মনির খাঁন, মুরাদনগর প্রতিনিধি।।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেখতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক আল ইমরান মোর্শেদ হতভম্ব হয়ে পড়েন গত বুধবার বিকেলে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প দেখতে আসেন তিনি।
এ সময় তিনি ঘরগুলোতে দুই নম্বর ইট ব্যবহার করার কারণ জানতে চাইলে ঘর তৈরীর দায়িত্বে নিয়োজিত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হাই খান আমতা আমতা করতে থাকেন। এ অবস্থা দেখে মহাপরিচালক হতভম্ব হয়ে পড়েন। তখন তিনি দুই নম্বর ইট দ্রুত অপসারণ করে এক নম্বর ইট ব্যবহার করার নির্দেশ দেন। আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকা দেখাশুনা করার লোকবল না থাকায় তিনি চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং প্রতি আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকায় অস্থায়ী ভিত্তিতে দ্রুত একজন করে সুপারভাইজার নিয়োগের পরামর্শ দেন।
পরিদর্শনকালে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কাবিরুল ইসলাম খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন ভুইয়া জনি, ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কাদির উপস্থিত ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশ-পাশের কিছু লোক বলেন, কৃষ্ণপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ শুরু থেকে দ্ইু নম্বর ইট দিয়ে করা হচ্ছে। রাস্তার পাশে দুই নম্বর ইটের স্তুপও ছিল। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসার কথা শুনে ট্রাক্টর দিয়ে কিছু ইট সরিয়ে নেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আলাউদ্দিন ভুইয়া জনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশ, কোন অবস্থাতেই আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজ দুই নম্বর ইট দিয়ে করা যাবেনা। আমি এখানে নতুন এসেছি, অচিরেই উপজেলার সকল আশ্রয়ন প্রকল্পে যাব। প্রকল্পের ঘর নির্মাণে কোন প্রকার ত্রুটি পেলে বরদাস্ত করা হবেনা।
মুরাদনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হাই খান বলেন, ইট ভাটার মালিকরা এক নম্বর ইটের সাথে দুই নম্বর ইট মিশ্রিত করে দেয়। ইতিমধ্যে কিছু দুই নম্বর ইট ফেরত দেওয়া হয়েছে। এখনতো ইটের সৃজন নয়, নতুন ইট আসতে জানুয়ারি মাস লাগবে। তাই দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্য সামান্য কিছু দুই নম্বর ইট চালিয়ে দিচ্ছি।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন নোয়াখালী বর্তমান লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা গ্রামে ভূমিহীন-গৃহহীন, অসহায় ছিন্নমূল মানুষের পূনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশী ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার পর দেশের গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবার পূনর্বাসনের মতো জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো স্থবির হয়ে পড়ে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার দীর্ঘ ২১ বছর পর তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে বঙ্গবন্ধুর জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো পুনরায় শুরু করেন।
তাই তিনি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মডেল’ সামনে এনে পিছিয়ে পড়া ছিন্নমূল মানুষকে মূলধারায় আনার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিনে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন এবং একই বছর তিনি সারা দেশের গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তত্ত্বাবধানে শুরু করেন আশ্রয়ন প্রকল্প।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page