স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লা নগরীতে এক যুবদল নেতার নেতৃত্বে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এক ব্যবসায়ী ওই সাংবাদিককে এলোপাতাড়ি মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন কুমিল্লার সাংবাদিক নেতারা।
হামলার শিকার ওই সাংবাদিকের নাম আবু সুফিয়ান রাসেল। তিনি কুমিল্লা স্থানীয় দৈনিক আমাদের কুমিল্লার স্টাফ রিপোর্টার এবং বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি কুমিল্লার প্রকাশনা সম্পাদকের পদে রয়েছেন।
হামলায় অভিযুক্ত তোফায়েল হোসেন কাওছার কুমিল্লা মহানগর যুবদলের সদ্য সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি নগরীর থিরাপুকুর পাড় এলাকার বাসিন্দা। আরেক হামলাকারী মাসুদ তালুকদার নগরীর ঢুলিপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
বুধবার (২১ জুন) রাতে নির্যাতিত ওই সাংবাদিক জানিয়েছেন- মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লা নগরীর মেডিক্যাল কলেজ সড়কের ঢুলিপাড়া মোড়ে মাসুদ তালুকদারের বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওইদিন রাতে কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক। হামলার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে কুমিল্লায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার বিকেলে ভুক্তভোগী সাংবাদিক আবু সুফিয়ান রাসেল বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে সংবাদ সংগ্রহের কাজ শেষে আরেক সহকর্মীর মোটরসাইকেলে করে শহরে ফিরছিলাম।
আমাদের মোটরসাইকেল ঢুলিপাড়া মোড়ে এলে উল্টোপথে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলটির একটি পার্স ভেঙে যায় এবং আমি পায়ে আঘাত পাই। এ সময় অটোরিকশা চালকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে তিনি যেন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে না পারেন- সেজন্য আমি রিকশায় উঠে বসি।
আবু সুফিয়ান রাসেল বলেন, এমন সময় কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই কুমিল্লা মহানগর যুবদলের সদ্য সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল হোসেন কাওছারের নেতৃত্বে আমার ওপর হামলা চালানো হয়। ওই যুবদল নেতা প্রথমে আমার জামার কলার ধরে রিকশা থেকে নামিয়ে মাটিতে ফেলে দেন।
এক পর্যায়ে তার সঙ্গে থাকা স্থানীয় ব্যবসায়ী মাসুদ তালুকদার আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এরপর রাতে থানায় অভিযোগ করি।
এ হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি, কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক শাহাজাদা এমরান বলেন, আমরা হামলার শিকার সাংবাদিক আবু সুফিয়ান রাসেলের পাশে আছি। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। সারাদেশে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে। এ ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি-না, সেটিও তদন্ত করে দেখার দাবি জানাচ্ছি।
কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইয়িদ মাহমুদ পারভেজ বলেন, এখন সাংবাদিকদের ওপর হামলাটা মনে হয় পেশায় পরিণত হয়েছে। যারা হামলা চালিয়েছে তাদের ছাড় দেওয়া যাবে না। দ্রুত হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, থানায় লিখিত অভিযোগ হওয়ার পর থেকেই অভিযুক্তরা এলাকা থেকে গা-ঢাকা দিয়েছেন। তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহাম্মদ সঞ্জর মোর্শেদ বলেন, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই পুলিশের একাধিক টিম আসামিদের আটক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখছি।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন, ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page