নিজস্ব প্রতিবেদক।।
নতুন করে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন কুমিল্লার রাজনীতিবিদরা। এবার জনসম্পৃক্ত নেতারাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। নারায়নগঞ্জে সিটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রচারণায় অংশ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও মহানগর যুবলীগের আহবায়ক জিএস আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ।
এছাড়া দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরেক মাঠের নেতা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর দক্ষিন উপজেলা পরিষদ এর ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু।
এছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলী মনসুর ফারুক করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকা এভারকেয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
করোনা আক্রান্ত হয়েছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এর ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) ইকবাল হোসেন, মহানগর যুবলীগের সদস্য আকাশ ওয়াহিদ।
এছাড়া জেলা বিএনপির সদস্য ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী কাউসার জামান বাপ্পি সহ অন্যান্য দলের নেতৃবৃন্দ, তৃণমূল পর্যায়ের অনেকেই এখন আক্রান্ত করোনায়। আক্রান্তদের মধ্যে বেশির ভাগই বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কয়েকজন আক্রান্ত হয়ে আবার সুস্থ হয়েছেন।
মহানগর যুবলীগ কর্মী আরিফ রায়হান জানান, “কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও মহানগর যুবলীগের আহবায়ক ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংসদের সাবেক জিএস আবদুল্লা আল মাহমুদ সহিদ।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শে হোম আইসোলেশনে আছেন। উনার স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো আছে। করোনা ভাইরাসের শুরু থেকে তিনি কুমিল্লা-৬ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামীলীগের সংগ্রামী সভাপতি আধুনিক কুমিল্লার উন্নয়নের রুপকার ও সফল বাস্তবায়ন কারী, দেশসেরা করোনা সম্মুখ যোদ্ধা, কুমিল্লার গণ মানুষের নেতা, বীরমুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারের নেতৃত্বে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্যদের সাথে কোভিড চিকিৎসা, চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ও করোনা নিয়ন্ত্রণে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন।
গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে মুমূর্ষ মানুষ সহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের জন্য সব সময় সামনের সারি থেকে মানুষের সেবা করেছেন তারই ধারাবাহিকতায় করোনা রোগীদের বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা, খাদ্য সামগ্রী, ২৪ঘন্টায় চিকিৎসায় সহায়তা, ফ্রী অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, মৃত ব্যক্তিদের কাফন ও দাফন সহ চলমান মানবিক এসকল কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। কুমিল্লা মানুষকে মানবিক সেবা দিতে গিয়ে ও নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকা মার্কার নির্বাচনী গণসংযোগ গিয়ে আবদুল্লা আল মাহমুদ সহিদ করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত হন।”
নতুন করে করোনা আক্রান্ত রাজনীতিবিদদের মধ্যে আবদুল হাই বাবলু গতবছর লকডাউনে মাঠে থেকে মাস্ক, স্যানিটাইজার, খাবার বিতরণ করেছেন। সে সময় মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে আবদুল হাই বাবলু করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এবারও নতুন করে সংক্রমণে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন অনেক নেতা।
এদিকে সচেতন মহলের ধারনা বর্তমানে জেলার ৩ উপজেলায় ইউপি নির্বাচনী প্রচারনা চলছে তুঙ্গে। নির্বাচনী প্রচারনায় মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্যবিধি। এতে করে বিশেষ করে রাজনীতিবিদদের করোনার ঝুঁকি বাড়ছে। বর্তমানে জেলার মুরাদনগর উপজেলায় ৬ষ্ঠ ধাপে আগামী ৩১ জানুয়ারী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৭ম ধাপে ৭ ফ্রেব্রুয়ারী দেবিদ্বার ও বুড়িচং দুই উপজেলায় ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। মহানগরের বাহিরে এ ৩ উপজেলা করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস জানায়, কুমিল্লা জেলায় মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ এখনো করোনা টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন বা রেজিষ্ট্রেশন করেননি। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪২ শতাংশ মানুষ এখনো টিকা নেবার জন্য নিবন্ধন করেননি। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, জেলায় করোনা টিকার জন্য নিবন্ধিত জনগোষ্ঠীর মাত্র ৪২ শতাংশ মানুষকে টিকার অন্তত এক ডোজের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
ডেপুটি সিভিল সার্জন নিসর্গ মেরাজ চৌধুরীর মতে, সচেতনতার অভাবেই করোনা টিকার জন্য নিবন্ধনের সংখ্যা এত কম। করোনা ভাইরাস সংক্রমন বাড়তে থাকলে কিছু মানুষ আগ্রহী হয়। টিকা নিবন্ধনে জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদদের ভূমিকা বাড়নো জরুরী বলে মনে করছেন তিনি।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page