা হওয়ায় রাতের বেলা একপাশের যানবাহনের আলো অপরপাশের যানবাহনের চালকদের চোখে পড়ে এবং দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।
মহাসড়কের বিভাজক এবং আশেপাশের গাছপালা যেন কেউ অবাধ হয়ে উজাড় করতে না পারে সেজন্য প্রশাসনের কঠোর দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার সদর দক্ষিণের বেলতলী এলাকায় সড়ক বিভাজক থেকে অর্ধশত বকুল গাছ কেটে ফেলে আজমারী হোসেন নামে এক চা দোকানি। এ বিষয়ে সড়ক বিভাগ সদর দক্ষিণ থানায় একটি মামলা দায়ের করলে ওই মামলায় আজমিরী হোসেনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ।
জানা যায়, কেটে ফেলা বকুল গাছগুলো মহাসড়কের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য লাগানো হয়েছিল সওজের উদ্যোগে। প্রতিটি গাছের বয়স ছিল ৯ বছরের বেশি। গাছগুলো কেটে ফেলায় ব্যাপক সমালোচনা হয়। পরে এ ঘটনায় সওজ মামলা দিলে শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাতেই কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার পুলিশ আজমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
অভিযুক্ত আজমির হোসেন বলেন, ‘ডিভাইডারের এই গাছগুলো আবর্জনার মতো লাগে, কোনো কামের না। এর লাইগ্যা কাইট্টা ফালাইছি। এইখানে এখন কলাগাছ, কাঁঠাল, আম, পেঁপেগাছ লাগাইতেছি। আর জায়গাটার মধ্যে শাকসবজির চাষ করমু। কাটার পর কিছু গাছ আমি আনছি আর কিছু মাইনসে নিছে লাকড়ির জন্য। আরও কিছু গাছ কাইট্টা ফলগাছ লাগামু। মাইনসে খাইয়া দোয়া করব।’
সওজ সূত্রে জানা গেছে, মহাসড়কটি ২০১৬ সালে চার লেনে রূপান্তর করার পর সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি এক লেনের গাড়ির হেডলাইটের আলো যাতে অন্য লেনের গাড়ির ওপর না পড়ে, সে জন্য বিভাজকের ওপর লাগানো হয়েছিল বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। মহাসড়কের বিভাজকটি কোথাও ফুল গাছে, আবার কোথাও অন্যান্য বৃক্ষে সাজানো হয়েছে। কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত প্রায় ১৯২ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে মহাসড়কের প্রায় ১৪৩ কিলোমিটার এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে।












