নিউজ ডেস্ক।।
প্রেমের বিয়ে মেনে নিচ্ছে না মেয়ের পরিবার! রাতে ফেসবুক ভিডিও বার্তায় মিথ্যা মামলা হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ জানিয়ে সকালে পুলিশের সামনেই বিষ পানে আত্মহত্যা চেষ্টা স্বামী স্ত্রী’র !
কুমিল্লা আদর্শ সদরের বলারামপুর এলাকার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নূরুন্নাহার সামিয়া ও পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর এলাকার যুবক সাজ্জাদ ভূইয়া বিজয়। দীর্ঘদিনের প্রেমের স্বীকৃতি দিয়ে গতবছরের ডিসেম্বরে বিয়ে করেন তারা দুজন। বিজয়ের পরিবার মেনে নিলেও তাদের এই বিয়ে মেনে নিতে পারছে না সামিয়ার অভিভাবকরা।
এদিকে সামিয়া নিজেকে প্রাপ্ত বয়স্ক দাবী করলেও জন্মনিবন্ধন অনুসারে সামিয়ার বয়স এখনো ১৮ হয়নি বলে জানায় সামিয়ার পরিবার। বিয়ের পর, নাবালিকা মেয়েকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে বিজয়ের বিরুদ্ধে মামলা করলে, পুলিশ বিজয়কে আটক করে জেলে পাঠায়। পরে আদালতে, সামিয়া তার প্রেমের সম্পর্ক ও স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছে মর্মে জবানবন্দি দিলে বিচারক জামিন দেয় বিজয়কে। প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়ায় সামিয়াকে তার বাবা মায়ের জিম্মায় দেয়া হয়।
দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সামিয়া ও তার স্বামি জেলা সদরের দৌলতপুর পূর্বপাড়া এলাকার ফরহাদ আহাম্মদ ভূইয়ার ছেলে বিজয় জানায়, স্কুলে যাওয়া ও লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছে, বাড়িতে প্রায়ই সামিয়াকে নির্যাতন মারধর ও ঘরে আটকে রাখা হয়। বাড়িতে নেয়ার পরও বেশ কয়েকবার স্বামি বিজয়ের বাড়িতে চলে আসে সামিয়া। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে সমাধানের চেষ্টাও হয়।
সবশেষ গত রবিবার বাড়ি থেকে পালিয়ে স্বামীর বাড়িতে চলে আসে সামিয়া। ফোন করে বাড়িতে জানিয়ে দেয় স্বামীর বাড়িতে নিজের অবস্থানের কথা। বাড়িতে এসে মেয়েকে না পেয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় মেয়ে নিখোঁজের বিষয়ে সাধারণ ডাইরি করেন সামিয়ার বাবা বলারাপুর এলাকার ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান। বাবা ফোনে মেয়েকে হুমকি দেন বিজয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা হামলা ও জেলে পাঠানোর।
রোববার রাতে সামিয়া ও বিজয় দুজনে বিজয়ের ফেসবুক আইডিতে একটি ভিডিও পোস্ট করে বিগত দিনে তাদের সাথে ঘটা ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে পুনরায় এমন কিছু ঘটলে দুজনে একসাথে আত্মহত্যা করবে বলে ঘোষণা দেয়।
সামিয়ার বাবার জিডির ভিত্তিতে সোমবার সকালে সামিয়াকে উদ্ধার করতে বিজয়ের বাড়িতে যান কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের এসআই মিঠুন সহ সঙ্গীয় ফোর্স। সামিয়া তার বাবার বাড়িতে ফিরে যাবে না জানায় পুলিশ কে। এসময় তাকে নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশের সামনেই বিজয় ও সামিয়া (কিটনাশক) বিষের বোতল খুলে বিষ পান করে। তাৎক্ষণিক তাদের বাঁধা দিয়ে নিবৃত্ত করতে না পারায় পরিবারের লোকজন ও পুলিশ সদস্যরা দ্রুত দুজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
বিষক্রিয়া শুরুর আগেই তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ফলে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় দুজনকেই।
এবিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার এসআই মিঠুন জানান, দুজনই এখন চিকিৎসাধীন রয়েছে। মেয়ে তার বাবা মায়ের কাছে যেতে চাইছে না। তবে মেয়ের পরিবার মেয়েকে তাদের জিম্মায় নিয়ে যেতে চাইছে। ওসি স্যারের সাথে আলোচনা করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে৷
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page