সাংবাদিক মওদুদ আব্দুল্লাহ শুভ্রর দায়ের করা মামলায় আসামী ধরতে ‘হার্ডলাইনে’ পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার।।
জাতীয় ও অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী এবং শিক্ষানবিশ আইনজীবী মওদুদ আব্দুল্লাহ শুভ্রর দায়ের করা একাধিক মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে কুমিল্লা জেলা পুলিশ, ডিবি পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, কুমিল্লা নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাতন চৌধুরীপাড়া, ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা মওদুদ আব্দুল্লাহ শুভ্র বিগত নয় বছর ধরে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ চক্রের টার্গেটে রয়েছেন। এ সময় তার বিরুদ্ধে একের পর এক হুমকি, হামলা, চাঁদাবাজি এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামাজিকভাবে হেয় করার অভিযোগ ওঠে।

সাংবাদিক মওদুদ জানান, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে কোতোয়ালি থানায় নিরাপত্তার জন্য দুটি জিডি (জিডি নং-১৫৭, ৩ মে ২০১৭ ও ২৮ জুন ২০১৮) করেন। এরপর ২০২০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তার বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ওই ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করলে তদন্ত চলাকালে আসামিপক্ষ চাপ প্রয়োগ করে মামলা প্রত্যাহারের। এরপরও বিভিন্ন সময় তাকে ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি, চাঁদা দাবি ও সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করা হয়।

সর্বশেষ গত ৯ জুলাই অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মোবাইল ফোন ও এসএমএসের মাধ্যমে মওদুদ শুভ্রকে হত্যার হুমকি দেয়, বিষ মিশিয়ে গণহত্যার ভয় দেখায় এবং চাঁদা না দিলে তার বিরুদ্ধে অশ্লীল ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।

২০২৪ সালের ১৪ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় (এফআইআর নং-৪১, জি.আর নং-৮৫০) তিনি ৮ জন এজহারভুক্ত ও ৫-৬ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে জখম, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ আনেন। ওই মামলায় একজন আসামিকে যৌথ বাহিনী গ্রেপ্তার করলেও বাকিরা এখনো পলাতক। এই চক্র মামলার সমাধান না হলে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে আল্টিমেটাম দেয়।

এছাড়া ২০২৫ সালের ৭ এপ্রিল আদালতের অনুমতিতে **নন-এফআইআর মামলা (নং: ২০/২৫)** রুজু হয়। আসামিদের নামে সমন জারি করা হলেও তারা তা গ্রহণ না করায় **আদালত অবমাননার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রস্তুতি** চলছে।

এই ঘটনায় একাধিকবার ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার করে মওদুদকে হেয় ও ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগ ওঠে। এর ভিত্তিতে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় অনলাইনে একটি জিডি (নং-২২২, তারিখ: ১৭.০৩.২০২৫) করা হয়। তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১, কুমিল্লা থেকে মামলার অনুমতি প্রদান করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে প্রসিকিউশন দাখিল করে মামলা রুজু করা হয়।

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুহিনুল ইসলাম** বলেন, “সাংবাদিক মওদুদ আব্দুল্লাহ শুভ্রর অভিযোগগুলো আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই সন্ত্রাসী চক্রকে দমন এবং আইনের আওতায় আনতে পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী এখন ‘হার্ডলাইন’ অবস্থানে রয়েছে। মামলার এজহারভুক্ত আসামিদের পাশাপাশি এদের মদদদাতাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।”

এদিকে সাংবাদিক মওদুদ আব্দুল্লাহ শুভ্র আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আশা করছি রাষ্ট্র ও প্রশাসন আমাকে সুরক্ষা দেবে এবং যারা দীর্ঘদিন ধরে এসব অপরাধে জড়িত, তারা দ্রুত বিচারের মুখোমুখি হবে।”

কুমিল্লার সচেতন মহল মনে করছে, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  

You cannot copy content of this page