সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) আওয়ামী সমর্থিত অংশের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আজ।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ সারাদেশে ১০টি ভোটকেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোট।
নির্বাচনের তফসিল থেকে শুরু করে আদালতের স্থগিতাদেশসহ নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে প্রায় তিন বছর পর এ ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবার বিএফইউজে সভাপতি, মহাসচিব ও কোষাধ্যক্ষ- এ তিন পদের জন্য নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন সারাদেশের ভোটাররা। বাকি পদে নির্বাচন হবে ইউনিটভিত্তিক ভোটারদের ভোটে। এবারের নির্বাচনে পেশাজীবী, সংগঠক ও যোগ্যদের নির্বাচিত করতে চান ভোটাররা।
বিএফইউজের নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, এ বছর সভাপতি পদে তিনজন ও মহাসচিব পদে তিনজন ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএফইউজের তিনবারের নির্বাচিত মহাসচিব ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, ডিইউজের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সূর্য ও বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব ওমর ফারুক। আর মহাসচিব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আব্দুল মজিদ, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ, নাগরিক টিভির হেড অব নিউজ দীপ আজাদ ও দৈনিক কালের কণ্ঠের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক লায়েকুজ্জামান। এছাড়া কোষাধ্যক্ষ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন খায়রুজ্জামান কামাল, নজরুল কবির ও মোহাম্মদ আবু সাঈদ।
নির্বাচন কমিশন প্রার্থী ও ভোটারদের জন্য প্রকাশ করেছে নির্বাচন সংক্রান্ত আচরণবিধি। করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করাসহ নানা নির্দেশনা রয়েছে আচরণবিধিতে।
বিএফইউজের নির্বাচনে এবার মোট ভোটার সংখ্যা তিন হাজার ৯৮০ জন। এরমধ্যে ঢাকায় রয়েছেন দুই হাজার ৯৭৭ জন।
সভাপতি, মহাসচিব ও কোষাধ্যক্ষ এ তিন পদ ছাড়াও এবারের নির্বাচনে ঢাকা থেকে সহ-সভাপতি পদে পাঁচজন, যুগ্ম-মহাসচিব পদে চারজন, দপ্তর সম্পাদক পদে ছয়জন ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য পদে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও বাকি নয়টি ইউনিট থেকে সহ-সভাপতি, যুগ্ম মহাসচিব, নির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচনে লড়ছেন প্রার্থীরা। এরমধ্যে কিছু পদে কয়েকজনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে কোনো প্যানেল দেখা যায়নি। এতে নিজেদের সমর্থকদের দিয়েই চলেছে প্রচারণা। প্রচার-প্রচারণার কাজ শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন করেছেন প্রার্থীরা। নির্বাচন ঘিরে গত কদিন ধরে বেশ উৎসবমুখর ছিল জাতীয় প্রেস ক্লাব। ভোটারদের মধ্যেও নানা আলোচনা ছিল। যোগ্য, পেশাদার ও সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার, এমন সাংবাদিকদেরই নির্বাচিত করতে চান ভোটাররা।
এ বিষয়ে সিনিয়র ফটো সাংবাদিক ও বিএফইউজের সদস্য হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমরা চাই, একজন পেশাদার সাংবাদিক প্রতিটি পদে নির্বাচিত হোক। যারা সাংবাদিকদের পাশে থাকেন, আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দেন, সংগঠনের জন্য কাজ করেন এবং করবেন, তাদেরই বিজয়ী দেখতে চাই। আমরা মাঠের সাংবাদিক, বিভিন্ন সময় নানা সমস্যায় পড়ি। দুঃসময়ে যারা পাশে থাকে তারাই যেন নির্বাচিত হয়।
ঢাকা বিভাগ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ইকবাল হাসান কাজল বলেন, বিএফইউজে নির্বাচন এলেই একটা উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। নির্বাচনে ভোট দিয়ে যোগ্য ব্যক্তিকেই নির্বাচিত করতে চাই। পেশাদার, দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিই যেন নির্বাচিত হয়।
নির্বাচনে প্রার্থীদেরও বেশ সরব উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। সাংবাদিকদের কর্মস্থলের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও চালিয়েছেন প্রচার-প্রচারণা। সংগঠনে নিজেদের সম্পৃক্ততাসহ সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করার নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চেয়েছেন তারা।
নির্বাচনে মহাসচিব প্রার্থী দীপ আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, গত তিন বছরে বিএফইউজে একটি স্থবির সংগঠনে পরিণত হয়েছিল। নির্বাচিত হলে আমার প্রথম কাজই হবে সংগঠনের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা। সাংবাদিকদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় কাজ করে যাবো।
যুগ্ম মহাসচিব প্রার্থী শেখ মামুনুর রশীদ বলেন, কার্যকর ও গতিশীল ইউনিয়ন চাই। পেশাদার সৎ সাহসীরা যেন নির্বাচিত হয়। আমরা ভোটাররা ভুল করলে যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে না পারলে আবারও অকার্যকর ইউনিয়ন দেখতে হবে। সেটা পেশাদার সাংবাদিকরা আশা করে না।
এদিকে নির্বাচন সংক্রান্ত সব প্রস্তুতি সম্পন্ন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। শীর্ষ তিন পদে নয়জনসহ ঢাকায় মোট ৪৪ জন প্রার্থী ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর ঢাকার বাহিরে নয়টি ইউনিয়নে বিভিন্ন পদে ৮৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান।
নির্বাচন অনুষ্ঠানে ছয় সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ জার্নাল পত্রিকার সম্পাদক শাহজাহান সরদার।
ভোট নিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান সরদার জাগো নিউজকে বলেন, নির্বাচনের সব প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। আমরা উৎসবমুখর পরিবেশেই নির্বাচনটি সম্পন্ন করতে চাই। এতে প্রার্থীরাও আমাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page