সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।বাংলাদেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সমসময়ে ২০ ডিসেম্বর ২৭ পূর্ণ করেছে বাংলাদেশের শীর্ষসারির ফ্যাশন ব্র্যান্ড রঙ বাংলাদেশ।
২০১৫ সালের ছন্দপতন এবং পরবর্তীতে রঙ থেকে রঙ বাংলাদেশ হিসাবে অভিযাত্রা শুরুর পর পেরিয়েছে ৭ বছর। বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাষ্ট্রির চলমানতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার প্রয়াসে অবিচল রঙ বাংলাদেশ অন্যদের মতোই এক দূঃসহ সময়ের মুখোমুখি।
বিশ্বব্যাপী মহামারিতে বেসামাল সব শিল্প। ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিও এর বাইরে নয়। এমনকি ভুবনায়নের জোয়ারে ঢুকে পড়া বেনো জল সামলাতে দেশীয় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির পরিস্থিতি যখন প্রতিকূল, তখন করোনার আঘাত একে আরো সমস্যাসঙ্কুল করেছে। প্রথম ঢেউ কাটিয়ে ওঠার আগেই দ্বিতীয় ঢেউয়ে পরিস্থিতি জটিলতর আকার ধারণ করেছে। এ বছরের দুটো বড় উৎসব এবং ঈদ ছিল নিরুত্তাপ। পরবর্তীতে বাজার তুলনায় স্বাভাবিক হলেও ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির পালে বাতাস লাগেনি। অবস্থার উন্নতি হয়নি এখনো। এই পরিস্থিতির উত্তরণ কবে হবে, কবে মানুষ সত্যিকারের স্বস্তির মুখ দেখবে তা এই মুহুর্তে বলা রীতিমত দূষ্কর।
তবুও এই ক্রান্তিতে উপনীত রঙ বাংলাদেশ ইতিবাচকভাবেই ভাবতে চায়। কারণ ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। উপরন্তু যে মানুষটির কল্যাণে আমরা পেয়েছি এই দেশ, সহস্র বছরের শ্রেষ্ঠ সেই মানুষটির জন্মশতবার্ষিকীও। দুটি মহান উপলক্ষ্যকে সামনে রেখে রঙ বাংলাদেশ আবার আশায় বলীয়ান হতে চায়। প্রতীক্ষা করতে চায় ইতিবাচক ভবিষ্যতের। সমান উদ্দীপনায় রাঙাতে চায় সময়কে; যে ব্রত নিয়ে ২৬ বছর আগে শুরু হয়েছিল চারজন তরুণের স্বপ্নযাত্রা।
ফিরে দেখা
নব্বই দশকের শুরুতেই চার বন্ধু মিলে টুকটাক কাজ করতে করতেই পরিকল্পনা। সেই ভাবনার সোপান ধনেই ফ্যাশন হাউজ রঙ-এর শুরু ১৯৯৪ সালে। নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ার শান্তনা মার্কেটের ছোট্ট পরিসরে। বয়ে যাওয়া সময়ে চার থেকে হয়ে যায় দুই। বাকি দুজন এগিয়ে নিতে থাকে রঙ-কে। দেশের ফ্যাশনপ্রিয় মানুষের ভালোবাসায় নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের অন্যত্রও শাখা বিস্তার হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রোধ করা যায়নি ভাঙন।
রঙ থেকে রঙ বাংলাদেশ
পরিস্থিতিকে মেনে নিতেই এক সময় রঙ হয়েছে রঙ বাংলাদেশ। ঠিক পাঁচ বছর আগে। ২০১৫ সালে। ছন্দপতনের বিহŸলতা কাটিয়ে উঠে, সূচনাদিনের প্রত্যয়েই রঙ বাংলাদেশ এগিয়েছে। অবশ্য সেটা সম্ভব হয়েছে দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা রঙ অনুরাগীদের সমর্থন আর পৃষ্ঠপোষণার জন্য। বস্তুত তাঁদের শ্রদ্ধা জানাতেই আত্মপ্রকাশ রঙ বাংলাদেশ-এর। এই চলমানতায় আঙ্গিক পরিবর্তন সত্বেও লক্ষ্যে অবিচল থেকে প্রধান নির্বাহী সৌমিক দাসের সঙ্গে এক ঝাঁক নিবেদিত প্রাণ কর্মীর নিরলস প্রচেষ্টায় নতুন করে বিকশিত হয়েছে রঙ বাংলাদেশ। অপরিসীম উৎসাহ, উদ্দীপনার সঙ্গে দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দেয়ার ইচ্ছা নিয়ে এগিয়েছে রঙ বাংলাদেশ;
গত পাঁচ বছরে সময়ের সঙ্গে আরো রঙ বাংলাদেশ পরিবার। ফ্যাশন অনুরাগীদের ভালোবাসায় শাখা ছড়িয়েছে দেশের নানা প্রান্তে। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সমুন্নত রেখে ২০ ডিসেম্বর পূর্ণ করেছে ২৭ বছর। রঙ বাংলাদেশ-এর একটি শক্তিশালী টিম ফ্যাশনের এই কর্মযজ্ঞকে এগিয়ে নিচ্ছে। দেশীয় ফ্যাশন শিল্পের অন্যতম এই ব্র্যান্ড ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে গেছে। আউটলেটের সংখ্যা এখন ২৩। নারায়ণগঞ্জ, বসুন্ধরা সিটি, ওয়ারী, সীমান্ত স্কয়ার, যমুনা ফিউচার পার্ক, মোহাম্মদপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, ফেনী, বাহ্মণবাড়িয়া, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ঈশ্বরদী, বগুড়া, রাজশাহী, খুলনা, কুষ্টিয়া এবং মাদারিপুরে রয়েছে রঙ বাংলাদেশ। ফলে রঙ বাংলাদেশ-এর অনুরাগীরা হাতের নাগালেই পাচ্ছেন প্রিয় ব্র্যান্ডের পোশাক ও উপহারসামগ্রী।
সমান্তরালে ডিজিটাল উৎকষ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গড়ে উঠেছে রঙ বাংলাদেশের অনলাইন প্লাটফর্ম, নিজস্ব ই-কর্মাস সাইট ও ফেসবুকসহ নানা সামাজিক মাধ্যম। ফলে দেশে-বিদেশের ক্রেতারা বাসায় বসেই পাচ্ছেন সকল সামগ্রী।
রঙ বাংলাদেশ এর সাব-ব্র্যান্ড
রঙ বাংলাদেশ বিভিন্ন বয়সের জন্য সমান সচেতন। সেজন্যই মূল ব্র্যান্ডের অধীনেই রয়েছে ৪টি পৃথক সাব-ব্র্যান্ড। জ্যেষ্ঠদের জন্য শ্রদ্ধাঞ্জলি, তরুণদের জন্য ওয়েস্টরঙ, ছোটদের জন্য রঙ জুনিয়র আর বাংলাদেশকে দেশ এবং দেশের বাইরে পরিচিত করাতে আছে আমার বাংলাদেশ। শেষের এই ব্র্যান্ডটি মূল উপহার সামগ্রী বা স্মারক উপহারের; যাতে করে ভুবন মাঝে খুঁজে পাওয়া যায় এক টুকরো বাংলাদেশ।
সৃজনে থিম নির্ভরতা
রঙ বাংলাদেশ বরবারই থিম নির্ভর কাজ করে থাকে; তা সে উৎসবই হোক বা উপলক্ষ্য। সেই ধারা অব্যাহত রেখেই এগিয়ে চলেছে। দূর্দান্ত টিমওয়ার্ক আর সৃজনশীলতা ব্র্যান্ডে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি জয় করেছে শুভানুধ্যায়ীদের আস্থা। ২৭ বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতাকে সমুন্নত রেখে বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে রঙ বাংলাদেশ সুদৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। অভিন্ন লক্ষ্যেই অবিচল ২৭ পূর্তির প্রাক্কালেও।
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ
পরিচ্ছন্নতা রঙ বাংলাদেশ সবসময়েই বজায় রাখে। তবে করোনাকালে বিষয়টিকে আরো বেশি করে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আউটলেট খোলার অনুমতি পাওয়ার পর প্রতিটি আউটলেটকে জীবাণুমুক্ত করা হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে কর্মচারির সংখ্যা কমিয়ে এবং আউটলেটের পরিসর অনুযায়ী ক্রেতাদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়া হয়। মাস্ক ছাড়া আউটলেটে প্রবেশাধিকারে কড়াকড়ি আরোপ করার পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা করা এবং নির্দিষ্ট সময় পর পর আউটলেটগুলোকে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকি কাপড়ের প্যাকিং এবং উৎপাদনের প্রতিটি পর্যায়ে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সুরক্ষা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরো বিষয়টাকে আমরা ইতিবাচক হিসাবে থেকেই দেখতে চাই। এক্ষেত্রে সম্মাণিত ক্রেতা ও অনুরাগীদের নিয়ত সহযোগীতা এই দুৎসহ পরিস্থিতি উত্তরণে আমাদের চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করেছে।
ক্রান্তিতে নতুন রূপে
এক অভূতপূর্ব বৈশ্বিক বাস্তবতায় শুরু করছে নতুন বছর। কোন সন্দেহ নেই বিপ্রতীপ সময়েই সূচনা হচ্ছে নতুন যুদ্ধের। ফলে নতুন করেই সবকিছুর পরিকল্পনা করা হয়েছে, হয়েছে নতুন ব্র্যান্ডিং; বদলে গেছে এর লোগো। বলা যেতে পারে নতুন রূপ পরিগ্রহ করতে চলেছে রঙ বাংলাদেশ।
তবে দেশজ উপকরণ, উজ্জ্বল রঙ আর বিষয়ভিত্তিক নকশা বিন্যাসের সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে পোশাকে ধরে রাখায় চেষ্টায় ত্রুটি থাকবে না; বরং রঙ বাংলাদেশ এর পণ্যকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পাশাপাশি টেকসই ফ্যাশন ও পুনর্ব্যবহারকে গুরুত্ব দিয়েই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়াসী।
রঙ বাংলাদেশ একান্তভাবে বিশ্বাস করে যাদের নিয়ে এবং যাদের জন্য এই সৃষ্টিযজ্ঞ, তারা সবসময়ের মতোই সাথী হবেন। এই দুসময়েও তাদের যে সমর্থন মিলেছে তাতে রঙ বাংলাদেশ অভিভূত ও কৃতজ্ঞ। অতএব সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই টিকে থাকবে রঙ বাংলাদেশ-এর লেগাসি।
মোঃ তৌসিক আহমেদ
সিনিয়র এক্সিকিউটিভ, মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন
রঙ বাংলাদেশ
ফোন: ০১৭৩০০৬৮০৮১
You cannot copy content of this page