নেকবর হোসেন।।
আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠেয় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নগরীর সব শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে বেশ প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। এখানে মেয়র পদে অন্তত ডজনাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম আলোচিত হচ্ছে। এছাড়া কাউন্সিলর পদে ৯টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড ও ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ১০ থেকে ১২ জনের অধিক সম্ভাব্য প্রার্থী আগাম নির্বাচনি প্রচারণায় রয়েছেন।
ঈদ উৎসব উপলক্ষে নগরীর আনাচে-কানাচে শুভেচ্ছা জানিয়ে দোয়া চেয়ে প্রার্থিতা জানান দিয়েছেন তারা। তাদের এমন পোস্টার-ফ্যাস্টুনে নগর এলাকা ছেয়ে আছে। তবে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রার্থীদের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নানা নির্দেশনা জারি করেছে। ইসির এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী।
কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নপত্র তুলতে মেয়র ও কাউন্সিলরদের ব্যয় নির্ধারণ করে ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখা থেকে বেশকিছু নির্দেশনা পৌঁছেছে। ঐ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্বাচনি আইন অনুযায়ী কুসিকে মোট ভোটার ৫ লাখের কম। তাই এখানে মেয়র পদের প্রার্থীদের জামানত হিসেবে জমা দিতে হবে ২০ হাজার টাকা। সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের প্রার্থীরা অনধিক ১৫ হাজার ভোটার সংবলিত ওয়ার্ডের জন্য ১০ হাজার টাকা, ১৫ হাজার এক থেকে ৩০ হাজার ভোটার সংবলিত ওয়ার্ডের জন্য ২০ হাজার টাকা, ৩০ হাজার এক থেকে ৫০ হাজার ভোটার সংবলিত ওয়ার্ডের জন্য ৩০ হাজার টাকা এবং ৫০ হাজার এক ও তদূর্ধ্ব ভোটার সম্বলিত ওয়ার্ডের জন্য ৫০ হাজার টাকা জমা দেবেন। সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা ১০ হাজার টাকা জমা দেবেন। এছাড়া মেয়র পদে প্রার্থীরা ২৭টি ওয়ার্ডের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডের ভোটার তালিকার সিডি (কমপ্যাক্ট ডিস্ক) বাবদ ৫০০ টাকা হারে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা জমা দেবেন। কাউন্সিলর প্রার্থীরা ৫০০ টাকা জমা দেবেন। প্রত্যেক প্রার্থীকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা জমাদানের প্রমাণস্বরূপ ট্রেজারি চালান বা পে-অর্ডার বা কোনো তপশিলি ব্যাংকের রসিদ জমা দেবেন।
ঋণখেলাপিদের তথ্য : কুসিক নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে কে ঋণখেলাপি তা জানাতে অর্থ বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। গত ২৬ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিবকে পাঠিয়েছেন। এক্ষেত্রে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে আগামী ১৭ মে বিকাল ৫টা পর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রার্থীদের নাম-পরিচিতি সংগ্রহ করে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় ২০ মে এর পূর্বে ঋণখেলাপের তথ্য সরবরাহ করতে হবে। প্রয়োজনে বাছাইয়ের সময় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে উপস্থিত থাকতে হবে।
প্রার্থী মনোনয়নকারীর নাম জমা : মেয়র পদে প্রার্থীকে দলের কোনো ব্যক্তি মনোনয়নন দেবেন, সেই ব্যক্তির নাম ও নমুনা স্বাক্ষর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়ার সময় ছিল গত ১ মে। সূত্র জানায়, এই দিনটি ঈদের ছুটির মধ্যে পড়েছে, তাই ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার পরের দিন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।
প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা : মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা নির্ধারণ করে দিয়েছে ইসি। প্রার্থীর যোগ্যতার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে অব্যশই ২৫ বছরের বাংলাদেশি হতে হবে। মেয়র পদের জন্য সিটির কোনো একটি এলাকার ভোটার এবং কাউন্সিলর পদের জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটার হতে হবে প্রার্থীকে। প্রার্থীর অযোগ্যতা হিসেবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করলে বা হারালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচনের অযোগ্য হবেন। এছাড়া কোনো আদালত থেকে অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত হলে, প্রজাতন্ত্র বা সিটি করপোরেশন বা কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের লাভজনক পদে সার্বক্ষণিক অধিষ্ঠিত থাকলেও প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য হবেন। এছাড়া বেশকিছু অযোগ্যতার বিষয় উল্লেখ করেছে ইসি।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page