কুমিল্লা নিউজ ডেস্ক।।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ স্বজনদের। হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে মৃত্যুবরণ করেছে প্রসূতি পারুল। মঙ্গলবার দুপুরে পারুলের মৃত্যুর বিষয়ের নিশ্চিত করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
নিহত পারুল আক্তার কুমিল্লা বরুড়া উপজেলার ভাউকসার ইউনিয়নের পূর্ব শোলাপুকুরিয়া গ্রামের মোস্তফা মিয়ার স্ত্রী।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে পারুলকে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে আসে তার স্বজনরা। পারুলের শারিরীক অবস্থা গুরুতর দেখে চিকিৎসক শিরিন আক্তারের নির্দেশনায় চিকিৎসক আফরোজা খান অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে সিজার করে। সিজারের পর পারুলকে নরমাল বেডে এবং নবজাতক শিশুটিকে শিশু বিভাগে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করে।
সিজারের আনুমানিক ৩০ মিনিট পর হঠাৎ পারুলের পেট ফুলে গেলে চিকিৎসকরা তাকে পুনরায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। দীর্ঘ ৩ ঘন্টা অপারেশন থিয়েটারে রাখার পর পারুলের অবস্থা আশংকাজনক বিধায় আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। এই সময় পারুলের এমন অবস্থায় দেখে স্বজনরা আতংকিত হয়ে পড়ে এবং বার বার চিকিৎসকের কাছে পারুলের শারিরীক অবস্থা জানতে চায়। তবে চিকিৎসক ও হাসপাতালের স্টাফদের কাছ থেকে কোনো তথ্য তারা জানতে পারি নি বলে জানান পারুলের স্বজনরা।
এই বিষয়ে নিহত পারুলের ভাতিজী রুমানা আক্তার গনমাধ্যমকে জানান, চাচীকে নিয়ে আসার পরই ডাক্তাররা বলছে সিজার করতে হবে। আমরা তখন সিজার করতে বলি। সিজারের পর চাচিকে নরমাল বেডে নিয়ে আসে এবং বাবুকে শিশু বিভাগে নিয়ে যায়। কিছুক্ষন পর চাচীর পেট ফুলে যায়, তখন ডাক্তাররা আবার তাকে দুপুর ১২ টার সময় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। একটা রোগীকে ২ বার কেনো অপারেশন করতে হবে?? এইটা ডাক্তাদের ভুল। ৩ ঘন্টা অপারেশনের পর বের করে চাচীকে আইসিইউতে নিয়ে যায়। রাত ১২ টায় চাচী মারা গেছে কিন্তু ডাক্তাররা বলতেছে আজকে মারা গেছে। ডাক্তারের ভুলের কারণে চাচী মারা গেছে।
পারুলের স্বামী মোস্তাফা জানায় সিজারের পর আমার বউ ভাল ছিল। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়, তারা আবার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে ৩ ঘন্টা ধরে তার সেলাই খুলে আবার অপারেশন করে। তাদের ভুলের কারণে আমার একদিনের বাচ্চাটা তার মাকে হারিয়েছে। এমন ভুল চিকিৎসায় অনেক মা শিশু প্রতিদিন কোনো না কোনো হাসপাতালে মারা যাচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে এর বিচার চায়।
এই দিকে পারুলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারের স্বজনদের মাঝে। স্বজনদের আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছে হাসপাতালে পরিবেশ।
তবে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ইউনিট প্রধান শিশিন আক্তার জানান, পারুলকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পরই আমরা গুরুত্বের সাথে তার সিজার করেছি। চিকিৎসায় কোনো গাফিলতি ছিল না। পূর্ব থেকে তার শারিরীক অবস্থা কিছু আশংকাজনক অবস্থায় ছিল। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার কোনো সুযোগই ছিল না।
এই বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালের পরিচালক আজিজুর রহমান সিদ্দিকী জানান, গতকালই আমি এই ব্যাপার শুনেছি। শুনার পর পরই রাতে আমি হাসপাতালে এসে খোঁজ খবর নিয়েছি। যেহেতু এমন একটি অভিযোগ উঠেছে সেহেতু আমরা এই ব্যাপারে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবো এবং তদন্তের রিপোর্ট ৩ কার্যদিবসের মধ্যে জমা দেয়ার জন্য বলা হবে। পরবর্তীতে রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে আমরা পদক্ষেপ নিবো।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page