নিউজ ডেস্ক।।
নেদারল্যান্ডসে প্রশিক্ষণে গিয়ে উধাও হওয়া দুই পুলিশ সদস্যের একজন শাহ আলম। তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বৈদ্দেরখীল গ্রামের শাহ জাহানের ছেলে। ছেলের এভাবে নিরুদ্দেশ হওয়ার ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান শাহ জাহান। তবে শাহ আলমের এভাবে নিরুদ্দেশ হওয়ার ব্যাপারে এলাকায় নানা আলোচনা চলছে।
শাহ আলমের চৌদ্দগ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাবা শাহজাহান রিকশা চালানো শেষে বাড়ি ফিরেছেন। বাড়িতে জরাজীর্ণ দুটি থাকার ঘর। মা শিরিনা বেগম একটি ঘরে গরুকে ঘাস খেতে দিয়ে গরুর জন্য ভাতের ফেন আনতে অন্য বাড়িতে যাচ্ছেন।
শাহ আলম কোথায় জানতে চাইলে আতঙ্কিত হয়ে বলেন, ‘আমার ছেলে বর্তমানে কোথায় আছে আমি জানি না। নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার আগে বলে গেছে, প্রশিক্ষণের জন্য সেখানে যাচ্ছে। তারপর থেকে আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। গত তিন-চার দিন আগে বাড়িতে পুলিশ এসে শাহ আলমের খোঁজ করলে আমরা বলি, সে তো প্রশিক্ষণে নেদারল্যান্ডসে গেছে। তখন তারাই বলে, শাহ আলম সেখান থেকে পালিয়ে গেছে। তখনই আমরা জানতে পারি, সে নাকি পালিয়েছে। এরপর থেকে প্রশাসন আমাদের কড়া নজরদারিতে রেখেছে। বার বার থানায় ডেকে নেওয়া হচ্ছে। থানায় আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি রেখে দিয়েছে।’
ছেলেকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও আমার ছেলে কীভাবে পালালো? তারা আমাদের সান্ত্বনা না দিয়ে উল্টো চাপে রেখেছে।’
শাহ আলমের মা শিরিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘যাওয়ার আগে শাহ আলম বলে গেছে, উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশে যাচ্ছি। তারপর থেকে আমার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ নেই।’
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার মেয়র জিএম মীর হোসেন মীরু বলেন, ‘শাহ আলম নেদারল্যান্ডস থেকে পালিয়ে গিয়ে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে। আমি আশা করছি, সে তার ভুল বুঝতে পারবে এবং দেশে ফিরে আত্মসমর্পণ করে পুনরায় পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করবে।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভরঞ্জন চাকমা বলেন, ‘মৌখিকভাবে শাহ আলমের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি।’ এর বাইরে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, গত ৯ মে শাহ আলমসহ চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) আট সদস্য ডগ স্কোয়াডের প্রশিক্ষণের জন্য নেদারল্যান্ডস গিয়েছিলেন। এর মধ্যে ছয় জন গত ২৪ মে দেশে ফেরত আসলেও শাহ আলম এবং কক্সবাজারের রাসেল চন্দ্র দে নামে দুই জন আসেননি। তারা দেশে ফেরার আগের দিন কৌশলে হোটেল থেকে পালিয়ে যান।’