০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুবিতে প্রথমবারের মতো সিরাত পাঠ প্রতিযোগিতা ও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল: ১ লাখ ৬৭ হাজার থেকে কমে ২ হাজার ৬০০ টাকা কুমিল্লার মুরাদনগরে অপহরণের পর যুবক খুন, ৩৬ দিন পর কঙ্কাল উদ্ধার কুমিল্লায় আ. লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ ও ছাত্রলীগের ৭ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার কুমিল্লার দেবিদ্বারে পানিতে ডুবে একই পরিবারের দুই শিশুর মৃত্যু কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ঝটিকা মিছিল, আটক ৫ বুড়িচংয়ে পূজা উদযাপনে থাকবে সেনাবাহিনী-পুলিশের নিরাপত্তা বলয় বুড়িচংয়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ৫ লক্ষ টাকার ওষুধ বিতরণ ইমোর মাধ্যমে প্রবাসীর সঙ্গে পরিচয়, কুমিল্লার দুলাল হত্যার পেছনের মূল কারণ কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে চার গাড়ির সংঘর্ষে ২ জন নিহত, আহত ৩

পার্কের গানের শব্দে অতিষ্ঠ কুবি শিক্ষার্থীরা

  • তারিখ : ০৫:২৬:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • 153

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) পার্শ্ববর্তী অনিয়ন্ত্রিত পার্ক, পিকনিক স্পট, এবং দর্শনার্থীদের বহন করা বাসে উচ্চশব্দে হর্ণ এবং বাদ্য বাজানোর ফলে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে গড়ে ওঠা ম্যাজিক প্যারাডাইজ পার্ক, ডায়নোসর পার্ক, ব্লু ওয়াটার পার্কে নিয়মিত দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। পার্ক কতৃপক্ষ বিনোদনের জন্য মাত্রাতিরিক্ত শব্দে গান বাজান। তবে এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিলেও নিয়মিত তদারকির অভাবে ফের অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকলে।

করোনাকালীন দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকে। বন্ধে আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো নেয়া শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে মধ্যরাত পর্যন্ত উচ্চশব্দে মাইকে গান বাজায় আশেপাশে গড়ে ওঠা এই পার্কগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মো. রাসেল মিঞা নামের একজন শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করে বলেন, ‘ম্যাজিক প্যারাডাইস, স্বপ্নচূড়া ও ব্লু ওয়াটার পার্কের শব্দ দূষণের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। পরীক্ষার হলে বসেও এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না। পড়াশোনায় মনোনিবেশ করা যাচ্ছে না। আবার ঠিকঠাক মত ঘুমানোও যাচ্ছে না। এর আগেও এ বিষয়ে বারবার কথা বলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। এ বিষয়ে পরিবেশ আদালতে মামলা করা এখন সময়ের দাবি’।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং বিভাগের স্নাতকোত্তর এক শিক্ষার্থী শব্দদূষণে অতিষ্ঠ হয়ে রাত ১০টায় ৯৯৯- এ কল দিলে পুলিশ এসে পাশের একটি মাইক বন্ধ করে দেয়।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ক্ষমতাবলে শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ প্রণয়ন করা হয়৷ বিধিমালার আওতায় নীরব, আবাসিক, মিশ্র, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকা চিহ্নিত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে৷ আইন অমান্য করলে প্রথমবার অপরাধের জন্য এক মাস কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য ছয় মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে৷

আইনে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জেলা প্রশাসক অথবা কর্তৃপক্ষের শব্দের মান বেঁধে দেয়ার কথা থাকলেও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।

বিষয়টি নিয়ে ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কের স্বত্বাধিকারী মাহবুব আলম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে সবসময় সতর্ক। তবে পার্কে যারা মিউজিশিয়ান রয়েছে তাদের দায়িত্ব অবহেলার কারণে সমস্যা সৃষ্টি হয়। ভবিষ্যতে এমন সমস্যা আর সৃষ্টি হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি’।

এ বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘যে সকল পার্ক সমস্যা সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছি। তবে সর্বশেষ তাদের আবার সুযোগ দেয়া হল। আমরা চাই তারা ব্যবসা করুক। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সমস্যা সৃষ্টি করবে এমন কোনো বিষয় মেনে নিব না। আগামীকাল থেকে যদি ফের সমস্যা দেখা যায় তাহলে আইন অনুযায়ী নিব’।

error: Content is protected !!

পার্কের গানের শব্দে অতিষ্ঠ কুবি শিক্ষার্থীরা

তারিখ : ০৫:২৬:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) পার্শ্ববর্তী অনিয়ন্ত্রিত পার্ক, পিকনিক স্পট, এবং দর্শনার্থীদের বহন করা বাসে উচ্চশব্দে হর্ণ এবং বাদ্য বাজানোর ফলে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে গড়ে ওঠা ম্যাজিক প্যারাডাইজ পার্ক, ডায়নোসর পার্ক, ব্লু ওয়াটার পার্কে নিয়মিত দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। পার্ক কতৃপক্ষ বিনোদনের জন্য মাত্রাতিরিক্ত শব্দে গান বাজান। তবে এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিলেও নিয়মিত তদারকির অভাবে ফের অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকলে।

করোনাকালীন দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকে। বন্ধে আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো নেয়া শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে মধ্যরাত পর্যন্ত উচ্চশব্দে মাইকে গান বাজায় আশেপাশে গড়ে ওঠা এই পার্কগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মো. রাসেল মিঞা নামের একজন শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করে বলেন, ‘ম্যাজিক প্যারাডাইস, স্বপ্নচূড়া ও ব্লু ওয়াটার পার্কের শব্দ দূষণের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। পরীক্ষার হলে বসেও এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না। পড়াশোনায় মনোনিবেশ করা যাচ্ছে না। আবার ঠিকঠাক মত ঘুমানোও যাচ্ছে না। এর আগেও এ বিষয়ে বারবার কথা বলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। এ বিষয়ে পরিবেশ আদালতে মামলা করা এখন সময়ের দাবি’।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং বিভাগের স্নাতকোত্তর এক শিক্ষার্থী শব্দদূষণে অতিষ্ঠ হয়ে রাত ১০টায় ৯৯৯- এ কল দিলে পুলিশ এসে পাশের একটি মাইক বন্ধ করে দেয়।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ক্ষমতাবলে শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ প্রণয়ন করা হয়৷ বিধিমালার আওতায় নীরব, আবাসিক, মিশ্র, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকা চিহ্নিত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে৷ আইন অমান্য করলে প্রথমবার অপরাধের জন্য এক মাস কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য ছয় মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে৷

আইনে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জেলা প্রশাসক অথবা কর্তৃপক্ষের শব্দের মান বেঁধে দেয়ার কথা থাকলেও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।

বিষয়টি নিয়ে ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কের স্বত্বাধিকারী মাহবুব আলম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে সবসময় সতর্ক। তবে পার্কে যারা মিউজিশিয়ান রয়েছে তাদের দায়িত্ব অবহেলার কারণে সমস্যা সৃষ্টি হয়। ভবিষ্যতে এমন সমস্যা আর সৃষ্টি হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি’।

এ বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘যে সকল পার্ক সমস্যা সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছি। তবে সর্বশেষ তাদের আবার সুযোগ দেয়া হল। আমরা চাই তারা ব্যবসা করুক। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সমস্যা সৃষ্টি করবে এমন কোনো বিষয় মেনে নিব না। আগামীকাল থেকে যদি ফের সমস্যা দেখা যায় তাহলে আইন অনুযায়ী নিব’।