বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া মেজর গনি সড়ক; ২১ কিলোমিটার যেতে সময় লাগে দেড় ঘন্টা

মোঃ শরিফ খান আকাশ।।
ব্রাহ্মণপাড়া-কুমিল্লা মেজর গনি সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার না হওয়ায় যানবাহন চলাচলের অযােগ্য হয়ে পড়েছে। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ মানুষ জেলা সদরে বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়ত করে। চলাচলের জন্য বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া এ দুই উপজেলার মানুষের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এটি। ব্রাহ্মণপাড়া থেকে কুমিল্লার দুরত্ব ২১ কিলোমিটার হলেও যাতায়তে সময় যায় প্রায় (৯০ মিনিট) দেড় ঘন্টা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,২১ কিলোমিটার সড়কের প্রায় প্রতিটি স্থানেই পিচ ওঠে ইট-সুরকি বেরিয়ে গেছে এবং ছোট বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এছাড়া এ বছরের ভয়াভহ বন্যায় সড়কটির অনেক স্থানে রাস্তা একেবারে ভেঙ্গে চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তিতে ইট, কংক্রিট, বালু ও মাটি ফেলে চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করা হয়েছে। সড়কটিতে যানবাহন চলাচল করলেও ধীরগতিতে যেতে হয় গন্তব্যে।

সড়কটিতে প্রতিদিন সিএনজি, বাস, ট্রাক ও বিভিন্ন ব্যক্তিগত গাড়ি সহ আঞ্চলিক অটো রিক্সা চলাচল করে। এতে যানবাহন গুলো খানাখন্দে ভরা ছোট বড় গর্তে উল্টে গিয়ে প্রায় প্রতিদিন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মানুষ। ফলে যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। ব্রাহ্মণপাড়া থেকে ২১ কিলোমিটার এই সড়কে আগে ৩৫ থেকে ৪০ মিনিট লাগলেও এখন দ্বিগুণ থেকেও বেশি সময় লাগছে।

সড়কটির বুড়িচং থেকে পালপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি জায়গায় পিচ ও সুরকি বিলীন হয়ে গিয়েছে। ব্রাহ্মণপাড়া থেকে টাটারা নামক স্থানে বড় বড় গর্তের কারণে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কিছুদিন পর এই সড়কটিতে আর যান চলাচলের মতো উপযোগী থাকবে না।

২১ কিলোমিটার এ সড়কে প্রায় ২৮ থেকে ৩০ টি স্পিড ব্রেকার রয়েছে। যার কারণে যানবাহন কচ্ছপ গতিতে যেতে হয়। ফলে সম্প্রতি সময়ে সড়কের এসব স্প্রিড ব্রেকার ও ভাঙ্গাচুরা স্থানে ছিনতাই এর ঘটনা ঘটছে।

সিএনজি চালক মিজানুর রহমান বলেন,দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এ সড়কে সিএনজি চালাই আমার এত বৎসর সিএনজি চালানোর বয়সে এত খারাপ অবস্থা রাস্তাটির কখনো দেখিনি। আগে ৩৫ থেকে ৪০ মিনিটে ব্রাহ্মণপাড়া থেকে কুমিল্লা যাতায়ত করতাম এখন প্রায় দেড় ঘন্টার মত সময় লাগে। এছাড়া সড়কটিতে ভাঙ্গার কারণে প্রতিদিনই কোনো না কোনো দুর্ঘটনার শিকার হতে হয় রাতে থাকে ছিনতাই এর ভয়।

এই সড়কে যাতায়তের মাধ্যমে নিয়মিত অফিস করেন সিদলাই কলেজের শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, রাস্তাটি সম্প্রতিক বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ যাওয়ার কারণে যানবাহন একেবারে ধীর গতিতে চলতে হয়। ফলে যাতায়তে যাত্রীদের সময় অনেক বেশি লাগে। এছাড়া যারা কুমিল্লা থেকে বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া অফিস করেন তারা পূর্বের সময় থেকে এক থেকে দেড় ঘন্টা আগে অফিসের উদ্যেশ্যে বাহির হতে হয়।তিনি আরও বলেন সড়কটি অতি দ্রুত সংস্কার না করা হলে কিছুদিন পর এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।

এ ব্যপারে সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আদনান ইবনে হাসান জানান, বন্যার পর এ রাস্তাটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে গেছে, আমরা কয়েকদিন পরপর ছোটখাটো মেনটেনেন্স করছি আশা করি আগামী মাসের মধ্যে এ রাস্তাটির কাজ শুরু হয়ে যাবে তখন সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমে যাবে।

এ ব্যপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স ম আজাহারুল ইসলাম বলেন, আমি নিজেও দাপ্তরিক, প্রশাসনিক এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এ রাস্তা ব্যবহারে বেশ দুর্ভোগের মুখে পড়ি। প্রায় ১০ মাস ধরে রাস্তাটির দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে কয়েক দফা অনুরোধ জানাই৷ তারা জানায় গেল অর্থবছরে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা ছিল না। এ অর্থবছরে তারা এ রাস্তার দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কাজ শুরু করবে।এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সদিচ্ছা ও সময়ানুগ উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই আসলে।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page