৪৫ বছর ধরে চালু থেকেও অচল কুমিল্লা বিমানবন্দর

রুবেল মজুমদার ।।
প্রায় ৪৪ বছর ধরে কোনো বিমান ওঠানামা করেনি কুমিল্লা বিমানবন্দরে। যদিও এখনও এই বিমানবন্দর কাগজে-কলমে চালুই রয়েছে। এই বিমানবন্দরের সিগন্যাল ব্যবহার করে প্রতিদিন চলাচল করছে অন্তত ৪০টি বিমান। ভুক্তভোগীরা বলছেন, শুধু উদ্যোগের অভাবেই চালু থেকেও অচল হয়ে পড়ে রয়েছে কুমিল্লা জেলার এই বিমানবন্দরটি।

এ প্রসঙ্গে কুমিল্লা বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক মো. আবদুল গণি বলেন, এই বিমানবন্দরের সব কিছুই রয়েছে। বর্তমানে এখানে ২০ জন কর্মরত আছেন। প্রতিদিন এ বিমানবন্দরের সিগন্যাল ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক রুটের ৩৫ থেকে ৪০টি বিমান। এখান থেকে প্রতি মাসে আয় হয় ৩০ লাখ টাকার মতো। তিনি বলেন, সরকার একটু
উদ্যোগ নিলেই এখানে অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল শুরু হতে পারে। এজন্য রানওয়ে মেরামতসহ কিছু কাজ করতে হবে। পাশাপাশি আরও ২০-২২ জন লোকবল নিয়োগ দিতে হবে।

ভুক্তভোগীদের মতে, প্রবাসী অধ্যুষিত কুমিল্লা জেলার প্রায় ৬০ লাখ মানুষের মধ্যে ১৩ শতাংশই থাকেন বিদেশে। এ জেলার বিমানবন্দরের কাছেই রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড)। তাই এ বিমানবন্দর পুনরায় সচল হলে প্রবাসীদের আসা-যাওয়ার সুবিধার পাশাপাশি ইপিজেডেও বিদেশি বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হলে কুমিল্লার ব্যবসা-বাণিজ্যেও প্রসার ঘটবে।

প্রসঙ্গত, দেশে মোট তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে। এ ছাড়া আরও সাতটি শর্ট টেক অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং (স্টল) বিমানবন্দর রয়েছে। এই সাতটি স্টল বিমানবন্দরের একটি কুমিল্লা বিমানবন্দর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪১-৪২ সালে নগরীর দক্ষিণ পাশে নেউরা, ঢুলিপাড়ার ও রাজাপাড়া এলাকার পাশে ৭৭ একর ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় এটি। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত বিমানবন্দরটি অভ্যন্তরীণ রুটে সচল ছিল। পরে অজ্ঞাত কারণে এখানে বিমান ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায়। এখনও এ বিমানবন্দরের সিগন্যাল ব্যবহূত হয়। এটির সিগন্যাল সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে ভারতের অভ্যন্তরীণ রুটের বিমান, ব্যাংকক ও সিঙ্গাপুরের বিমান। আগরতলা বিমানবন্দরে যাওয়া বিমানও এই রুটে চলাচল করে।

কুমিল্লা বিমানবন্দরে নেভিগেশন ফ্যাসিলিটিস, কন্ট্রোল টাওয়ার, ভিএইচএফ সেট, এয়ার কমিউনিকেশন যন্ত্রপাতি, ফায়ার স্টেশন, ফায়ার সার্ভিসসহ সব সুবিধাই রয়েছে। যাত্রীদের জন্য আলাদা রুমও আছে। বিমানবন্দরের রয়েছে অনেক জমি। রানওয়ে মেরামত, ফায়ার সার্ভিস ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারে জনবল নিয়োগ করলেই কুমিল্লা বিমানবন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে স্টল বিমান চলাচলের পাশাপাশি কলকাতা, আগরতলাসহ বিভিন্ন রুটে বিমান চলাচল সম্ভব হতে পারে। যার জন্য প্রয়োজন মাত্র ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা।

জেলার চৌদ্দগ্রাম বাসিন্দা দুবাই প্রবাসী আলম বলেন, দেশের সবচেয়ে বেশি প্রবাসী বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের ছয় জেলায়। দ্রুত কুমিল্লা বিমানবন্দর চালু করা দরকার। পাশাপাশি তিনি এটিকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।

কুমিল্লা ইপিজেডে কর্মরত কয়েকজন জানান, এখানে বেশ কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ না হওয়ায় আগ্রহ থাকলেও অনেক বিদেশি বিনিয়োগ করতে আসছেন না।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page