কুমিল্লায় এমএলএম কোম্পানি তিয়ানশীর বিরুদ্ধে প্রতারনার মামলা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি তিয়ানশী (বাংলাদেশ) কোম্পানী লিমিটেড এর বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৩ লাখ ২৩ হাজার টাকার প্রতারনার মামলা করা হয়েছে। কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর ৯ নম্বর আমলী আদালতে এ মামলা দায়ের করেন নাসির উদ্দিন মজুমদার নামে এক ব্যাক্তি। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কুমিল্লাকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন।

জানা যায়, কুমিল্লার সদর দক্ষিন উপজেলার কমলপুর এলাকার বাসিন্দা মোঃ নাসির উদ্দিন মজুমদার গত ২৭ সেপ্টেম্বর তিয়ানশী (বাংলাদেশ) কোম্পানী লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৩ লাখ ২৩ হাজার টাকার প্রতারনার মামলা করেন। মামলায় তিয়ানশী (বাংলাদেশ) কোম্পানী লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনডি ওয়ানগে, একাউন্ট ম্যানেজার এরিক, স্টার গোল্ডন লায়ন মাহবুবুর রহমান, পরিচালক মোঃ কাউছার ভূইয়া, তিয়ানশী (বাংলাদেশ) এর ব্যবস্থাপক (হিউম্যান রিসোর্স) ইফফাত আরা খান (ইতি), কাস্টমার সুপারভাইজার ম্যানেজার পার্থ কুমার পতিন ও আইটি ম্যানেজার মোঃ মামুনকে আসামী করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, মোঃ নাসির উদ্দিন মজুমদার তিয়ানশী (বাংলাদেশ) কোম্পানী লিমিটেড এর একজন গোল্ড লায়ন ও প্লাটিনাম মেম্বার। তিনি ২০০৮ সালের ২৮ অক্টোবর এ কোম্পানির ডিসিট্রিবিউটর হিসেবে যোগদান করেন। (ডিসিট্রিবিউটর কোড-৮৮১২৯৮১৩)। পরবর্তীতে স্টকিষ্ট (মের্সাস স্কাই এন্টারপ্রাইজ, কোড বিডি-২৬০১২০) নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। সততা ও সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করায় কোম্পানির গোল্ড লায়ন ও প্লাটিনাম মেম্বারশীপ পদমর্যাদা অর্জন করেন এবং তার অধীনে অসংখ্য ডিসিট্রিবিউটর কাজ করছে। কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনডি ওয়ানগে মামলায় অভিযুক্ত বাকি আসামীদের কুপ্ররোচনায় এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই গত ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হতে ঢাকা গুলশান-১ রোড নম্বর ২৪ বাড়ি নম্বর ৪১ এ তিয়ানশী বাংলাদেশ এর প্রধান কার্যালয় থেকে তার ডিসিট্রিবিউটর কমিশনসহ সকল সুযোগ সুবিধা ও পন্য সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। মোঃ নাসির উদ্দিন মজুমদারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে তার অধীনে থাকা সকল ডিসিট্রিবিউটর এর সাথে যোগাযোগ করে তাদের সরাসরি পন্য সরবরাহ করছে, যা সম্পূন্ন ব্যবসায়িক চুক্তি ও নৈতিকতা বিরোধী।

মামলায় মোঃ নাসির উদ্দিন মজুমদার উল্লেখ করেন, বিষয়টি নিয়ে তিয়ানশী (বাংলাদেশ) কোম্পানী লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনডি ওয়ানগে সহ তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিকট বিষয়টি জানালে কোন সূরাহ করেনি। পরে দীর্ঘ সময় ব্যবসায়িক লেনদেন এর হিসাব করে ওই কোম্পানীর মাকেটিং প্ল্যান অনুসারে প্রায় ৩ কোটি ১৩ লাখ ২৩ হাজার টাকারও বেশি পাওনা হন। এ পাওনা টাকা দাবী করা হলে বিভিন্ন বাহানায় ঘুরাতে থাকে। পরে পাওনা টাকা চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠালে তার জবাবে পাওনা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
ভোক্তভোগি মোঃ নাসির উদ্দিন মজুমদার জানান, আমার দীর্ঘ দিনের সততা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৮ হাজারেরও বেশি ব্যবসায়ীক নেটওয়ার্ক তৈরী করেছি। আমার সফলতায় ইর্শান্বিত হয়ে এবং আমার অর্জিত পাওনা টাকা আর্তসাৎ করার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমার ডিসিট্রিবিউটর আইডি ও স্টকিষ্ট ব্লক করে দিয়েছে। আমি নাকি কোম্পানির কেউ না, অথচ কোম্পানীর বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত ম্যাগাজিনে টপ সেলস এ্যাওয়ার্ড অর্জন, গাড়ী ফান্ড বিজয়ীর তালিকাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের অসংখ্য ছবি রয়েছে। এসব ছবিতে কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মিষ্টার লি জিনইউয়ানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা রয়েছেন। আমি আমার ন্যায্য অধিকার এবং পাওনা টাকা ফেরত পেতে আদালতের শরানাপন্ন হয়েছি। আশা করি আমি সুষ্ঠ তদন্ত স্বাপক্ষে ন্যায় বিচার পাবো। তিনি আরো বলেন, আদালতে মামলা করার কারনে অভিযুক্তরা বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে খুন গুমসহ বিভিন্ন হুমকি দামকি দিচ্ছে।

কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেস বড়ূয়া জানান, মামলার কাগজপত্র আমাদের হাতে এখনও আসেনি। মামলার কাগজপত্র পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো, আইনগত ব্যবস্থা নেব।

এ ব্যাপারে তিয়ানশী (বাংলাদেশ) কোম্পানী লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনডি ওয়ানগে এর সাথে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করেও পাওযা যায়নি।

তিয়ানশী (বাংলাদেশ) কোম্পানী লিমিটেড এর ব্যবস্থাপক (হিউম্যান রিসোর্স) ইফফাত আরা খান (ইতি) বলেন, আমি অসুস্থ বাসায় আছি। মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমাদের প্রতিষ্ঠানের কাষ্টমার সুপারভাইজার আপনার সাথে যোগাযোগ করবে।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page