
জহিরুল হক বাবু।।
সাহসিকতা, পেশাদারিত্ব এবং প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ মডেল থানাধীন ইপিজেড পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত এসআই (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ খাজু মিয়া রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-এ ভূষিত হয়েছেন।
গত ৩ জুন ২০২৫ তারিখে এক ঝুঁকিপূর্ণ অভিযানে তিনি অসীম সাহসিকতা ও দায়িত্ববোধের পরিচয় দেন, যার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তর তাঁকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওইদিন রাত আনুমানিক ১০টা ৩৫ মিনিটে সদর দক্ষিণ থানার টমছমব্রিজ এলাকায় টহলকালে সন্দেহজনক একটি সিএনজি অটোরিকশাকে থামার সংকেত দেন এসআই খাজু মিয়া। কিন্তু গাড়িটিতে থাকা তিন যাত্রী পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় তাদের একজন পুলিশের দিকে অস্ত্র তাক করে গুলি করার চেষ্টা করে।
তাৎক্ষণিকভাবে এসআই খাজু মিয়া তাঁর সঙ্গীয় ফোর্সসহ পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পরিস্থিতির এক পর্যায়ে তিনি নিজেও আহত হন, তবে দমে যাননি। সাহসিকতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি তিনজন দুর্ধর্ষ আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন—
১. মো. খাইরুল হাসান (৩০), ৪০টি মামলার আসামি এবং যার ডান হাতে ছিল একটি বিদেশি পিস্তল।
২. মো. রাকিবুল হাসান রিয়াদ (২৮), ১৬টি মামলার আসামি।
৩. মো. সোহাগ মোল্লা (৩৫), ১৪টি মামলার আসামি।
অভিযানস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগাজিনসহ একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা একটি অজ্ঞাত সিএনজি চালকের সহযোগিতায় আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরু ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে পদুয়ারবাজারের দিকে যাচ্ছিল।
অভিযানে অসামান্য সাহসিকতা, বীরত্ব ও দায়িত্ববোধের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ পুলিশ এসআই (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ খাজু মিয়াকে রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম) পদকে ভূষিত করেছে।
কুমিল্লা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়-
“এসআই খাজু মিয়া আমাদের জেলার গর্ব। তাঁর বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। আমরা তাঁর এই প্রাপ্য স্বীকৃতির জন্য আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।”
কর্তব্যনিষ্ঠা ও সাহসিকতার এই অনন্য দৃষ্টান্ত পুলিশ বাহিনীতে এক উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।